লালমনিরহাটে চাঁদা না দেয়ায় ছাত্রলীগ নেতার হাতে ব্যবসায়ী খুন
লালমনিরহাটে চাঁদার টাকা না দেওয়ায় ইউনিয়ন ছাত্রলীগ নেতার হাতে খুন হয়েছেন তাজুল হোসেন (২২) নামে এক মুদী ব্যবসায়ী। শুক্রবার বিকেলে জেলার সদর উপজেলার পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের সিন্দুরমতি হাটে এ হামলার পর রাতে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন নিহত তাজুলের অপর চার ভাই।
আহতদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের পর এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও হতাহতদের স্বজনরা জানান, উপজেলার পঞ্চগ্রাম পশ্চিম মণ্ডলপাড়া গ্রামের ফরিদ মণ্ডলের ছেলে এবং পঞ্চগ্রাম ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহসভাপতি নাজমুল হাসান লিমন (২৮) এবং তার ভাই লিটন (৩২) একই এলাকার সামাদ মণ্ডলের ছেলে মুদী ব্যবসায়ী আতাউর রহমান এবং তার অপর ভাইদের কাছে দীর্ঘদিন ধরে চাঁদা দাবি করে আসছিলেন। ঘটনার দিন বিকেলে লিমন সিন্দুরমতি হাটে আতাউরের দোকানে গিয়ে সিগারেট বাকিতে কিনতে চান। এতে আতাউর অপারগতা জানালে এবং লিমনের কাছে পূর্বের পাওনা ৩৮০০ টাকা চাইলে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন লিমন। বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে লিমন ও তার ভাই লিটনসহ আরো ১০/১২ জনের একটি দল দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আতাউরের ওপর হামলা চালান।
এদিকে আতাউরের ওপর হামলার ঘটনায় তার অপর ৪ ভাই রেজাউল (২৮), ফারুক (২৬), আরিফুল (২৪) এবং তাজুল (২২) এগিয়ে গেলে দুর্বৃত্তরা তাদেরকে এলোপাথারি কুপিয়ে জখম করেন। পরে স্থানীয়রা আশঙ্কাজনক অবস্থায় আহত পাঁচ ভাইকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করলে রাত দেড়টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাজুল মারা যান। এ ঘটনায় আশঙ্কাজনক অবস্থায় মেডিকেলে চিকিৎসাধীন রয়েছেন অপর চার ভাই। এদিকে পুলিশ ভোরে ঘটনার সঙ্গে জড়িত লিমন ও লিটনকে গ্রেফতার করেছে।
নিহত তাজুলের চাচা দুলাল মণ্ডল জাগো নিউজকে জানান, লিমন ও লিটন দীর্ঘদিন ধরে তাদের কাছে চাঁদা আদায় করে আসছিল। সিগারেট বাকি না দেওয়ায় এবং পাওনা টাকা চাইলে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
পঞ্চগড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন মাস্টার জাগো নিউজকে জানান, ইউনিয়নবাসী সন্ত্রাসী লিমন বাহিনীর হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছেন। তাদের অত্যাচারের ভয়ে মানুষ মুখ খুলতে সাহস পান না। এ ঘটনায় তিনি সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
লালমনিরহাট সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এইচ এম মাহফুজার রহমান জাগো নিউজকে জানান, এ ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে। গ্রেফতারকৃত দুজন পুলিশ পাহাড়ায় লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে পুলিশ সুপার টিএম মোজাহিদুল ইসলাম জাগো নিউজকে জানান, খুনিরা যেই হোন তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে তাজুলের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলেও ওসি নিশ্চিত করেন।
রবিউল হাসান/জিতু কবির/এমজেড/এমএস