আর্মি স্টেডিয়ামে জানাজার পর স্বজনদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১১:১৫ এএম, ১৯ মার্চ ২০১৮
ছবি-সোমবার সকালে বাংলাদেশ দূতাবাসের কাছে মরদেহগুলো হস্তান্তর করে নেপাল।

নেপালে ত্রিভুবন বিমানবন্দরে ইউএস বাংলার উড়োহাজার দুর্ঘটনায় নিহত ২৩ বাংলাদেশির মরদেহ আজ (সোমবার) দেশে ফেরত আনা হচ্ছে। বিমান বাহিনীর একটি ফ্লাইটে মরদেহগুলো দেশে আনার পর বিকেলে রাজধানীর আর্মি স্টেডিয়ামে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর নিহতদের স্বজনদের কাছে মরদেহগুলো হস্তান্তর করা হবে।

দুর্ঘটনায় নিহত কো-পাইলট পৃথুলা রশিদের মামা তৌফিকুর রহমান জাগো নিউজকে জানান, ইউএস বাংলার মিডিয়া উইং থেকে আমাদেরকে আর্মি স্টেডিয়ামে থাকতে বলা হয়েছে। মরদেহ বাংলাদেশে আনার পর সেখানেই দেশে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।

নিহত সাংবাদিক আহমেদ ফয়সালের মামা রাজিবও জাগো নিউজকে একই তথ্য জানান। বলেন, আমাদেরকেও দুপুর দুইটার সময় বনানীর আর্মি স্টেডিয়ামে থাকতে বলা হয়েছে। মরদেহ বাংলাদেশে আসার পর সেখানেই জানাজা হবে।

আইএসপিআর-এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) নূর ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, নিহতদের মরদেহ বিকেল ৩টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাবে। মরদেহগুলো সেখান থেকে আর্মি স্টেডিয়ামে নিয়ে যাওয়া হবে এবং সেখানে দেশের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর স্বজনদের কাছে মরদেহগুলো হস্তান্তর করা হবে।

জানা গেছে, নিহতদের স্বজনদের নিয়ে ইউএস বাংলার একটি ফ্লাইট আজ সকাল ১১টায় ঢাকায় পৌঁছবে। আর মৃতদেহগুলো বিমান বাহিনীর একটি ফ্লাইটে দুপুর ২টার দিকে রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।

নেপালে ইউএস বাংলার উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২৩ বাংলাদেশির মরদেহ শনাক্ত হয়েছে। আজ (সোমবার) সকালে দেশটির বাংলাদেশ দূতাবাসে তাদের মরদেহ হস্তান্তর করা হয়। পরে সেখানে নিহত বাংলাদেশিদের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

নিহত ২৩ বাংলাদেশি হলেন- আঁখি মনি, বেগম নুরুন্নাহার, শারমিন আক্তার, নাজিয়া আফরিন, এফএইচ প্রিয়ক, উম্মে সালমা, বিলকিস আরা, আখতারা বেগম, মো. রকিবুল হাসান, মো. হাসান ইমাম, মিনহাজ বিন নাসির, তামারা প্রিয়ন্ময়ী, মো. মতিউর রহমান, এস এম মাহমুদুর রহমান, তাহারা তানভীন শশী রেজা, অনিরুদ্ধ জামান, রফিক উজ জামান, পাইলট আবিদ সুলতান, কো-পাইলট পৃথুলা রশিদ, খাজা সাইফুল্লাহ, ফয়সাল, সানজিদা ও নুরুজ্জামান।

তবে এখনও তিন বাংলাদেশির মরদেহ শনাক্ত করা যায়নি। তারা হলেন- নজরুল ইসলাম, পিয়াস রয় ও আলিফুজ্জামান। ডিএনএ পরীক্ষার পর তাদের মরদেহ শনাক্ত করা হবে বলে জানিয়েছে নেপাল কতৃৃপক্ষ।

অন্যদিকে কাঠমান্ডুতে ইউএস-বাংলার উড়োজাহাজ বিধ্বস্তে মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে যাওয়া ৬ বাংলাদেশিকে দেশে ফেরত আনা হয়েছে। সর্বশেষ গতকাল (রোববার) বিকেলে আহত শাহীন বেপারীকে দেশে ফিরেয়ে আনা হয়েছে। এর আগে শেহরিন আহমেদ, কামরুন্নাহার স্বর্ণা, মেহেদী হাসান, আলমুন্নাহার অ্যানি ও রাশেদ রুবায়েত দেশে ফেরত আনা হয়েছে। তারা সবাই ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

উল্লেখ্য, গত ১২ মার্চ (সোমবার) ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট বিএস-২১১ নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দুর্ঘটনায় পতিত হয়। ৬৭ যাত্রী ও চার ক্রুসহ দুপুর ২টা ২০ মিনিটে বিমানটি বিমানবন্দরের পাশের একটি ফুটবল মাঠে বিধ্বস্ত হয়। এতে ৫১ যাত্রীর প্রাণহানি ঘটে। বাকিদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতলে ভর্তি করা হয়।

বিমানটিতে মোট ৬৭ যাত্রীর মধ্যে বাংলাদেশি ৩২ জন, নেপালি ৩৩ জন, একজন মালদ্বীপের ও একজন চীনের নাগরিক ছিলেন। তাদের মধ্যে পুরুষ যাত্রীর সংখ্যা ছিল ৩৭, নারী ২৮ ও দু’জন শিশু ছিল।

এইচএস/আরএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।