অনুমতি দেয়ার দায়িত্ব ডিএমপি কমিশনারের : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
২৯ মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপির সমাবেশের অনুমতি দেয়ার দায়িত্ব ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের (ডিএমপি) বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমেদ ও আলতাফ হোসেন চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা জানান।
মন্ত্রী বলেন, ‘তারা একটা মিটিং করার কথা বলেছেন। আমরা বলেছি, আপনারা একটা রাজনৈতিক দল... মিটিং করতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। যেকোনো জায়গায় আপনারা মিটিং করেন, পারমিশনটা আমাদের পুলিশ কমিশনার দিচ্ছেন।’
তিনি বলেন, ‘তারা (বিএনপির ৩ নেতা) বলেছেন তাদের পারমিশন দেয়া হচ্ছে না। আমি বলেছি কী কারণে দেয়া হচ্ছে না- নিশ্চয়ই কোনো কারণ সেখানে থাকতে পারে। যেদিন চেয়েছেন সেদিন না হলে এর পরের দিন কিংবা যেকোনো দিন আপনাকে দেবে, যেদিন কোন ধরনের অসুবিধা না থাকে। দেবে না এমন নয়, কারণ আপনারা তো এর আগেও করেছেন।’
দেখা গেছে অন্যান্য রাজনৈতিক দলকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি দেয়া হলেও বিএনপিকে দিতে গড়িমসি করা হয়- এ বিষয়ে জানতে চাইলে আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘এই বছরের আগে বিএনপি যখন সময় চেয়েছে আমরা দিয়েছি। এখানে যে প্রসঙ্গটি আসছে তা হলো- ডিএমপি কমিশনারের কাছে নিশ্চয়ই কোনো গোয়েন্দা তথ্য ছিল কিংবা কোনো আশঙ্কা ছিল, সেজন্য হয়তো তিনি তাদের বারণ করেছেন। সভা যাতে নিরাপদে করতে পারেন সেজন্য আমাদের কমিশনারেরও কিছু দায়িত্বে রয়েছে। সেজন্য হয়তো কমিশনার সমাবেশের সময় বা স্থান পরিবর্তনের কথা বলেছেন।’
বিএনপি নেতারা সমাবেশের অনুমোদন পাওয়ার বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের পুলিশ কমিশনার যদি মনে করেন ২৯ তারিখে তাদের সভাটি করার জন্য কোনো অসুবিধা নেই। তবে পুলিশ কমিশনার সেই ব্যবস্থা নেবেন।’
‘তারা (বিএনপি নেতারা) আমাদের বিষয়টি ভেবে দেখার জন্য বলেছেন, আমি নিশ্চয়ই সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ করে জানতে চাইব- অসুবিধা কোথায় কিংবা কোনো ধরনের অসুবিধা আছে কি না?’
অনুমতি পাওয়ার বিষয়টি আপনার না পুলিশ কমিশনারের উপর নির্ভর করছে- জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘পুলিশ কমিশনারের উপর নির্ভর করছে। দেশকে নিরাপত্তা দেয়ার মূল দায়িত্ব আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীর।’
‘তারা সভা করছেন না এমন কিন্তু নয়। সময় কিংবা স্থান পরিবর্তন করে সভা তারা করছেন।’
অনুমতি না দিলে বিএনপি যদি সমাবেশ করতে চায় তবে কী হবে- এমন প্রশ্ন রাখা হলে আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘সেটা তাদের নিজস্ব ব্যাপার। যদি নিরাপত্তা বাহিনী মনে করে তাদের এখানে কোনো অসুবিধা নেই, তারা (অনুমতি) দেবেন। কিন্তু এটা উপেক্ষা করে তারা যদি সভা করেন এটা তাদের ব্যাপার। সিদ্ধান্তটা তাদের নিজস্ব হবে।’
কারাবন্দি খালেদা জিয়ার মামলা নিয়ে বিএনপি নেতারা কোনো কিছু বলেছেন কি না- জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তারা বলেছেন, কারাগারে আপনারা যে সুবিধা দিচ্ছেন এতে আমরা সন্তুষ্ট, এটা তারা বলে গেছেন। বলেছেন, তিনি যেভাবে আছেন, আপনারা সবকিছুর ব্যবস্থা করেছেন। আমরা বলেছি, জেলকোড অনুযায়ী যেসব ব্যবস্থা থাকার দরকার আমরা এনশিয়র করেছি সবগুলো যাতে তিনি পান।’
মন্ত্রী বৈঠকের বিষয়ে আরও বলেন, ‘তারা বলেছেন, বিভিন্ন জায়গায় যাতে তারা সমানভাবে সভা-সমিতি করতে পারেন। আমি বলেছি, কিছুদিন আগে তো আপনারা খুলনায় মিটিং করে এসেছেন। আপনারা শান্তিপূর্ণ সভা করবেন, এটা আপনাদের রাজনৈতিক অধিকার। আমরা শুধু ওইটুকুই দেখব যে, সভাতে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হলে তখনই আমাদের নৈতিক দায়িত্ব থাকে জনগণকে প্রটেকশন দেয়া। আমরা সেইটুকুই করি, এর বাইরে আমরা কিছু করি না।’
‘তারা বলেছেন অযথা অ্যারেস্ট করা হচ্ছে। আমরা বলেছি ভিডিও চিত্রের মাধ্যমে আমরা যাদের সম্পৃক্ততা পেয়েছি কিংবা তৎক্ষণিক অবস্থায় পেয়েছি পুলিশ তাদের ধরেছে। কমপ্লেইন নেই কিংবা অপরাধ করেনি এ ধরনের কাউকে আমরা সাধারণত অ্যারেস্ট করি না। আপনাদের কাছে যদি কোনো খবর থাকে আমাদের জানান।’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘তারা বলেছেন তাদের কিছু নারী নেত্রী কারাগারে রয়েছেন। আমি স্পষ্ট করে বলেছি, কারাগারে গিয়ে থাকলে তা আর আমাদের আওতায় নেই। বিচার বিভাগ পুরোপুরি আলাদা হয়ে গেছে। সেখানে আমাদের কোনো রিকোয়েস্ট কিংবা কিছু সেখানে টেকে না। এটা আইনের ব্যাপার।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘তারা বলেছেন, মহিলাদের যাতে অ্যারেস্ট করা না হয়। বলেছি, আমাদের পুলিশ তথ্যভিত্তিক অ্যারেস্ট করে। সেজন্য যখন বলেছেন আমি পুলিশের সঙ্গে পরামর্শ করবো। যাতে করে মহিলাসহ অন্যদের যৌক্তিক কারণ ছাড়া অ্যারেস্ট করা না হয়।’
আরএমএম/এনএফ/পিআর/এমএস