কোটি টাকার তরমুজ বিক্রির আশাবাদ শওকত পেদার

মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল
মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল , বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ১০:২৬ এএম, ০৪ এপ্রিল ২০১৮

পটুয়াখালী জেলার রাঙ্গাবালি উপজেলার সেনেরহাওলা গ্রামের তরমুজচাষী শওকত পেদা। এ মৌসুমে এক কোটি টাকার তরমুজ বিক্রির আশা করছেন। গত আট বছর ধরে প্রতি কানি (আড়াই একর) জমি এক বছরের জন্য ৫০ হাজার টাকায় লিজ নিয়ে তরমুজ আবাদ করছেন। মার্চের প্রথম সপ্তাহ থেকে এখন পর্যন্ত ৭০ লাখ টাকার তরমুজ বিক্রি করেছেন। চলতি মাসের তৃতীয় সপ্তাহের মধ্যে লক্ষ্য এক কোটি টাকার তরমুজ বিক্রি। এমন আশা করছেন তিনি।

মঙ্গলবার সকালে বাদামতলীর শাকিল অ্যান্ড সৌরভ আড়তের সামনে দাঁড়িয়ে তরমুজ ব্যবসার নানা অভিজ্ঞতার বর্ণনা দেন শওকত পেদা। জানান, রাঙ্গাবালি এলাকার শতকরা ৮০ ভাগ পরিবারই তরমুজ উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত। এসএসসি পর্যন্ত পড়াশোনার পর তিনি নিজেও এ ব্যবসায় নামেন।

জমিতে বীজ বপন থেকে তরমুজ তোলা পর্যন্ত চার থেকে সাড়ে চার মাস লাগে। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে তিনি বীজ বপন করেন। এ বছর মার্চের প্রথম সপ্তাহে ফসল তুলে বিক্রি শুরু করেছেন।

৩০ কানি জমি এক বছরের জন্য লিজ নিলেও তিনি বছরের অন্য সময় এ জমিতে অন্য কোনো ফসল উৎপাদন করেন না। ফলে অন্যদের চেয়ে তার জমিতে ফলন বেশি হয়। প্রতি কানি জমিতে তিন হাজার থেকে তিন হাজার ২শ’ পিস তরমুজ হলেও নানা কারণে শেষ পর্যন্ত দুই হাজার ৫শ’ থেকে দুই হাজার ৮শ’ পিস তরমুজ বিক্রি করতে পারেন।

প্রতি কানি জমিতে তরমুজ আবাদ করতে তার দেড় লাখ থেকে এত লাখ ৮০ হাজার টাকা খরচ হয়। তিনি আরও জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবং শুরুর দিকে অর্থাৎ মার্চ মাসে তরমুজ এনে বিক্রি করতে পারলে মুনাফা বেশি হয়।

শওকত পেদা বলেন, তরমুজ ব্যবসায় ভাগ্যও লাগে। অনেক সময় জমিতে ভালো ফলন হলেও প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা আকস্মিক বৃষ্টির কারণে ফলন নষ্ট হয়। ব্যবসা শুরুর দিককার স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, প্রথম বছরে নিয়মকানুন ভালোভাবে বুঝে উঠতে না পারায় প্রায় ১০ লাখ টাকা লোকসান হয়। তবে হতোদ্যম হননি। নিয়মকানুন বুঝে পরের বছর লাভের মুখ দেখেন।

প্রতি কানি জমিতে কেমন লাভ হয় জানতে চাইলে তিনি হেসে বলেন, ব্যবসার সিক্রেট বলা যাবে না। তবে আল্লাহর রহমতে পরিবার-পরিজন নিয়ে অনেক ভালো আছেন বলে জানান।

“আড়তদারদের কাছ থেকে অগ্রিম টাকা ‘দাদন’নেই। ফসল ওঠার পর তাদের আগে তরমুজ দিতে হয়। ওই তরমুজ যত টাকায় বিক্রি হয় তার শতকরা ১০ ভাগ আড়তদার কেটে রাখেন। শুধু তার কাছ থেকেই নয়, যার কাছে বিক্রি করছে তার কাছ থেকেও টাকা কেটে রাখে। তবে মোট বিক্রির ওপর শতকরা পাঁচ টাকা আড়তদারের পরে ফেরত দেয়ার কথা”- বলেন তিনি।

‘গরম যত বেশি পড়ে, তরমুজ ব্যবসায়ীরা তত খুশি হন’ উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘এ সময় বৃষ্টি হলে তরমুজের চাহিদা কমে যায়। দামও পড়ে যায়। মার্চের প্রথম সপ্তাহ থেকে এপ্রিলের শেষ সপ্তাহ অর্থাৎ প্রায় দুই মাস বাজারে তরমুজ পাওয়া যায়। শুরু আর শেষের দিকে তরমুজের দাম বেশি থাকে। মার্চের প্রথম ও দ্বিতীয় সপ্তাহে দাম তুলনামূলক কমে যায়’- বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এমইউ/ওআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।