নবজাতকটির হার্টবিট কম

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৩:০৯ পিএম, ২৩ এপ্রিল ২০১৮

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ‘মৃত ঘোষণা’ করা নবজাতককে ঢাকা শিশু হাসপাতালের আইসিইউতে রাখা হয়েছে। আগের চেয়ে অবস্থার উন্নতি হলেও তার হার্টবিট স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কম।

ঢাকা শিশু হাসপাতালের পরিচালক প্রফেসার ডা. মো. আব্দুল আজিজ সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘শিশুটিকে বর্তমানে কার্ডিয়াক আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে। তার অবস্থা যে খুব একটা ভালো তা বলা যাবে না। তবে তাকে যে অবস্থায় এখানে (ঢাকা শিশু হাসপাতাল) আনা হয়েছিল তার চেয়ে ভালো আছে।’

তিনি বলেন, ‘তার হার্টবিট খুবই কম, শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে পারছে না। সাত মাসে ভূমিষ্ঠ হওয়ায় তার ওজনও কম, মাত্র এক কেজি। শরীরে রক্ত শূন্যতা আছে। নাভি দিয়ে রক্ত বের হয়েছে, এখানে নিয়ে আসার পর তা বন্ধ করা হয়েছে। একটু সুস্থ হলে লাইফ সাপোর্ট খুলে দেয়া বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করা হবে।’

ঢামেক থেকে তাহলে কীভাবে মৃত ঘোষণা করা হলো- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা যতটা জেনেছি, গতকাল রাতে গর্ভাবস্থায় কোনো নাড়াচাড়া না পেয়ে তখনই মৃত ধরে নেয়া হয়। পরে আজ (সোমবার) সকালে নরমালি ডেলিভারি করানো হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘ডেলিভারির পর নবজাতক সাধারণত ৩ মিনিটের মধ্যে কেঁদে ওঠে এবং ১৫ মিনিটের মধ্যে না কাঁদলে সে আর সার্ভাইব করে না। এ নবজাতকের ক্ষেত্রে কী হয়েছে তা আমাদের জানা নেই। তবে আমাদের প্রধান উদ্দেশ্য শিশুকে বাঁচানো।’

ঢাকা শিশু হাসপাতালের ডেপুটি ডিরেক্টর ডা. মো. আবু তাহেব বলেন, যখন শিশুটিকে আমাদের এখানে আনা হয় তখন তার হার্টবিট ছিল ১০ থেকে ১২, পরে ৩৫ থেকে ৪০ হয়। তবে তার হার্টবিট প্রয়োজন ১০০।

তিনি আরও বলেন, আমরা যতটা জেনেছি, আজ সকাল ৯টা ১০ মিনিটের দিকে ঢামেক থেকে শিশুটিকে কবর দেয়া জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। ৯টা ৩৫ মিনিটে কবরস্থানে তার হার্টবিট দেখতে পান এবং ১০টা ১২ মিনিটে আজিমপুর মেটারনিটি হসপিটালে নেয়া হয়। সেখানে প্রায় এক ঘণ্টা প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে এখানে (ঢাকা শিশু হাসপাতাল) নিয়ে আসা হয়।

এদিকে সংবাদ সম্মেলনে ওই শিশুর মামা শরিফুল বলেন, ‘প্রথম যখন আমার বোনকে ভর্তি করি তখন ডাক্তাররা তাকে দেখে বলেন গাছ নেবেন না ফল নেবেন। তখন বোনকে বাঁচাতে জোর দেই। আমি বলি আমাদের গাছ চাই। এরপর রাতে আমাদের জানানো হয় শিশুটি নড়াচড়া করছে না। মারা গেছে।’

বাঁচ্চাটি ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর ডাক্তাররা বলে সে পেটে মারা গেছে। পরে তাকে একটি বক্সের ভেতরে রাখা হয়। তারপর আজিমপুরে নিয়ে যাওয়ার পর বাকি ঘটনা ঘটে।

তিনি বলেন, মেয়ে শিশু ছিল। কবর দেয়ার সময় একটা নাম দিতে হয় তাই আমি নাম দিয়েছিলাম মিম। এটি তার বাবা মায়ের প্রথম সন্তান। দুইজনই চাকরি করে। এ কথা বলে কান্নায় ভেঙে পরেন তিনি।

উল্লেখ্য, আজ (২৩ এপ্রিল, সোমবার) সকালে আজিমপুর কবরস্থানে কবর দেয়ার জন্য গোসল করাতে নিয়ে গেলে নড়ে ওঠে এ নবজাতক। পরে প্রথমে তাকে আজিমপুর মেটারনিটি হসপিটালে এবং সেখান থেকে ঢাকা শিশু হাসপাতালে নেয়া হয়।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ডেথ সার্টিফিকেটে নবজাতক মৃত অবস্থায় জন্মগ্রহণ করেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। নবজাতকের বাবার নাম-মিনহাজ।

এআর/আরএস/এসএইচএস/আরএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।