প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরলে কোটার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত
সরকারি চাকরিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব ধরনের কোটা বাতিল ঘোষণা করলেও এই বিষয়ে তার চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। সৌদি আরব ও যুক্তরাজ্য সফর শেষে প্রধানমন্ত্রী দেশে শেষে ফিরলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তবে সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল না করে সংস্কারের পক্ষে সংসদীয় কমিটি।
রোববার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ২৮তম বৈঠকে এ কথা জানানো হয়। কমিটির সভাপতি এইচ এন আশিফুর রহমানের সভাপতিত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কমিটির সদস্য জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেক, এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী, র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, মুস্তফা লুৎফুল্লাহ, খোরশেদ আরা হক এবং জয়া সেন গুপ্তা।
প্রসঙ্গত, আগামীকাল (সোমবার) সকালে দেশে ফিরছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার বিকেলে লন্ডন থেকে রওনা দেবেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর কোটা বাতিলের ঘোষণা পর কোটা সংস্কার আন্দোলন স্থগিত করেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। একইসঙ্গে কোটা বাতিলের ঘোষণা প্রজ্ঞাপন জারির দাবি করেছেন তারা।
জানা যায়, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার আগেই মন্ত্রণালয় কোটা সংস্কার নিয়ে একটি কমিটি গঠন করেছিল। কিন্তু পুরা কোটা পদ্ধতিই বাতিল করায় এ ব্যাপারে এখন আর কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না মন্ত্রণালয়। প্রধানমন্ত্রীর সুনির্দিষ্ট ঘোষণা চাচ্ছে মন্ত্রণালয়।
সূত্র জানায়, বৈঠকে জনপ্রশাসন সচিব ড. মো. মোজাম্মেল হক খান বলেন, কোটা পদ্ধতি নিয়ে তারা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার অপেক্ষায় আছেন। তিনি দেশে ফিরে যেভাবে নির্দেশনা দেবেন, মন্ত্রণালয় কমিটি করে সেই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করবে।
এ বিষয়ে কমিটির সভাপতি এইচ এন আশিফুর রহমান মুঠোফোনে জাগো নিউজকে বলেন, আমরা বলেছি এ বিষয়টি নিয়ে যেন কোনো ঝামেলা না হয়। নানা বিষয় বিবেচনা করে আমরা কোটা পদ্ধতি সহজীকরণের কথা বলেছি। আমাদের কিছু দায়বদ্ধতা রয়েছে। দেশের প্রতি, ইতিহাসের (মুক্তিযুদ্ধ) প্রতি, আঞ্চলিকতার প্রতি, পিছিয়ে পড়া ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর প্রতি, এই দায়বদ্ধতা থেকেই আমরা কোটা রাখার পক্ষে।
বৈঠকে শিক্ষা মন্ত্রাণালয়ের অধীনে বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রণয়ন পদ্ধতি, গোপনীয়তা ও সুরক্ষা বিষয় এবং সরকারি কর্ম কমিশনের দক্ষতা ও মনোন্নয়নের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।
পাবলিক পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস ও নকল বন্ধ, পরীক্ষা পদ্ধতি ও পরীক্ষা কেন্দ্র কমানো এবং শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা যুগোপযোগী করার বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।
আগামী অর্থবছরে প্রতিটি উপজেলায় একটি করে কলেজ সরকারিকরণ এবং এমপিওভুক্ত প্রক্রিয়া বিষয়টি ত্বরান্বিত করার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করা হয়।
জেলা শহরে অনেক অনুমোদিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হচ্ছে সেগুলোর বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসককে একটি নীতিমালার আওতায় আনার বিষয়ে কমিটি সুপারিশ করে।
বৈঠকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব,কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব, বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের সচিবসহ মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এইচএস/জেএইচ/আরআইপি