বাড়ির বৈধ কাগজের দাবি আজাদের, রাজউকের অস্বীকার
হা-মীম গ্রুপের মালিক এবং এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি এ কে আজাদের গুলশান-২ এর ৮৬ নম্বর সড়কের-১ নম্বর বাড়িটি ভাঙতে মঙ্গলবার অভিযান চালায় রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)।
অনুমোদিত নকশা না থাকার অভিযোগে রাজউকের পরিচালক ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অলিউর রহমানের নেতৃত্বে গুলশানের ওই বাড়িটির একাংশ ভেঙে ফেলা হয়েছে। অভিযানে বাড়ির কিছু অংশ- পার্কিং শেড, নিচতলার ওয়েটিং রুমের কিছু অংশ, দোতলার একটি বেড রুম এবং ড্রইং রুমের কিছু অংশ ভেঙে ফেলা হয়।
মঙ্গলবার অভিযানের সময় অলিউর রহমান সাংবাদিকদের বলেছিলেন, আমাদের টাস্কফোর্স এসে এ বাড়িতে রাজউক অনুমোদিত কোনো নকশা পায়নি। যারা বাড়ির মালিক, তারা রাজউক অনুমোদিত নকশা দেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন। এটি একটি অবৈধ ভবন, রাজউকের নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে আমরা বাড়িটি ভেঙে ফেলছি।
কিন্তু মঙ্গলবার রাতে হা-মীম গ্রুপের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (জনসংযোগ) সাইদুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে গ্রুপটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বাসাটির মালিক এ কে আজাদ বলেন, ২০ মার্চ রাজউকের একটি দল গুলশানের ৮৬ নম্বর সড়কে আমার বাড়িতে হাজির হয়ে বৈধ নকশা নেই বলে বুলডোজার দিয়ে বাড়িটি ভাঙতে শুরু করে। বাড়ির সব বৈধ কাগজপত্র দেখালেও তারা আমলে নেননি। দুপুর ১টার মধ্যে বাড়ির একাংশ গুড়িয়ে দেয়া হয়, পরে আমি রাজউকের চেয়ারম্যানকে অনুমোদিত নকশা, নামজারিসহ বৈধ কাগজপত্র দেখালে ভাঙার কার্যক্রম বন্ধ হয়।
বিজ্ঞপ্তির সঙ্গে ‘নকশার অনুমোদন পত্র, ইমারতসহ নামজারির অনুমোদন পত্ ‘ সংযুক্ত করা হয়।
‘নকশার অনুমোদন পত্র,ইমারতসহ নামজারির অনুমোদন পত্র’ এবং বাসা মালিক এ কে আজাদের কথা উল্লেখ করে জানতে চাইলে রাজউকের পরিচালক ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অলিউর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, রাজউক থেকে অনুমোদিত নকশা তারা দেখাতে পারেনি। রাজউকের নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে আমরা অভিযান চালাই। তারা যে কাগজপত্র বা নামজারির কাগজ দেখিয়েছে সেটা আলাদা, সেটার সঙ্গে নকশার কোনো সম্পর্ক নেই। নকশার কাগজ না দেখাতে পারায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। যদি তাদের সঠিক কাগজপত্র থাকত তাহলে তো আমাদের অফিসেও একটা নথি থাকত। কিন্তু সেটা তো নেই।
তবে ভবন ভাঙার কাজ অসমাপ্ত রেখেই মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে দিনের মতো অভিযান স্থগিত রেখে ওই বাড়ি ছাড়েন রাজউক কর্মীরা। এ বিষয়ে তিনি বলেন, এটি আমাদের নিয়মিত অভিযানের অংশ ছিল। পরে প্রয়োজনবোধে সিদ্ধান্ত হলে আবারও অভিযান চালানো হবে।
বাড়ি ভেঙে ফেলার আগে কোনো নোটিস দেয়া হয়েছিল কি না- সাংবাদিকদের এ প্রশ্নে রাজউকের পরিচালক অলিউর রহমান মঙ্গলবার বলেছিলেন, আমাদের অথরাইজড লোক এসে দেখেছে, নকশা চেয়েছে। এটা আমাদের ভ্রাম্যমাণ আদালতের নিয়মিত কার্যক্রম। ২০১৬ সাল থেকে নিয়মিত আমরা মোবাইল কোর্টের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি।
মঙ্গলবারের অভিযানের পর আজ বুধবার ৮৬ নম্বর রোডের ওই বাসার সামনে গিয়ে দেখা গেছে, ভাঙা সেই বাড়িটির ইট, ক্ষতিগ্রস্ত সব জিনিসপত্র ট্রাক দিয়ে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। বাসার সামনে উৎসুক মানুষের জটলা। বেশ কয়েকজন শ্রমিক ভাঙা অংশের ইট ট্রাকে তুলে পরিষ্কার করছেন।
বাড়িটির নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সিকিউরিটি সদস্য মোহাম্মাদ নিজাম বলেন, মঙ্গলবার রাজউক অভিযান চালিয়ে এসব ভেঙে দিয়ে গেছে, যে কারণে আমাদের নিজ উদ্যোগে আজ এগুলো পরিষ্কার করা হচ্ছে।
এএস/জেডএ/পিআর