হাতিরঝিলে কাউকে ছাড়, কাউকে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:০০ পিএম, ২৬ মার্চ ২০১৮

হাতিরঝিলে হেলমেটবিহীন মোটরসাইকেল চালকদের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযান চালিয়েছে ট্রাফিক পুলিশ। তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল ট্রাফিক জোনের সিনিয়র এএসপি কাজী রোমানা নাসরিনের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালিত হয়।

অভিযানে প্রায় অর্ধশত মামলা দেয়া হয়। আবার বিশেষ পরিচয় পেয়ে কয়েকজন মোটরসাইকেল চালককে ছেড়ে দেয়া হয়। একাধিক চালক থামার সংকেত পেয়েও দ্রুতবেগ মোটরসাইকেল চালিয়ে পালিয়ে যান।

সোমবার বিকেল ৫টার দিকে হাতিরঝিলের কারওয়ানবাজার থেকে বাড্ডা অভিমুখী রাস্তায় পুলিশ প্লাজার পাশেই এই বিশেষ অভিযান পরিচালিত হয়। ঘটনাস্থলে বিকেল ৫টা ১৫ মিনিটের দিকে উপস্থিত হয়ে দেখা যায়, একের পর এক হেলমেটবিহীন মোটরসাইকেল চালককে আটকাচ্ছিলেন ট্রাফিক পুলিশের কর্মকর্তারা। এই দৃশ্য দেখতে মুহূর্তের মধ্যেই ঘটনাস্থলে উৎসুক মানুষের ভিড় জমে যায়।

৫টা ২০ মিনেটের দিকে হেলমেটবিহীন একটি মোটরসাইকেলের চালকে থামান ডিএমপির ট্রাফিক উত্তর বিভাগের সদস্যরা। তার কাছে গাড়ির কাগজ চাইলে ওই চালক বলেন, ‘কাগজ নেই, আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।’ এই উত্তর পেয়ে ওই ট্রাফিক সদস্য মোটরসাইকেলের চালককে অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া সিনিয়র এএসপি কাজী রোমানা নাসরিনের সঙ্গে কথা বলতে বলেন।

police

এরপর ওই মোটরসাইকেল চালক এএসপি রোমানার কাছে গিয়ে বলেন, ম্যাডাম আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি, হলে থাকি। আমার কাছে গাড়ির কাগজ নেই। উত্তরে রোমানা বলেন, কাগজ নিয়ে আসেন ছেড়ে দেব। কাগজ ছাড়া গাড়ি ছাড়া যাবে না। আমিও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে থেকেছি।

এরপর ওই মোটরসাইকেলচালক রোমানার সঙ্গে আরও কিছু কথা বলেন। কিন্তু গাড়ি না ছাড়ার বিষয়ে অটল থাকেন এই সিনিয়র এএসপি। তবে কিছুক্ষণ পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টিকার যুক্ত দুটি মোটরসাইকেল ঘটনাস্থলে এসে উপস্থিত হয়। ওই মোটরসাইকেল দুটির আরহীরা একজন ট্রাফিক সার্জেন্টের সঙ্গে কিছু কথা বলেন। এর পরপরই আটকে রাখা মোটরসাইকেলটিকে ছেড়ে দেয়া হয়।

এ ঘটনার ৫ মিনিট পরেই হেলমেটবিহীন আরেকটি মোটরসাইকেল চালককে আটক করা হয়। ওই চালক নিজেকে পুলিশ হেডকোয়াটারের এক কর্মকর্তার বড় ভাই বলে পরিচয় দেন, তার কাছ থেকে মোবাইল নম্বর রেখে ছেড়ে দেয়া হয়। বিশেষ পরিচয়ে এভাবে আরও কয়েকটি মোটরসাইকেল চালককে মামলা না দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়।

police

বিশেষ পরিচয়ে একাধিক চালককে ছেড়ে দেয়া হলেও ঘটনাস্থলটিতে এক ঘণ্টার মধ্যে প্রায় অর্ধশত চালককে মামলা দেয়া হয়। আবার গাড়ির কাগজ না থাকায় কিছু গাড়ি আটকেও রাখা হয়।

এদিকে থামার সংকেত দিলে কয়েকটি মোটরসাইকেলের চালক না থেকে গতি বাড়িয়ে দ্রুত পালিয়ে যান। এ দৃশ্য দেখ ঘটনাস্থলে উপস্থিত উৎসুক মানুষ অট্টহাসি দিয়ে ওঠেন।

সার্বিক বিষয়ে সিনিয়র এএসপি কাজী রোমানা নাসরিনের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি বলেন, এখানো কোনো কথা বলা যাবে না। আপনি পরে আমার অফিসে আসলে কথা হবে।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাইফুল ইসলাম নামের এক দর্শনার্থী বলেন, বিকেল ৫টার দিকে হঠাৎ মোটারসাইকেলের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হয়। প্রথমদিকে বেশ কড়াকড়িভাবে অভিযান চালানো হলেও ৬টার পরে পরিস্থিতি শিথিল হয়ে আসে।

ঘটনাস্থলে দারিয়ত্ব পালন করা এক ট্রাফিক সার্জেন্ট বলেন, আজ (সোমবার) সকালে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় দুজন মারা গেছেন। এরপর উপর মহল থেকে হেলমেটবিহীন চালকদের বিরুদ্ধে অভিযানে নামার নির্দেশনা আছে। ওই নির্দেশনার কারণেই এ অভিযান পরিচালিত হয়েছে।

এমএএস/জেডএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।