‘নির্মূলের মুখে রোহিঙ্গা, চুপ থাকতে পারে না ওঅাইসি’

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০২:৪৭ পিএম, ০৫ মে ২০১৮

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুসলিম দেশগুলোর প্রতি শান্তি, সংহতি ও ঐক্য বজায় রাখার অাহ্বান জানিয়ে বলেছেন, অামাদের প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ (স.) অত্যাচারিত, নির্যাতিত ও নিপীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর নির্দেশ দিয়ে গেছেন। রোহিঙ্গারা অাজ নির্যাতিত, নিপীড়িত ও নির্মূলের মুখে। মিয়ানমারের অমানবিক নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষার জন্য শুধু মানবিক করণে অামরা রোহিঙ্গাদের অাশ্রয় দিয়েছি। এ অবস্থায় ওঅাইসি নিশ্চুপ থাকতে পারে না। অামাদের অবশ্যই এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।

অাজ (শনিবার) সকালে বঙ্গবন্ধু অান্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অায়োজিত অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো অপারেশন (ওআইসি) এর ৪৫তম পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের দুই দিনব্যাপী সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা মিয়ানমারের সৃষ্টি। তাই এ সমস্যা মিয়ানমারকেই সমাধান করতে হবে। অার ওঅাইসিকে অবশ্যই মিয়ানমার সরকারের ওপর অান্তর্জাতিকভাবে চাপ অব্যাহত রাখতে হবে- মিয়ানমার যেন বাংলাদেশের সঙ্গে স্বাক্ষরিত সমঝোতা অনুযায়ী তাদের নাগরিক রোহিঙ্গাদের নিরপদে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যায়। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীও অামাদের মতোই মর্যাদার সঙ্গে বাঁচার ও জীবন ধারনের অধিকার রাখে।

শেখ হাসিনা অারও বলেন, ‘মুসলিম বিশ্বে এত সংঘাত, সন্ত্রাস, রক্তপাত অার বাস্তহারা হওয়ার ঘটনা অাগে কখনও দেখা যায়নি। কেন এসব ঘটছে তা খুঁজে কের করতে হবে।’

তিনি বলেন, স্বল্পন্নোত দেশ থেকে উন্নয়নশী দেশে পরিণত হতে যে কয়েকটি শর্ত দরকার ছিল বাংলাদেশ তার সবকটি পূরণ করেছে। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশ। অাগামী ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে স্থান করে নেবে। সে লক্ষ্যে অামরা এগিয়ে যাচ্ছি। বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ অাজ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারছে। প্রবৃদ্ধি ৭ এর ওপরে নিয়ে গেছি। রাস্তা-ঘাট, অবকাঠামো উন্নয়নে অামরা অামূল পরিবর্তন করেছি। অামাদের মূল শক্তি হলো যুব সমাজ। এদেরকে সঙ্গে নিয়ে নারী-পুরুষ পাশাপাশি কাজ করে অামরা এগিয়ে যাব।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিপীড়িত ও নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের জন্য অামরা চিত্ত ও সীমান্ত দুটোই খুলে দিয়েছি। বাংলাদেশে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা অাশ্রয় নিয়েছে। তারা যে কী ব্যাথা অনুভবব করছে তার জন্য অামিও ব্যাক্তিগতভাবে ব্যাথিত। কারণ আমার বাবা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ পরিবারের ১৮ জনসদস্যকে নির্মমভাবে হত্যা করার পর অামি এবং অামার বোন ৬ বছর উদ্বাস্তু হিসেবে বিদেশের মাটিতে কাটিয়েছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সময় এসেছে অামাদের যৌথ কর্মকৌশল গ্রহণের। এর মাধ্যমে মুসলিম বিশ্ব এগিয়ে যাবে। মুসলমানদের যে মেধা এবং সম্পদ রয়েছে তাতে পিছিয়ে পড়ার কোনো কারণ নেই।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সন্ত্রাস দমনে চার দফা পেশ করেন প্রধানমন্ত্রী। এগুলো হলো- অস্ত্র বিক্রি বন্ধ করা, জঙ্গিদের অর্থ সরবরাহ বন্ধ করা, নিজেদের মধ্যে বিভেদ বন্ধ এবং নতুন করে সকলের জন্য সুবিধা হয় এমন সব বিরোধ শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করতে হবে।

এই চার দফা মানলে মুসলিম বিশ্ব এগিয়ে যাবে বলে মনে করেন তিনি।

ওঅাইসি পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের এবারের সম্মেলনের প্রতিপাদ্য বিষয় হলো, ‘ইসলামিক ভ্যালুজ ফর সাসটেইনেবল পিস, সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট’। এই সম্মেলনে ওআইসির সদস্য রাষ্ট্র, পর্যবেক্ষক রাষ্ট্র, ওআইসি’র বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানসহ ছয় শতাধিক প্রতিনিধি অংশ নিয়েছেন। এদের মধ্যে প্রায় ৪০ জন মন্ত্রী ও সহকারী মন্ত্রী রয়েছেন।

এফএইচএস/এমবিআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।