এখানে নতুন স্বপ্ন খুঁজে পান তারা…

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:৩৩ পিএম, ২১ এপ্রিল ২০১৮

রাজধানীর শেরেবাংলা নগর এলাকায় অবস্থিত জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (নিটোর) নিচতলায় একটি কক্ষে ওয়ার্কশপ। ভেতরে ঢুকতেই দেখা যায় ছোট-বড় নানা যন্ত্রে ভরা। তিন-চারজন কর্মকর্তা-কর্মচারী কক্ষটিতে বসা। জানা গেল, এখানে কৃত্রিম পা সংযোজন করা হয়। সেখানে একজন বসে কৃত্রিম পায়ের অ্যাঙ্গেলের কাজ করছেন। অন্যজন আরও দুইজনকে সঙ্গে নিয়ে পাশাপাশি চেয়ারে আছেন।

কেন্দ্রটির দায়িত্বরত ম্যানেজার মোজাহার মোল্লা। কৃত্রিম পা সংযোজনের বিষয় নিয়ে আলাপ হয় তার সঙ্গে। তিনি বলেন, বিগত অনেক বছর ধরে বাংলাদেশ ও ভারতের দুটি ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় বিনামূল্যে কৃত্রিম পা সংযোজন করা হয় এখানে। তবে তা সবসময় নয়। বছরে একটি নির্দিষ্ট সময় এখানে বিনামূল্যে পা সংযোজন করা হয়।

jagonews24

তিনি জানালেন, যারা বিভিন্ন সময় দুর্ঘটনায় বা অসুস্থ হয়ে পা হারিয়েছেন তারা ইচ্ছে করলে এখানে এসে নিবন্ধন করতে পারেন। সে অনুযায়ী বছরের নির্দিষ্ট সময় এসে তাদের কৃত্রিম পা সংযোজন করে নিতে পারেন সম্পূর্ণ বিনামূল্যে। একজন মানুষ যখন দুর্ঘটনাজনিত কারণে তার পা হারিয়ে অসহায় অবস্থায় দীর্ঘদিন অতিবাহিত করেন, এরপর যখন কৃত্রিম হলেও একটি পা ফিরে পান বা সংযোজন করা হয় তখন নতুন করে স্বপ্ন খুঁজে পান তিনি…। তখন একটা আলাদা তৃপ্তির ছবি দেখা যায় তার চেহারায়।

jagonews24

এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে গিয়ে তিনি বললেন, আমরা সারা বছর এখানে পা হারানো মানুষের নিবন্ধন-আবেদন করে নিই। তারা বা তাদের স্বজনরা এসে আমাদের কাছে পা হারানো মানুষের জন্য নিবন্ধন করেন। এরপর আমরা তালিকা তৈরি করি। বছরের নির্দিষ্ট সময় ভারতের একটি ফাউন্ডেশন এসে বিনামূল্যে এসব মানুষের কৃত্রিম পা লাগিয়ে দেয়। গত বছর এভাবে প্রায় ৫০০-৬০০ মানুষ এ সেবা নিয়েছেন। কিন্তু বাইরে এটি লাগিয়ে নিতে অনেক খরচ হয়। তাই খুবই আগ্রহী হয়ে সাধারণ মানুষ এখানে সেবা নিতে আসেন। আমরা এখানে তাদের আবেদন নিয়ে নিবন্ধন করে রাখি। পরবর্তীতে সিরিয়াল অনুযায়ী তাদের কৃত্রিম পা প্রতিস্থাপন করে দেয়া হয়।

কক্ষের ভেতরেই প্লাস্টিকের কৃত্রিম পায়ের বিভিন্ন টেকনিক্যাল কাজ করেন লেদার ওয়ার্কার মুকললি ববি দাস। তিনি দীর্ঘদিন ধরে এ কাজ করে আসছেন।

jagonews24

তিনি বললেন, আমার বাবাও এই প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন, মূলত বাবার কাছেই এসব কাজ শিখেছি। রাজধানীর ওয়ারিতে আমার বাসা। আর এখানে মাসিক বেতনে কাজ করি। অন্যসময় তেমন কোনো কাজ না থাকলেও যখন ভারতীয় ফাউন্ডেশনের লোকজন আসেন তখন কাজের চাপ বেড়ে যায়। তারাও অনেক কৃত্রিম পা নিয়ে আসেন। আমরাও কিছু অংশ বানাই। সে অনুযায়ী বিভিন্ন মাপ নিয়ে মানুষের এসব পা লাগিয়ে দেয়ার কাজে সহযোগিতা করি।

এএস/বিএ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।

আরও পড়ুন