আসামি ছিনিয়ে নিতে এসেও সেলফি!

আব্দুর রাজ্জাক সরকার আব্দুর রাজ্জাক সরকার
প্রকাশিত: ১০:২২ এএম, ৩১ জানুয়ারি ২০১৮

পথে ঘাটে, চলন্ত ট্রেনের সামনে, ট্রেনের ছাদে এবং হাসাপাতালে সর্বত্র সেলফির হিড়িক। কেউবা এটা করছেন জেনে বুঝে, আবার কেউবা না জেনেই তুলছেন সেলফি। যেন সবাই সেলফি ম্যানিয়ায় আক্রান্ত। বিপজ্জক পরিস্থিতির সেলফি তুলে এর আগে অনেকেই হয়েছেন সমালোচিত। তবে মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) বিকেলে হাইকোর্ট এলাকায় পুলিশের প্রিজনভ্যান ভেঙে তিন নেতাকে ছিনিয়ে নিতে গিয়ে বিএনপির এক কর্মীর তোলা সেলফি অতীতের সব সেলফিকে যেন হার মানিয়েছে।

এ সেলফি দেখে অনেকে এটিকে কোনো সিনেমার দৃশ্য ভেবে বসতে পারেন। পুলিশের প্রিজনভ্যানে আঘাত করছেন কয়েকজন, এর ফাঁকে প্রিজনভ্যান ধরে নায়কোচিত ভঙ্গিতে সেলফি তোলেন বিএনপির ওই কর্মী। যেন কোনো অ্যাকশন সিনেমার শুটিংয়ের দৃশ্য!

মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়ে যায় সেলফিটি। সামাজিক যোগযোগ মাধ্যম ফেসবুকে অনেকে শেয়ার দেন এ ছবি। চলে নানা সমালোচনা আলোচনা।

বকুল শাহরিয়ার নামে এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ছবিটি শেয়ার দিয়ে লিখেছেন, ‘ছিনতাই করতে গেছে তার প্রমাণ রেখে পরবর্তীতে সুবিধা পাওয়ার আশায় এই অধঃপতন। সেলফির এই যুগে এখন মানুষ নিজেকে ছিনতাইকারী হিসেবে পরিচয় দিতেও দ্বিধাবোধ করে না।’

ফাহাদ আমিন নামে অপর এক ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘আমি তামিল সিনেমার শুটিং দেখেনি, তবে হাইকোর্টের সামনে তোলা আসামি ছিনতাইয়ের এ সেলফি দেখেছি!!’

এ বিষয়ে ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সভাপতি নাজমুল হাসানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সেলফি সাম্প্রতিক সময়ে একটি ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। যে কোনো পরিস্থিতিতে, যে কেনো স্থানে সেলফি তোলার জন্য তারা সজাগ থাকে। ক্ষেত্রবিশেষে এটা যেমন বিব্রতকর তেমনি বিপজ্জনকও বটে।

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার হাজিরাকে কেন্দ্র করে হাইকোর্ট এলাকায় জড়ো হয়েছিলেন বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী। পুলিশ তাদের একাধিকবার ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এক পর্যায়ে সেখান থেকে পুলিশ বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক ছাত্রনেতা ওবায়দুল হক নাসির, সোহাগ মজুমদার ও মিলনকে পুলিশ আটক করে। এই তিন নেতাকে সেখানে রাখা প্রিজনভ্যানে ভরে তালা দিয়ে আরও নেতা-কর্মীকে আটকের জন্য তৎপর হয়। তখন সেখানে স্লোগান দিতে থাকেন নেতাকর্মীরা এবং পুলিশের প্রতি মারমুখী হয়ে ওঠে।

বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে বেগম জিয়া বাসার দিকে রওনা দেন। তার গাড়িবহর ঘিরে একটি মিছিল অগ্রসর হতে থাকে। হাইকোর্ট মোড়ে এসে মিছিলটির পেছনের অংশ থেকে নেতাকর্মীরা পুলিশের প্রিজনভ্যানে অতর্কিতে আক্রমণ চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করে নেতাদের ছিনিয়ে নেয়। এ সময় এক পুলিশ সদস্য বাধা দিতে গেলে তাকে ঘিরে ফেলে কয়েকজন। সেই পুলিশ সদস্যকে রক্ষা করতে তার এক সহকর্মী এগিয়ে এলে তাদের দুজনের ওপর হামলা এবং একটি রাইফেল ভেঙে ফেলে বিএনপিকর্মীরা। এই ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ফাঁকে সুযোগ বুঝে সেলফি তোলেন বিএনপির ওই কর্মী।

এআরএস/এমএম/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।