সব জেলা-উপজেলায় হবে স্মৃতিসৌধ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১২:৪৯ পিএম, ২৬ মার্চ ২০১৮

মহান স্বাধীনতা ও বিজয় দিবসে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করবে সরকার। এজন্য ‘জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ প্রকল্প’ হাতে নিয়েছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

এ বিষয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘স্বাধীনতা দিবস ও বিজয় দিবসের সময় আমরা কেন্দ্রীয়ভাবে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে গিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। একুশে ফেব্রুয়ারিতে জেলায় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করি। স্বাধীনতা দিবস ও বিজয় দিবসে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য আমরা জেলা-উপজেলায় আলাদা একটি স্মৃতিস্তম্ভ করব। যাতে সেখানে সবাই শ্রদ্ধা নিবেদন করতে পারে’।

জেলা-উপজেলায় স্মৃতিসৌধ নির্মাণের জন্য উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার মাধ্যমে স্থাপত্য নকশা প্রণয়নের কাজ চলমান আছে বলে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে।

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণে একগুচ্ছ প্রকল্প : মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে, মহান মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক স্থান সংরক্ষণ ও স্মৃতি জাদুঘর নির্মাণে একটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। ১৭৮ কোটি ৯৮ লাখ টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্পের আওতায় একই নকশায় সারাদেশে ৩৬০টি স্থানে স্মৃতিস্তম্ভ ও স্মৃতি জাদুঘর নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে, প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় দরপত্র কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন আছে।

এ ছাড়া ১৬ কোটি ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্পের আওতায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে মিত্রবাহিনীর শহীদ সদস্যদের স্মরণে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হবে। এই প্রকল্পের আওতায় দরপত্র আহ্বান কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ৪১ কোটি ২৭ লাখ টাকা ব্যয়ে আরেকটি প্রকল্পের মাধ্যমে সারাদেশে ৩৪২টি স্থানে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ মেরামত ও পুনর্নিমাণ করা হবে।

নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করতে ৪৯ কোটি ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প নেয়া হয়েছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানে ভাষণের স্থান এবং ইন্দিরা মঞ্চ চিহ্নিত করে ম্যুরালসহ সীমানা দেয়াল নির্মাণ এবং শিশু পার্কে নতুন রাইডস স্থাপনে ২৬৫ কোটি ৪৪ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প নেয়া হয়েছে।

‘ঢাকায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা স্তম্ভ নির্মাণ-৩য় পর্যায়’ প্রকল্পটি গত ৯ জানুয়ারি একনেক সভায় অনুমোদিত হয়েছে। শিগগিরই প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ দেয়া হবে।

এ ছাড়া ৪৫৩ কোটি ২৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধকালে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী কর্তৃক সৃষ্ট বধ্যভূমিসমূহ সংরক্ষণ ও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ (দ্বিতীয় পর্যায়) প্রকল্পটিও অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। এর মাধ্যমে ২৮১টি বধ্যভূমি সংরক্ষণ করা হবে।

‘মুজিবনগর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্প’, স্বাধীনতা ও ‘বিভাগীয় পর্যায়ে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘর নির্মাণ প্রকল্প’ অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে বলেও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

‘মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক প্যানোরমা নির্মাণ প্রকল্প’, মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধের স্মৃতি রেকর্ড করে রাখতে ‘বীরের কণ্ঠে বীরগাঁথা কর্মসূচি’ ও ‘ঢাকায় একটি ঘৃণাস্তম্ভ ও টর্চারসেল নির্মাণ কর্মসূচি’ হাতে নেয়া হচ্ছে।

মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে কিছু প্রকল্প : দুই হাজার ২৭৩ কোটি ২১ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রতি জেলা/উপজেলায় অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বহুতল ভবন নির্মাণ করা হবে। এই প্রকল্পের আওতায় অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ৯৮২ বর্গফুটের ৮ হাজার ফ্ল্যাট হবে।

এ ছাড়া ‘মুক্তিযুদ্ধকালে শহীদ ও অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধাদের সমাধিস্থল সংরক্ষণ ও উন্নয়ন (প্রথম পর্যায়) প্রকল্প’ হাতে নেয়া হয়েছে। এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৮৫ কোটি ৮১ লাখ টাকা। প্রথম পর্যায়ে ২০ হাজার শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধাদের সমাধিস্থল একই নকশায় সংরক্ষণ করা হবে। প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য পরিকল্পনা কমিশনে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

একই সঙ্গে সারাদেশে হাট-বাজারের ইজারা থেকে পাওয়া ৪ শতাংশ অর্থ দিয়ে অসুস্থ মুক্তিযোদ্ধাদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দেয়ার কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। আগামী এপ্রিল মাস থেকে সব মুক্তিযোদ্ধা এই সেবা পাবেন।

মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতা মোবাইলে পরিশোধের পরীক্ষামূলক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আগামী জুলাই থেকে সব মুক্তিযোদ্ধা মোবাইলের মাধ্যমে ভাতা পাবেন। তাদের আর উপজেলায় ব্যাংকে গিয়ে ভাতা নিতে হবে না বলে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

আরএমএম/এমএমজেড/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।