গাজীপুরে পৃথক দুর্ঘটনায় ২ জনের মৃত্যু
গাজীপুরের শ্রীপুরে জলাশয়ে পড়ে সৌরভ (৩) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। শনিবার বিকেল ৩ টায় নিজ বাড়ির পাশের জলাশয়ে ডুবে শিশুটির মৃত্যু হয়।
এদিকে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলায় রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেন থেকে পড়ে এক নারী যাত্রী নিহত ও তার স্বামীসহ দুই যাত্রী আহত হয়েছেন। শনিবার দুপুরে রাজাশাহী-জয়দেবপুর রেলপথের কালিয়াকৈরের ভাউমান টালাবহ এলাকায় রংপুর এক্সপ্রেসের যাত্রীরা রেললাইনের পাশের গাছের ডালের সঙ্গে আঘাত পেলে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে।
নিহত শিশু সৌরভ উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের সিংদিঘী গ্রামের দিন মজুর আব্দুর রহিম বাদশার ছেলে। অন্যদিকে, নিহত মাজেদা বেগম (৩৫) নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামের রজব আলীর স্ত্রী। আহতরা হলেন, নিহত মাজেদার স্বামী রজব আলী (৫০), টাঙ্গাইলের ভুয়াপুর উপজেলার সিরাজকান্দি মিকরাইল এলাকার হোসাইন আহম্মেদ (৩৫)।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সৌরভ বেলা ১১টা পর্যন্ত তার বড় ভাই সাব্বির (১০) ও খালাতো ভাই ফরিদ (১৫) এর সাথে ঘরে বসে খেলা করছিল। এ সময় সৌরভ খেলা থেকে উঠে টিউবওয়েলে হাড়িপাতিল ধৌত করা অবস্থায় কর্মরত তার মা শেফালী আক্তারের কাছে ঘুমিয়ে পড়বে বলে হাত-পা ধুয়ে দেওয়ার জন্য বলে। মা তাকে হাত-পা ধুয়ে দিলে সৌরভ ঘরে না গিয়ে বাড়ির পাশের জলাশয়ে যায়। পরে তার বড় ভাই সৌরভকে খুঁজতে থাকলে মা বলে সে ঘরে ঘুমিয়ে আছে। বড় ভাই তাকে ঘরে না পেয়ে আশপাশের সকল সম্ভাব্য স্থানে খুঁজাখুজি করে না পেলে সবাই কান্নাকাটি শুরু করে। পরে বাড়ির পাশের জলাশয়ে সৌরভের মরদেহ ভেসে উঠলে বিকেল ৩ টায় তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
অন্যদিকে, ট্রেনের নিহত যাত্রী মাজেদার ছেলে সম্রাট জানান, নারায়ণগঞ্জ বেড়ানোর উদ্দেশ্যে তার মা-বাবার সাথে তিনিও বগুড়ার সান্তাহার রেলস্টেশন থেকে শনিবার সকালে রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনে উঠেন। যাত্রী বোঝাই ট্রেনটি দুপুরে রাজশাহী-জয়দেবপুর রেলরুটের কালিয়াকৈরের ভাউমান-টালাবহ এলাকায় পৌঁছালে ট্রেনের ইঞ্জিনের পাশে বাহিরে থাকা তার বাবা রজব আলী, মা মাজেদা বেগম, হোসাইন আহম্মদ রেলপথ ঘেঁষে থাকা একটি গাছের ডালের সঙ্গে সজোরে ধাক্কা খান।
এতে ঘটনাস্থলেই বাবা রজব আলী ও হোসেন আহম্মদ ট্রেন থেকে নিচে পড়ে যান এবং মা মাজেদা বেগম গুরুতর আহত অবস্থায় ইঞ্জিনের পাশের রেলিংয়ের সাথে ঝুঁলে থাকেন। পরে পার্শ্ববর্তী রতনপুর রেলস্টেশন এলাকায় এলে গুরুতর আহত মাজেদা বেগম ট্রেনের রেলিং থেকে নিচে পড়ে যান। পরে তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নেয়ার পথে তিনি মারা যান।
এছাড়া পথে পড়ে যাওয়া রজব আলী, হোসাইন আহম্মদকে স্থানীয়রা উদ্ধার কালিয়াকৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। সম্রাট একটু দূরে থাকায় তিনি প্রাণে বেঁচে যান। পরে বিকেলে চিকিৎসা দিয়ে আহত বাবা ও মৃত মাকে নিয়ে নওগাঁর উদ্দেশে রওনা হন তিনি।
রতনপুর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার আব্দুর রহমান বলেন, নিহতের মরদেহ তার স্বজনরা এলাকাবাসীর সহায়তায় উদ্ধার করে গ্রামের বাড়ি নিয়ে গেছে। এছাড়া ট্রেন থেকে পড়ে আরো দুইজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
এ ব্যাপারে জয়দেবপুর রেলওয়ে জংশনের পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) দাউদ খান জানান, দুর্ঘটনার খবর শুনেছি। কিন্তু হতাহতদের কোনো সন্ধান পাইনি।
মো. আমিনুল ইসলাম/এসএস/আরআই