এমপি রানাকে আত্মসমর্পন করার হাইকোর্টের নির্দেশ চেম্বারেও বহাল


প্রকাশিত: ০১:২২ পিএম, ২১ জুলাই ২০১৫

মুক্তিযোদ্ধা ফারুক হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সরকার দলীয় (এমপি) সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানাকে হয়রানি করা যাবে না সংক্রান্ত হাইকোর্টের নির্দেশ স্থগিত করেছেন চেম্বার জজ আদালত। একই সঙ্গে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে নিন্ম (বিচারিক) আদালেতে আত্মসমর্পনের নির্দেশ বহাল রেখেছেন আদালত।

হয়রানি করা যাবে না সংক্রান্ত হাইকোর্টের দেয়া আদেশ স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আনা আবেদন শুনানি করে মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন এই আদেশ দেন।

তার আগে গত ১৪ জুলাই রানার পক্ষে করা এক আবেদনের শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি ফরিদ আহাম্মদ ও বিচারপতি মোহাম্মাদ উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত অবকাশকালীন বেঞ্চ এমপি আমানুর রহমান রানা ও তার ছোট ভাই মেয়র সাঈদুর রহমানকে হয়রানি করা যাবে না মর্মে আদেশ দেন। একই সঙ্গে তাকে দুই সপ্তাহের মধ্যে নিন্ম আদালতে আত্মসমর্পনের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। ওই আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। তা শুনানির পর এই আদেশ দেন চেম্বার জজ আদালত।

আদালতে রানার পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক-উল হক। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন (ভারপ্রাপ্ত) অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা।

তার আগে গত ১২ জুলাই মুক্তিযোদ্ধা রানা হত্যা মামলায় সংসদ সদস্য রানা ও তার ভাই সাঈদুর রহমানের জামিন চেয়ে আবেদন করেন আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক। এই আবেদনের ওপর শুনানি করে অবকাশকালীন সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি টাঙ্গাইল শহরের কলেজপাড়া এলাকায় নিজ বাসার কাছ থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক আহমেদের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে তার স্ত্রী নাহার আহমেদ বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে টাঙ্গাইল সদর থানায় মামলা করেন।

তদন্ত করে টাঙ্গাইল গোয়েন্দা পুলিশ গত আগস্টে এমপির ঘনিষ্ঠ সহযোগী আনিসুল ইসলাম (রাজা) ও মোহাম্মদ আলীকে আটক করে রিমান্ডে নেয়। গত ২৭ আগস্ট রাজা এবং ৫ সেপ্টেম্বর মোহাম্মদ আলী টাঙ্গাইল বিচারিক হাকিম আদালতে এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে ফারুক আহমেদ হত্যার সঙ্গে সংসদ সদস্য আমানুর, মেয়র মুক্তি এবং তাদের অপর দুই ভাই জাহিদুর ও বাপ্পার জড়িত থাকার কথা উঠে আসে।

২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি রাতে আওয়ামী লীগের জনপ্রিয় নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদকে অজ্ঞাত সন্ত্রাসীরা হত্যা করে। এ হত্যাকাণ্ডের পর ফারুক আহমেদের পরিবার এর জন্য খান পরিবারকে দায়ী করে। কিন্তু চাপের মুখে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে থানায় মামলা করতে বাধ্য হন।

টাঙ্গাইল পুলিশ সুপার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর বলেন, ফারুক হত্যা মামলার রহস্য উদ্ঘাটিত হয়েছে। ২০১২ সালের উপ-নির্বাচনে টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেন আমানুর রহমান খান রানা। এ কারণে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। তবে এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি আবার আওয়ামী লীগে যোগ দেন। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এমপি হন রানা।

পুলিশের হিসাবে, তার নামে তিনটি হত্যাসহ ৪৬টি মামলা রয়েছে। তবে মামলাগুলো নিষ্পত্তি হয়েছে বলে দাবি করে আসছে খান পরিবার। তার ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র সহিদুর রহমান মুক্তি ২০১১ সালের পৌর নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হন। তার নামে পাঁচটি হত্যাসহ ৩৬টি মামলা হয়েছে। এসব মামলা কিছু নিষ্পত্তি ও কিছু রাজনৈতিক বিবেচনায় প্রত্যাহার করা হয়েছে।

এফএইচ/বিএ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।