জলঢাকায় বেইলী ব্রিজ ভেঙে ট্রাক নদীতে


প্রকাশিত: ০৩:৩৫ পিএম, ২৪ জুলাই ২০১৫

নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলায় বেইলী ব্রিজ ভেঙে নদীতে উল্টে পড়েছে বালি বোঝাই একটি ট্রাক।  এসময় মোটরসাইকেলসহ অপর এক আরোহীও ওই নদীতে পড়ে যায়।  ভাগ্যক্রমে  ট্রাকের চালক ইয়াকুব আলী (৪৫) ট্রাক সহকারী রাসেল (৩০) ও মোটরসাইকেল আরোহী সুমন (৩৫) প্রাণে বেঁচে যান।  

বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে পঞ্চগড়-ডোমার-জলঢাকা- রংপুর সড়কের জলঢাকা উপজেলা শহরের অদুরে আউলিয়াখানা নদীতে এ ঘটনা ঘটে।  ঘটনার পর ওই সড়ক দিয়ে সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।  ট্রাকটিতে অতিরিক্ত মাল বোঝাইয়ের কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে বলে স্থানীয় সড়ক ও জনপদ বিভাগ জানায়।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, ১৯৮৮ সালের বন্যায় ওই নদীর ওপর নির্মিত সেতুটি ক্ষতিগ্রস্থ হলে সেখানে একটি বেইলী ব্রিজ নির্মাণ করে সড়ক ও জনপদ বিভাগ।  এরপর ওই পথে যান চলাচলে ১৯৯১ সালের ২৫ জুন সন্ধ্যায় একটি যাত্রীবাহী বাস নদীতে পড়ে ২৭ জন নিহত হয়েছিল।  এরপর দীর্ঘদিনেও সেতুটি নির্মিত না হওয়ায় প্রায় সময়েই ঘটতো ছোটখাটো দুর্ঘটনা। এলাকাবাসীর অভিযোগ, চলতি বছরের ২৩ এপ্রিল ব্রিজটি সংস্কারের নামে লাল পতাকা উড়িয়ে দিয়ে ৭ দিন যানবাহন চলাচলা বন্ধ রেখেছিল সড়ক ও জনপদ বিভাগ।  ওই সময় কোনো সংস্কার না করেই ৫ লাখ টাকা সংস্কার বাবদ কাগজে কলমে ব্যয় দেখানো হয়।  ব্রিজটির ওপর দিয়ে যান চলাচলের অযোগ্য হলেও সেটি কথিত মেরামত দেখিয়ে যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়েছিল।  ফলে বৃহস্পতিবার রাতে এ ধরনের ঘটনা ঘটলো।

ট্রাকের চালক ইয়াকুব আলী বলেন, আমি পঞ্চগড় থেকে বালু নিয়ে পাবনা যাচ্ছিলাম।  ট্রাকটি সেতুতে ওঠার পর সেতুটি বিধ্বস্ত হয়ে নদীতে পড়ে যায়।  আহত ট্রাক চালক ও সহকারীর বাড়ি পাবনা জেলায় বলে জানান তারা।

দুর্ঘটনার পর রাতেই স্থানীয় সংসদ সদস্য (নীলফামারী ৩) অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও এলাকাবাসীর সহযোগীতায় আহতদের উদ্ধার কাজ পরিচালনা করেন।

শুক্রবার সকালে রংপুর থেকে ফায়ার সার্ভিসের একটি ডুবুরি দল এসে আরো কোনো মানুষ নদীতে নিখোঁজ রয়েছে কিনা তল্লাশি চালায়।  কিন্তু এমন কাউকে পাওয়া যায়নি।

ঘটনার পর রাতেই ঘটনাস্থলে আসেন সিভিল সার্জন ডা. আব্দুর রশীদ ও নীলফামারী সড়ক যোগাযোগ ও সেতু বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী তানভির সিদ্দিকী।  এসময় নীলফামারী সড়ক যোগাযোগ ও সেতু  বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী তানভির সিদ্দিকী বিক্ষিপ্ত জনতার রোষানলে পড়লে পুলিশ তাকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়।

জলঢাকা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দিলওয়ার হাসান ইনাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

এ ব্যাপারে নীলফামারী সড়ক যোগাযোগ ও সেতু বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী তানভীর সিদ্দিকী সাংবাদিকদের বলেন, সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় চলতি বছরের ২৩ এপ্রিল সকাল থেকে সেখানে লাল পতাকা উড়িয়ে এবং পাঁচ টনের অধিক মালামাল পরিবহনে নিয়েধাজ্ঞা জারি করে সেতুর দুই দিকে সাইনবোর্ড টাঙ্গানো হয়েছিল।  কিন্তু কেউ নিষেধাজ্ঞা মানেনি।  ফলে প্রায় ৪০টন মালামাল পরিবহনের কারণে সেতুটি বিধ্বস্ত হয়েছে।  

তিনি বলেন, সড়কটি চালু করতে বিধ্বস্ত সেতুটি পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে, মেরামতের উপযোগী হলে মেরামত করা হবে।  না হলে অন্যস্থান থেকে একটি বেইলী সেতু এনে সেখানে স্থাপন করা হবে।  এতে সময় লাগবে প্রায় ১৫ দিন।

তিনি বলেন, সেখানে স্থায়ী সেতু করার ব্যাপারে এর আগেই মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।  ৩০ মিটার ওই সেতু করতে খরচ হবে প্রায় চার কোটি টাকা।  অনুমোদন পাওয়া গেলে দ্রুত দরপত্র আহ্বান করা যাবে।

জাহেদুল ইসলাম/ এমএএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।