মুক্ত বাণিজ্য চায় মালয়েশিয়া, অগ্রাধিকার চুক্তিতে আগ্রহ ঢাকার

কূটনৈতিক প্রতিবেদক কূটনৈতিক প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১০:৪০ এএম, ০১ মার্চ ২০১৮

 

বাংলাদেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তিতে আগ্রহী মালয়েশিয়া। তবে মুক্ত বাণিজ্যে নয়, দেশটির অগ্রাধিকার বাণিজ্য চুক্তি বা পিটিএ নিয়ে আলোচনা চালিয়ে নিতে চায় বাংলাদেশ।

ঢাকা ও কুয়ালালামপুরের মধ্যে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের দ্বিতীয় বৈঠকে পিটিএ নিয়েই আলোচনা করেছে বাংলাদেশ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বৃদ্ধি ও দুই দেশের বাণিজ্যে ভারসাম্য আনতে বাংলাদেশকে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি বা ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্টের (এফটিএ) প্রস্তাব ২০১২ সালে দিয়েছিল মালয়েশিয়া। ২০১৭ সালে মে মাসের মাঝামাঝি ঢাকায় অনুষ্টিত দুই দেশের মধ্যে প্রথম পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকে আবারও বাংলাদেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করার প্রস্তাব দেয় দেশটি।

দুই দেশের প্রথম পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকে সম্ভাবনার তুলনায় কম বাণিজ্যের বিষয়টিতে ঐক্যমত হয়। এ সময়ে ঢাকার পক্ষ থেকে দুই দেশের বাণিজ্যে বাংলাদেশের ঘাটতির বিষয়টি তুলে ধরা হয়। এ ঘাটতি বিবেচনায় মালয়েশিয়ার বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার চায় বাংলাদেশ। তবে মালয়েশিয়া দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্কে এফটিএ গুরুত্ব তুলে ধরে, যা দুই দেশের বাণিজ্য ঘাটতিকে কমাতে সক্ষম। আর এ নিয়ে আলোচনা শুরু করতে বাংলাদেশকে আহ্বান জানায়।

বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞিপ্তিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, এদিন পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হকের নেতৃত্বে মালয়েশিয়াতে ঢাকা ও কুয়ালালামপুরের মধ্যে দ্বিতীয় পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্টিষ্ঠিত হয়েছে। মালয়েশিয়ার পক্ষে নেতৃত্ব দেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সেক্রেটারি জেনারেল রামলান ইব্রাহিম। বৈঠকে দুই দেশ বাণিজ্য, বিনিয়োগ, বাংলাদেশের শ্রমিকের কর্মসংস্থান, রোহিঙ্গা এবং সংস্কৃতিক সহযোগিতাসহ দ্বিপাক্ষিক বিষয়গুলোতে আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যকে এগিয়ে নিতে পিটিএ নিয়ে আলোচনা করতে দুই দেশ রাজি হয়েছে বলে জানায় মন্ত্রণালয়।

বিজ্ঞপ্তিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, শ্রমিক রফতানি বিষয়ক জিটুজি প্লাস চুক্তি করায় শ্রমিকদের খরচ এবং দালালদের দৌড়াত্ম কমে গেছে বলে বৈঠকে দুই দেশই একমত হয়েছে। ওই চুক্তির পর ১ লাখ ২২ হাজার শ্রমিকদের অবেদন গ্রহণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়াতে ৯৮ হাজার ৮০০ শ্রমিক রফতানি হয়েছে বলে মালয়েশিরা পক্ষ থেকে বৈঠকে জানানো হয়।

বৈঠকে মালয়েশিয়া রোহিঙ্গা ইস্যুতে গঠনমূলক ভুমিকা পালনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। আর সেই সঙ্গে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ফোরামে বাংলাদেশকে সহযোগিতার আশ্বাসও দিয়েছে। এ সময়ে বাংলাদেশ রোহিঙ্গা ইস্যুতে মালয়েশিয়ার ভূমিকাকে ধন্যবাদ জানায়। সেই সঙ্গে রোহিঙ্গাদের জন্য মাঠ পর্যায়ে হাসপাতাল নির্মাণের বিষয়টিকে স্বাধুবাদ জানায়।

বৈঠকে দুই পক্ষই ঢাকায় আসন্ন ওআইসি’র পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক নিয়ে আলোচনা করেন। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বৈঠকের প্রস্তুতি সম্পর্কে মালয়েশিয়াকে অবগত করা হয়। এছাড়া পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকে দুই পক্ষই আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক ভু-রাজনৈতিক বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করে।

জেপি/এমবিআর/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।