স্বামী-সন্তানকে শেষবারের মতো দেখতে শ্রীপুর যাচ্ছেন এ্যানি
নেপালের কাঠমান্ডুতে উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় আহত ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন আলিমুন্নাহার এ্যানির প্রিয়তম স্বামী আদরের সন্তানও নিহত হয়েছিল। এতদিন এ খবরটি তাকে জানানো হয়নি যেন তিনি ভেঙে না পড়েন।
কিন্তু আজ তিনি এ খবর জেনে গেছেন। জেনে গেছেন প্রিয়তম স্বামী বেঁচে না থাকার খবর। সন্তানের অপেক্ষায় প্রহর গুণছেন সেই এ্যানি। জেনে গেছেন তার প্রিয় সন্তানটিও যে আর নেই। সন্তান আর স্বামীর অপেক্ষায় হাসপাতালের বেডে শুয়ে শুয়ে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখছিলেন এ্যানি। সেই প্রিয় দুটি হাসিমাখা মুখ আর দেখা হবে না। এ খবর শুনে বেঁচে থেকেও যেন মৃত্যুর স্বাদ আচ্ছাদন করছেন এ্যানি।
পুরোপুরি সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত চিকিৎসকরা তাকে মৃত্যুর খবরটি জানাতে চায়নি। কিন্তু পাশেই চিকিৎসাধীন এ্যানির দেবর আহত মেহেদীই এ্যানিকে জানিয়েছেন যে, তার প্রিয়তম স্বামী ও আদরের ছোট্ট সন্তান তামাররা এ পৃথিবীতে আর নেই।
মেহেদী এ্যানির সম্পর্কে তার স্বামীর ছোট ভাই। মেহেদী ও স্বর্ণা তারা স্বামী স্ত্রী। তারা তিনজনই ঢামেকে বার্ন ইউনিটে চিকিৎনাধীন।
মেহেদীর কাছ থেকে এ খবর শুনে হাসপাতালের বেডে শুয়ে শুয়ে বারবার স্বামী সন্তানকে শেষ বারের মতো দেখতে আর্তনাদ করছিলেন এ্যানি। তাই চিকিৎসকরা এ্যানিকে তার স্বামীর বাড়ি শ্রীপুরে যাওয়ার জন্য অনুমতি দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন মেহেদীর বাবা তোফাজ্জল হোসেন।
তিনি জাগো নিউজকে জানান, কিছুক্ষণ আগে এ্যানিকে হাসপাতাল থেকে রিলিজ করে ইউএস-বাংলার ব্যবস্থাপনায় শ্রীপুরে স্বামীর বাড়িতে নেয়া হচ্ছে। চিকিৎসাধীন মেহেদীও রিলিজ নিয়ে প্রিয়কের জানাজায় অংশ নিতে রওনা দিয়েছেন।
ঢামেকের বার্ন ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন জাগো নিউজকে জানান, এ্যানিকে পুরোপুরি রিলিজ দেয়া হয়নি। তাদের প্রিয়জনকে শেষ বারের মতো দেখতে অনুরোধের ভিত্তিতে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে। তবে তারা চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে থাকবেন।
উল্লেখ্য, উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় আহত তিন বাংলাদেশি মেহেদী হাসান, সৈয়দা কামরুন্নাহার স্বর্ণা ও আলিমুন্নাহার এ্যানিকে ১৬ মার্চ শুক্রবার বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিজি ০৭২ ফ্লাইট যোগে দেশে ফিরিয়ে এনে ঢামেকের ১৪ সদস্যের মেডিকেল টিমের তত্ত্বাবধানে তাদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
এর মধ্যে নিহত ২৩ বাংলাদেশির মরদেহ নিয়ে বিমানবাহিনীর বিশেষ ফ্লাইট দেশে ফিরেছেন। এদের মধ্যে এ্যানির স্বামী প্রিয়ক ও সন্তান প্রিয়ন্তীর মরদেহও রয়েছে। তাদেরকে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর কার্যক্রম চলছে।
এমআরএম/আরআইপি