আজ আন্তর্জাতিক মিডওয়াইফ দিবস
‘মা ও শিশু স্বাস্থ্যের মানসম্মত সেবা প্রদানে মিডওয়াইফ এগিয়ে’ এই শ্লোগানকে সামনে রেখে বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় আজ (শনিবার) বাংলাদেশেও পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক মিডওয়াইফ দিবস। এ উপলক্ষ্যে পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেছেন, মিডওয়াইফদের যথাযথ প্রশিক্ষণ দিয়ে দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে উন্নত স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেয়া সম্ভব।
তিনি বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও দিবসটি পালনের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, গর্ভবতী মা ও নবজাতকের স্বাস্থ্যপরিচর্যা ও মৃত্যুহার হ্রাসে প্রশিক্ষিত মিডওয়াইফরা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। বিশেষ করে একজন মায়ের পরিবার পরিকল্পনা থেকে শুরু করে গর্ভধারণ, সন্তান প্রসব ও প্রসব পরবর্তী সেবা প্রদানে মিডওয়াইফ অগ্রণী ভূমিকা রাখতে পারেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, মা ও শিশু মৃত্যুহার কাক্ষ্মিত পর্যায়ে নামিয়ে আনা এবং জনগণের মাঝে এ বিষয়ে ব্যাপক সচেতনতা সৃষ্টির জন্য প্রশিক্ষিত ও দক্ষ মিডওয়াইফের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি আন্তর্জাতিক মিডওয়াইফ দিবস উপলক্ষে গৃহীত সব কর্মসূচির সার্বিক সফলতা কামনা করেন।
অপরদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে মা ও শিশুর মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে মিডওয়াইফদের আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, প্রত্যন্ত অঞ্চলে মা ও শিশুর মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে মিডওয়াইফরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মা-শিশু মৃত্যুহার হ্রাসে ধারাবাহিক সাফল্য অর্জনের ক্ষেত্রে দক্ষ ও প্রশিক্ষিত মিডওয়াইফরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন। গর্ভবতী মা ও নবজাতকের উন্নত পরিচর্চার ক্ষেত্রে বর্তমান সরকার সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা ও পরিবেশ নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
বাণীতে তিনি এ পেশার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, সরকার জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। গর্ভবতী মা ও নবজাতকের উন্নত পরিচর্যা ও মৃত্যুহার রোধে বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। ফলে নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বেই শিশু মৃত্যুর হার কমিয়ে সহস্রাব্ধ উন্নয়ন লক্ষমাত্রা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। এজন্য ২০১০ সালে জাতিসংঘ ‘এমডিজি অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা দেশে নতুন নতুন হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা, শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধি, বিশেষায়িত হাসপাতাল ও নার্সিং ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেছি। প্রত্যন্ত অঞ্চলে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের লক্ষ্যে আমরা সাড়ে ১৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র চালু করেছি। সরকারি হাসপাতালগুলোতে বিনামূল্যে রোগীদের ৩০ প্রকারের ঔষধ সরবরাহ করা হচ্ছে। এর ফলে মা ও শিশু স্বাস্থ্যসেবায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। ফলে আজ আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করেছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারি ৩৮টি এবং বেসরকারি ১৬টি নার্সিং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৩ বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা ইন মিডওয়াইফারি কোর্স চালু আছে। এছাড়াও তিন হাজার মিডওয়াইফ পদ সৃষ্টিসহ মিডওয়াইফ শিক্ষাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। মা ও শিশুর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সব জেলা-উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ইউনিয়ন সাব-সেন্টারে পর্যায়ক্রমে প্রশিক্ষিত মিডওয়াইফ নিয়োগ দেয়া হবে।
এমএমজেড/এমএস