ছেলেদের ‘বৈশাখী গামছা’ মেয়েদের ‘ফ্লাওয়ার ব্যান্ড’

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ১১:৩৮ এএম, ১৪ এপ্রিল ২০১৮

কারও সিঁথিতে সিঁদুর, কারও মাথায় টুপি আবার কারও গলায় যিশু খ্রিস্টের ক্রুশ ঝুলছে; অাবার কারও গায়ে গেরুয়া বসন। সবার গন্তব্য রমনা, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বাংলা নববর্ষ ১৪২৫’কে বরণ করে নিতে হাজারও মানুষ এসব স্থানে ছুটে আসছেন।

ভোর থেকে রমনার বটমূলে ছায়ানটের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও চারুকলার মঙ্গল শোভাযাত্রাসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের উদ্যোগে দিনব্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠান উপভোগ করতে প্রখর রোদ উপেক্ষা করেও হাজির হচ্ছেন তারা।

e

নিরাপত্তার স্বার্থে নীলক্ষেত, কাঁটাবন মোড়, পলাশী, বকশিবাজার, পরীবাগ, বাংলামোটরসহ বিভিন্ন প্রবেশপথ বন্ধ করে দেয়ায় অনেকটা পথ পাড়ি দিয়ে তবেই ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে হচ্ছে। তবুও যেন কারও ক্লান্তি নেই।

ভোরের দিকে লোকজনের ভিড় তুলনামূলকভাবে একটু কম ছিল। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভিড় বাড়ছে। দূর-দুরান্ত থেকে অনেকেই খালি পায়ে হেঁটে আসছেন।

jagonews24

সরেজমিনে দেখা গেছে, বৈশাখের লাল সাদা পাঞ্জাবি ও একই রংয়ের শাড়ি পরিহিত ছেলেদের অনেকেই ফ্যাশন করে এসো বৈশাখ লেখা গামছা ও মেয়েরা মাথায় ফ্লাওয়ার ব্যান্ড দিয়ে নিজেদের সাজিয়েছেন। তরুণীদের কেউ কেউ খোপায় বেলী ফুলের মালা পরেছেন।

মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা বেনজীর আহমেদ চঞ্চল। সিঙ্গার কোম্পানিতে ব্রাঞ্চ ম্যানেজার পদে চাকরি করেন। স্ত্রী সনি ও ছোট বোন মাহবুবাকে নিয়ে ঘুরতে এসেছেন। শাহবাগের মোড়ে এসে ৩০ টাকা দিয়ে নিজের জন্য বৈশাখী লেখা একটি গামছা কিনে মাথায় বেঁধেছেন। স্ত্রী ও ছোটবোনের জন্য দু’শ টাকা দিয়ে দুটি ফ্লাওয়ার ব্যান্ড কিনেছেন।

jagonews24

তিনি জানালেন, নিরাপত্তার কারণে রাস্তা আটকে দেয়ায় বাংলামোটর থেকে হেঁটে এসেছেন। কিন্তু তাতে সমস্যা নেই মন্তব্য করে বলেন, এখানে না এলে বর্ষবরণের আনন্দটা ঠিক উপভোগ করা যায় না।

রাজধানীর শুক্রাবাদ থেকে স্ত্রী পলি ও দুই ছেলেমেয়ে মাইশা ও মাশফিককে নিয়ে ঘুরতে এসেছেন মনির হোসেন। রিকশা করে কাঁটাবনের সামনে পর্যন্ত এসে সেখান থেকে হেঁটে এসেছেন। প্রতি বছরই বর্ষবরণের অনুষ্ঠানে সপরিবারে আসেন বলে জানান।

jagonews24

৭২ বছর বয়সী বিনয় গোপাল চক্রবর্তী যশোরের শ্যামনগর ইউনিয়নের ভদ্রডাঙ্গা বাতাসী গ্রাম থেকে এসেছেন। হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের (আগের রূপসী বাংলা) সামনে দাঁড়িয়ে বৃদ্ধ এ ভদ্রলোক চারুকলার মঙ্গল শোভাযাত্রা কোন পথে যাবেন জিজ্ঞাসা করছিলেন। বাংলামোটর থেকে পায়ে হেঁটে এসে হাঁপাচ্ছিলেন।

এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, বয়স হয়েছে বেশি, হাঁটতে পারি না। তবুও মঙ্গল শোভাযাত্রাটা দেখবো বলে কষ্ট করে এসেছি।

f

এমইউ/বিএ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।