অগ্নিদগ্ধের বিশেষায়িত চিকিৎসাকেন্দ্র নেই নেপালে
নেপালের কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বাংলাদেশের বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় মারাত্মকভাবে অগ্নিদগ্ধদের দ্রুত দেশে ফিরিয়ে এনে সুচিকিৎসা দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বার্ন বিশেষজ্ঞ ডা. সামন্ত লাল সেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের এ প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক বলেছেন, বিমানটি রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়ে এতে আগুন লেগে যাওয়ায় প্রায় সব যাত্রীই ‘মেজর বার্ন’ হয়েছেন। এ ধরনের দুর্ঘটনায় অধিকাংশের শ্বাসনালী পুড়ে যায়। তাদের জন্য যথাসম্ভব দ্রুত ও বিশেষায়িত জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। সম্ভব হলে তাদের দেশে ফিরিয়ে এনে কিংবা নেপালে গিয়ে সুচিকিৎসা দেয়া দরকার।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আগুনে পোড়া রোগীদের চিকিৎসা দেয়ার জন্য নেপালে বিশেষায়িত চিকিৎসাকেন্দ্র বা বার্ন হাসপাতাল নেই। ঢামেক বার্ন ইনস্টিউটের একাধিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এ তথ্য জানিয়ে বলেন, তাদের জানা মতে নেপালে ডা. শঙ্কর রায় নামে শুধু একজন (বার্ন চিকিৎসায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী) বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রয়েছেন।
বিমান দুর্ঘটনায় আহতদের চিকিৎসার্থে প্রশিক্ষিত বার্ন ডাক্তার ও নার্স স্ট্যান্ডবাই রাখা হয়েছে বলে সোমবার জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।
জানা গেছে, নেপালে পাঠানোর জন্য ঢামেক হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের দুজন ডা. হোসাইন ইমাম ও ডা. মনসুর আহমেদ এবং দুজন প্রশিক্ষিত নার্সকে মনোনীত করে রেখেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তবে মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত তাদের পাঠানোর বা নেপালের হাসপাতালে আহতদের দেশে ফিরিয়ে আনার কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি।
এদিকে নেপালের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ১০ বাংলাদেশির নামের তালিকা প্রকাশ করেছে ইউএস বাংলা। মঙ্গলবার বিকেলে ইউএস-বাংলার বারিধারা কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তালিকা প্রকাশ করেন বিমান সংস্থাটির জিএম (মার্কেটিং সাপোর্ট অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস) কামরুল ইসলাম।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, নেপালের নরভিক হাসপাতালে আলী ইয়াকুব, ওএম হাসপাতালে রেজুয়ানুল হক, কেটিএম-এমসিএইচ হাসপাতালে হাসি এমরানা কবির, আহমেদ শাহরিন, রুবায়েত শেখ রাশিদ, অ্যানি আলমুন নাহার, স্বর্ণা সায়েদা কামরুননাহার, হোসাইন এমডি কবির, হোসাইন এমডি কবির এবং বেপারি এম শাহীন চিকিৎসাধীন আছেন।
সোমবার নেপালের স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ২০ মিনিটে ৪ ক্রুসহ ৬৭ আরোহীবাহী বাংলাদেশের বেসরকারি বিমান সংস্থা ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। এতে পাইলট, ক্রুসহ ৩৬ জন বাংলাদেশির মধ্যে ২৬ জন মারা গেছেন, যারা মারা গেছেন তাদের বেশিরভাই মারাত্মক অগ্নিদগ্ধ ও শ্বাসনালী পুড়ে যাওয়ায় মৃত্যুবরণ করেন।
এমইউ/জেডএ/এমএস