সাকার রায় : সাক্ষীর বাড়িতে পুলিশি টহল জোরদার


প্রকাশিত: ০৬:৩৪ এএম, ২৮ জুলাই ২০১৫

মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন (সাকা) কাদের চৌধুরীর মৃত্যুদণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে করা আপিলের রায় বুধবার ঘোষণা করা হবে। আপিলের রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে নাশকতার আশংকায় সাকা চৌধুরীর মামলার সাক্ষীদের বাড়িতে পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে।

সাক্ষীদের নিরাপত্তায় পুলিশকে সহযোগিতার জন্য বিজিবি মোতায়েনেরও প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। হাটহাজারী সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার মো.মশিউদৌলা রেজা বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, রাউজানে ২০ থেকে ২৫ জন সাক্ষী থাকেন।  সাক্ষীদের নাম-ঠিকানা সংগ্রহ করে আলাদা আলাদা তালিকা করা হয়েছে।

জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে নাশকতা মোকাবেলায় এবং সাক্ষীদের নিরাপত্তায় সতর্ক থাকার জন্য সব ওসিকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।  

মঙ্গলবার সকালে রাঙামাটি, বান্দরবান পুলিশ লাইন, জেলার রিজার্ভ ফোর্স, এপিবিএন ও শিল্প পুলিশ মিলিয়ে প্রায় এক হাজার অতিরিক্ত ফোর্স আনা হয়েছে।  চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের প্রায় আড়াই হাজার ফোর্সসহ মোট সাড়ে তিন হাজার পুলিশ জেলায় মোতায়েন থাকবে।
সাক্ষীসহ নির্যাতিত পরিবারের বাড়িগুলোতে পুলিশ প্রহরা বসানো হয়েছে। রাউজান থানা থেকে উপ-পরিদর্শকের নেতৃত্বে আটটি টিম করে বিভিন্ন পাড়ায় পাঠানো হয়েছে।  সেখানে তাদের সার্বক্ষণিক টহল দেয়ার জন্য বলা হয়েছে।

চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার গহিরা, জগৎমল পাড়া, উনষত্তরপাড়া, কুন্ডেশ্বরী, সুলতানপুরসহ আশপাশের গ্রাামগুলোতে বসবাসকারী নির্যাতিত পরিবারের বেশ কয়েকজন ট্রাইব্যুনালে গিয়ে সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন।

একাত্তরে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বাহিনীর হাতে নির্যাতিত হয়েছিল এসব অঞ্চলের কয়েকশ পরিবার। ২০১৩ সালে সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর রায় ঘোষণার কমপক্ষে এক সপ্তাহ আগে থেকে অধিকাংশ সাক্ষী হামলার আশংকায় বাসায় তালা দিয়ে অজ্ঞাতস্থানে চলে গিয়েছিলেন।

এছাড়া রাউজান, রাঙ্গুনিয়া, বোয়ালখালী, হাটহাজারী, ফটিকছড়ি ও ভুজপুরে দুই প্লাটুন করে বিজিবি এবং অন্যান্য উপজেলায় প্রয়োজন সাপেক্ষে বিজিবি মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশ।  এজন্য জেলা প্রশাসকের কাছে চিঠিও পাঠানো হয়েছে।  বিজিবি সদস্যরা বুধবার সকাল থেকে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে সংশ্লিস্ট এলাকায় মোতায়েন থাকবে বলে সূত্র জানিয়েছে।

রাউজানের গহিরায় জন্ম নেয়া সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী সেখান থেকে বেশ কয়েকবার সংসদ সদস্যও নির্বাচিত হয়েছিলেন।  পরবর্তীতে পাশের উপজেলা রাঙ্গুনিয়া থেকেও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন বারবার দলবদল করে শেষ পর্যন্ত বিএনপিতে আসা এ রাজনীতিক।

রাউজান ছাড়াও রাঙ্গুনিয়া, বোয়ালখালী, হাটহাজারী এবং ফটিকছড়িতেও সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন এমন বেশ কয়েকজন বসবাস করেন।  এসব এলাকাতেও বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) মুহাম্মদ নাঈমুল হাছান।

নাঈমুল বলেন, আমরা সাক্ষীদের অবস্থানের বিষয়ে খোঁজেখবর নিয়েছি। সাক্ষীদের অনেকে বাড়িতে থাকেন না, শহরের বাসায় থাকেন।  যারা থাকেন এবং যারা থাকেন না সবার বাড়িঘরকে ঘিরে টহল জোরদার ও গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থার আওতায় গত দুইদিন ধরেই এ টহল চলেছে।  অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন হয়েছে মঙ্গলবার সকাল থেকে।

এআরএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।