যেভাবে ধরা পড়লেন মেডিনোভার গফুর

জসীম উদ্দীন
জসীম উদ্দীন জসীম উদ্দীন , নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:৫০ এএম, ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

৬ মাস আগে ধানমন্ডিতে অন্য এক অভিযানে গিয়ে প্রথম আব্দুল গফুরের তথ্য জানতে পারে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর। সে সময় তাৎক্ষণিকভাবে তার কার্যালয়ে গেলেও খালি বোতল ছাড়া কিছু পায়নি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কর্মকর্তারা। কিন্তু ৬ মাস চেষ্টার পর অবশেষে ফাঁদে পা দেয় মেডিনোভা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সুপারভাইজার আব্দুল গফুর। মাদকসহ হাতেনাতে গ্রেফতার হন তিনি।

শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত ধানমন্ডি ৫/এ এর ৭১ নং মেডিনোভা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান পরিচালিত হয়। ঢাকা মেট্রো ইউনিটের ওই অভিযানে পাঁচ বোতল ফেন্সিডিল, পাঁচটি বিয়ারক্যান, দুইশ’ গ্রাম গাঁজা, ২৫টি খালি মদের বোতল ও দুটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। গ্রেফতার করা হয় আব্দুল গফুরকে।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, গত ৩১ জানুয়ারি জাতীয় সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে বিরোধী দলের সদস্যের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মাদকের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিকভাবে অর্থাৎ ওইদিন রাতেই অভিযান চালানোর কথা বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর অধিদফতর আরও নড়েচড়ে বসে। রাজধানীতে ভবঘুরে শিশু-কিশোরসহ মাদক ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে অভিযানে নামে অধিদফতর। এরই অংশ হিসেবে মাদকবিরোধী সাঁড়াশি অভিযানের প্রথম দিনে (শুক্রবার) রাজধানীর ধানমন্ডিতে অভিযান চালায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের ঢাকা মেট্রোপলিটন অঞ্চলের সহকারী পরিচালক (এডি) খুরশিদ আলম জাগো নিউজকে বলেন, আমরা মেডিনোভা ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও প্রতিষ্ঠানটির সুপারভাইজার আব্দুল গফুরে বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসায় জড়িত থাকার তথ্য পেলেও সুস্পষ্ট তথ্য না পাওয়ায় ব্যবস্থা নিতে পারছিলাম না। আমরা অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ন্যায় সন্দেহবশত আটক করতে পারি না। তবে আমরা হাল ছাড়িনি। অপেক্ষা করেছি। সার্বক্ষনিক খোঁজ-খবর রাখতে মেডিনোভায় সোর্স নিয়োগ করি। এরপর ওই আব্দুল গফুরের কাছে ফেন্সিডিল কেনার প্রপোজাল পাঠাই। তিনি রাজি হয়ে ৪ বোতল ফেন্সিডিল বিক্রি করেন। হাতেনাতে ছবি ও ডকুমেন্ট রেখে আটক করি। এরপর তার কার্যালয়ে অভিযানে যাই। অভিযানে গাঁজা, ফেন্সিডিল, বিয়ারক্যান জব্দ করি।

মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের এ কর্মকর্তা আরও বলেন, শরীরের নানা সমস্যায় পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য মেডিনোভা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ছুটতেন সাধারণ মানুষ। অথচ কারো ধারণাও ছিল না এখানে চিকিৎসা সেবার আড়ালে চলে জমজমাট মাদকের ব্যবসা।

তিনি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আব্দুল গফুর জানিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে সে মাদক ব্যবসায় জড়িত। মেডিনোভার ভাবমূর্তিকে কাজে লাগিয়ে তিনি খুব সহজে আড়ালে থেকে মাদকের ব্যবসা করে আসছিলেন। তার নিজস্ব কাস্টমার রয়েছে। তিনি নিজস্ব এজেন্ট দিয়ে হোম সাপ্লাইও দিতেন। তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরপূর্বক আইনি ব্যবস্থাগ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

জেইউ/এমবিআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।