স্বামী-সন্তানের শোকে ট্রমায় ভুগছেন এ্যানি
নেপালের কাঠমান্ডুতে উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় স্বামী-সন্তানকে হারানোর শোকে অাহত এ্যানি ট্রমায় (মানসিক আঘাত) ভুগছেন। তাই উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে অানা হচ্ছে। এখানে তাকে ট্রমার চিকিৎসা দিতে প্রস্তুতি নিয়েছেন চিকিৎসকরা।
গত ১৯ মার্চ নেপাল থেকে দেশ ফিরিয়ে অানা ২৩ মরদেহের মধ্যে এ্যানির স্বামী ফারুক হোসেন প্রিয়ক ও সন্তান প্রিয়ংময়ী তামাররাও ছিল। তাদের শেষবারের মতো দেখতে স্বজনদের অনুরোধে এ্যানিকে গাজীপুরের শ্রীপুরে নেয়া হয়। সেখানে স্বামী ও সন্তানের মৃতদেহ দেখে এ্যানি ফের মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন।
বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন ঢামেক হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের প্রধান ও অাহতদের চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল টিমের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন।
তিনি বলেন, স্বজনদের অনুরোধে সেদিন তাকে (এ্যানি) গ্রামের বাড়ি নেয়া হয়েছিল স্বামী সন্তানকে শেষবারের মতো দেখার জন্য। কিন্তু তিনি তাদের হারানোর শোকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন। তাকে দ্রুত ফিরিয়ে এনে ট্রমার চিকিৎসা দেয়া হবে।
তিনি অারও বলেন, বুধবার সকালের দিকে এ্যানির স্বজনরা ফোন করে বলেছেন, তিনি মানসিকভাবে খুব ভেঙে পড়েছেন। তার মানসিক অবস্থা ভালো নয়। তাকে দ্রুত এখানে (ঢামেক হাসপাতাল) নিয়ে অাসার জন্য আমরা তার স্বজনদের বলেছি।
‘আমরা আগেই বলেছি, আহত রোগীদের মধ্যে দুর্ঘটনার বিরাট ট্রমা কাজ করছে। মানসিক রোগের চিকিৎসকরা তাদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন’-বলেন ডা. সামন্ত লাল সেন।
মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে জৈনা বাজারের বাড়ির আঙিনার বাগানে প্রিয়ক ও সন্তান প্রিয়ংময়ীকে পাশাপাশি দাফন করা হয়।
গত ১২ মার্চ (সোমবার) ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট বিএস-২১১ নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দুর্ঘটনায় পতিত হয়। ৬৭ যাত্রী ও চার ক্রুসহ দুপুর ২টা ২০ মিনিটে বিমানটি বিমানবন্দরের পাশের একটি ফুটবল মাঠে বিধ্বস্ত হয়। এতে ৫১ যাত্রীর প্রাণহানি ঘটে। এর মধ্যে ২৬ বাংলাদেশি নিহত ও ১০ বাংলাদেশি আহত হন। আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে নেপালের বিভিন্ন হাসপাতলে ভর্তি করা হয়।
এরপর আহত সাত বাংলাদেশিকে দেশে ফেরত আনা হয়। সর্বশেষ সোমবার আহত কবীর হোসেনকে দেশে আনা হয়। রোববার দেশে ফিরিয়ে আনা হয় আহত শাহিন বেপারীকে। এর আগে শেহরিন আহমেদ, কামরুন্নাহার স্বর্ণা, মেহেদী হাসান, আলমুন্নাহার অ্যানি ও রাশেদ রুবায়েত দেশে ফেরেন। তারা সবাই ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন।
বিমানটিতে মোট ৬৭ যাত্রীর মধ্যে বাংলাদেশি ৩২ জন, নেপালি ৩৩ জন, একজন মালদ্বীপের ও একজন চীনের নাগরিক ছিলেন। তাদের মধ্যে পুরুষ যাত্রীর সংখ্যা ছিল ৩৭, নারী ২৮ ও দুজন শিশু ছিল।
জেডএ/আরআইপি