দেখা মেলে না মশক নিধনকর্মীর

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:৩৯ পিএম, ০৫ মার্চ ২০১৮

ঢাকার অনেক বাসায় দিনের বেলায় ঘুমাতেও মশারি টানাতে হচ্ছে। দিনদিন মশা অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছে। ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মশা নিধনে তারা পর্যাপ্ত পদক্ষেপ নিয়েছেন। চলছে ক্রাশ প্রোগ্রাম। তবে ঢাকার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, মশক নিধনকর্মীদের দেখা তারা পান না।

রাজধানীর মিরপুরের শেওড়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা মাহফুজ হিরো। তিনি বলেন, মশার অত্যাচারে ইদানীং দিনের বেলাতেই মশারি টাঙিয়ে ঘুমাতে হয়। মশা নিয়ন্ত্রণে শুনছি সিটি কর্পোরেশন ব্যাপক উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু আমাদের এলাকাতে তো কোনো মশক নিধনকর্মীর দেখা পাই না। তারা কখন আসে, কী করে কিছুই তো চোখে পড়ে না।

রাজধানীর মোহম্মাদপুর এলাকার বাসিন্দা তুর্য রহমানও একই ধরনের অভিযোগ জানিয়ে বলেন, মশক নিধনকর্মীদের দুই-তিন দিন দেখেছি ফগার মেশিন দিয়ে মশার ওষুধ ছিটিয়ে যেতে। মশার অত্যাচার তো দুই একদিনের জন্য নয় এর উৎপাত প্রতিদিনই রয়েছে। কিন্তু প্রতিদিন তো মশক নিধনকর্মীরা আসে না। তাদের দেখাই পাওয়া যায় না। সন্ধ্যা হলেই মশার অত্যাচার আরও বেড়ে যায়। কিন্তু সিটি কর্পোরেশন মশা নিধনে কী কাজ করে বুঝি না, আমরা তো মশার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছি।

এ বিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ১২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইকবাল হোসেন তিতু বলেন, আমাদের ওয়ার্ডের প্রতিদিন আটজন মশক নিধনকর্মী ৪০ লিটার মশার ওষুধ ছিটায়। পাঁচজন সিটি কর্পোরেশন থেকে দিয়েছিন আমি ব্যক্তিগত উদ্যোগের অতিরিক্ত আরও তিনজন নিয়ে মশা নিধন কার্যক্রম চালাচ্ছি। সব জায়গায় ওষুধ দেয়া হয়, কিন্তু অনেক সময় মশা মরে না।

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের অঞ্চল-৫ এর নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম অজিয়র রহমান বলেন, সব ওয়ার্ডেই পাঁচজন করে মশক নিধনকর্মী দিনে দুইবার করে ওষুধ ছিটাচ্ছে। আঞ্চলিক অফিস থেকে আমরা নিয়মিত মনিটরিং করছি। এছাড়া মশা নিধনের জন্য হটলাইন চালু করা হয়েছে। কেউ অভিযোগ জানালেই সেই এলাকায় কর্মী পাঠিয়ে ওষুধ ছিটানো হচ্ছে।

অন্যদিকে অঞ্চল-৪ এর নির্বাহী কর্মকর্তা গুল্লাহ সিংহ বলেন, মশা নিধনের জন্য নিয়মিত ওষুধ ছিটানো হচ্ছে। আর যেহেতু নিজের এলাকা সম্পর্কে ভালো জানেন কাউন্সিলররা তাই মশা নিধনের দায়িত্ব, লোকবল, প্রয়োজনীয় মেশিন, ওষুধ তাদের কাছেই সরবরাহ করা হয়েছে। দিনে দুইবারের মধ্যে মশক নিধনকর্মীরা অনেক সময় ভোরের দিকে ওষুধ ছেটান সে কারণে হয়তবা নাগরিকরা অনেক সময় তাদের দেখেন না।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) সূত্র জানায়, চলতি বছর মশা নিধনের জন্য বিগত বছরের তুলনায় বেশি বাজেট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। মূলত ওয়ার্ড কাউন্সিলরা সুপারভাইজারের দায়িত্বে আছেন। তাদের কাছে ওষুধ পাঠানো হয়। তারাও নিয়মিত মনিটরিং করছেন। প্রতিদিন ১৮শ’ লিটার মশার ওষুধ ছিটানো হচ্ছে। এছাড়া এ বছর থেকে নতুন টেলিফোস নামক লার্বি সাইডিং ওষুধ ছিটানো হচ্ছে। মশা নিধনে ক্র্যাশ প্রোগ্রামও চলছে।

অন্যদিকে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) সূত্র জানায়, ডিএনসিসিতে গত ১২ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া মশা নিধন ক্রাশ প্রোগ্রামের মেয়াদ ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে বাড়িয়ে ১৫ মার্চ পর্যন্ত করা হয়েছে। তবে প্রয়োজনবোধে ক্রাশ প্রোগ্রামের মেয়াদ আরও বাড়ানো হবে বলে ডিএনসিসির এক সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে। সাধারণত প্রতিদিন যে পরিমাণ মশার ওষুধ ছিটানো হয় ক্রাশ প্রোগ্রাম চলাকালে তার দ্বিগুণ ওষুধ ছিটানো হচ্ছে। এছাড়া ওষুধ ঠিকমতো ছিটানো হচ্ছে কি-না তা মনিটরিংয়ের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নির্দেশ দেয়া হয় ওই সভায়।

এএস/জেডএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।