তরমুজ টেনেই মাসে অর্ধলাখ টাকা আয়

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৯:০১ এএম, ০৪ এপ্রিল ২০১৮

মঙ্গলবার, বেলা ১১টা। রাজধানীর বকশীবাজার মোড় থেকে পলাশী বাজারগামী রাস্তায় দুটি ভ্যানগাড়ি ভর্তি তরমুজ নিয়ে প্যাডেলে সজোরে হাকিয়ে আসছিল আনুমানিক পনের-ষোল বছর বয়সী দুই কিশোর। বুয়েট ক্যাম্পাসের সামনে ওভারব্রিজের নিচে এসে ভ্যানগাড়ি থামালো। দু’জনের শরীর থেকে দরদর করে ঘাম ঝরছিল। কোমড়ে বাঁধা গামছা খুলে ঘাম মুছতে থাকলো। সামনে দিয়ে ডাবওয়ালাকে যেতে দেখে ১০০ টাকা দিয়ে দুটি ডাব কিনে খেল দু’জন।

তাদের সঙ্গে এ প্রতিবেদকের আলাপনে জানা যায়, একজনের নাম আরফান অন্যজন সুমন। এই দুই কিশোর পুরান ঢাকার সদরঘাটের ওয়াইজঘাট থেকে ভ্যানযোগে কলাবাগানের এক ব্যবসায়ীর কেনা তরমুজ পৌঁছে দিতে যাচ্ছে। প্রতি গাড়িতে ৫০টি করে তরমুজ রয়েছে। কলাবাগানে তরমুজ পৌঁছে দেয়ার প্রতি ভ্যানভাড়া ৮০০ টাকা।

আরফান জানায়, তরমুজের সিজন শুরু হওয়ার পর থেকে তার আয়-রোজগার খুবই ভালো। প্রতিদিন ভ্যানগাড়ি করে তরমুজ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় নিয়ে যাচ্ছে সে। সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত চারটি ট্রিপ দেয়। এক মাস যাবৎ গড়ে দৈনিক দেড় হাজার থেকে দুই হাজার টাকা আয় হচ্ছে তার। তবে ভ্যানভাড়া থেকে একটা অংশ ভ্যান মালিককে দিতে হয়।

tormuz-torun-1

সে জানায়, আগে সে বিল্ডিংয়ে রং মিস্ত্রি ও পরে রাজমিস্ত্রির কাজ করতো। কিন্তু বহুতল ভবনে মাচা বেঁধে কাজ করতে ভয় লাগে। এ কারণে ভ্যান চালাচ্ছি। ভ্যান চালিয়ে তো মাসে অর্ধ লাখ টাকা রোজগার হচ্ছে তাতে খুশি কি না, জানতে চাইলে সে বলে,‘রোজগার ভালো অয় অস্বীকার করুম না কিন্তু তরমুজ বোঝাই ভ্যান টানতে জিহ্বাটা বাইর অইয়া যায়।’

আরফান আরও জানায়, একেকটি তরমুজ গড়ে চার থেকে পাঁচ কেজি হলে ৫০টি তরমুজ প্রায় ২৫০ কেজি ওজন হয়। তবে সবসময় ভ্যানগাড়ি চালিয়ে ভালো রোজগার হয় না। এখন কষ্ট করে টাকা জমিয়ে নিজেই একটি ভ্যানগাড়ি কিনতে চায় আরফান। তাই হাজারও কষ্ট হলেও দিনভর পরিশ্রম করে যাচ্ছে সে।

এমইউ/জেডএ/আরএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।