নতুন আইজিপির বড় চ্যালেঞ্জ নির্বাচন : শহীদুল হক

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০১:০৫ পিএম, ২৬ জানুয়ারি ২০১৮

চলতি বছরে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু ও সফল করাই পুলিশের নতুন মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) জন্য বড় চ্যালেঞ্জ বলে মন্তব্য করেছেন বর্তমান আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক। শুক্রবার রাজধানীর মিরপুরে শহীদ পুলিশ স্মৃতি কলেজে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

শহীদুল হক বলেন, নতুন আইজিপির সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ -এটা নির্বাচনের বছর। সুষ্ঠু ও সফলভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করাই তার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। নতুন আইজিপি আমার ব্যাচমেট, তিনি ৩২ বছর চাকরি করেছেন, তার অনেক অভিজ্ঞতা আছে। আমি আশা করব, আমরা যে গণমুখী পুলিশিং ব্যবস্থাটা চালু করেছি, তিনি সেটা অব্যাহত রাখবেন।

দায়িত্বকালে জঙ্গিবাদের উত্থান ও দমন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, হলি আর্টিসানে জঙ্গি হামলার পরবর্তী সময়ে জঙ্গিবাদের যে উত্থান হয়েছিল তা আমরা কীভাবে দমন করেছি জনগণই সেটা মূল্যায়ন করবে। তবে এটা শতভাগ নির্মূল করতে পারিনি। জঙ্গিবাদ নির্মূল করার চ্যালেঞ্জটা থেকে গেল।

পুলিশে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পুলিশের ওপর মাঠপর্যায়ে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের চেষ্টা হয়। যারা রাজনীতি করেন তারা জনকল্যাণেই কাজ করেন। সুতরাং জনকল্যাণে কোনো হস্তক্ষেপ হলে আপত্তি নেই। তবে পুলিশ কারো ব্যক্তিগতভাবে ব্যবহৃত হবে না। কারণ আমরা যা’ই করি আইন মেনে করি। সারাদেশে হাজারও কাজ করে পুলিশ, কতটা কাজে আর হস্তক্ষেপ আসে? সকল রাজনৈতিক দলই পুলিশের ওপর হস্তক্ষেপের চেষ্টা করে। কিন্তু আমাদের কাজ আমরা করে যাই।

তিন বছরে নিজের গৃহিত পদক্ষেপ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা সবসময় বিশ্বাস করেছি পুলিশ জনগণের বন্ধু, ভুক্তভোগীর শেষ আশ্রয়স্থল। জনগণের সঙ্গে সেতুবন্ধন করে আমরা কাজ করেছি। কমিউনিটি পুলিশিংয়ের মাধ্যমে জনবান্ধব জবাবদিহিতামূলক পুলিশিং ব্যবস্থা চালু করেছি। এ প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে বলে আশা করি।

কমিউনিটি পুলিশিংয়ের মাধ্যমে জনগণের সঙ্গে পুলিশের সেতুবন্ধন অনেক এগিয়ে গেছে। এ ব্যবস্থাটা অব্যাহত থাকলে আরও উন্নতি হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

বিদায়লগ্নে আইজিপি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আস্থা রেখে আমাকে পুলিশ প্রধান করেছিলেন। আমি প্রধানমন্ত্রীর আস্থার প্রতি পূর্ণ সমর্থন রেখে সব ধরনের চেষ্টা করেছি। পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও কল্যাণে অনেক কাজ করেছি। ১ টেবিলে ৩ বছরে সব করা সম্ভব নয়। তারপরেও যা করেছি ব্যক্তিগতভাবে আমি সেটিসফাইড। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় যতটুকু করেছি ব্যক্তিগতভাবে মন করি আমি সফল।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রায় নিয়ে কোনো ধরনের সহিংসতার আশঙ্কা রয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, রায় দেবেন আদালত। আদালত কোনো দলের পক্ষে-বিপক্ষে রায় দেন না। এতো দিন প্রাপ্ত তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে রায় দেওয়া হবে। সুতরাং রায় যেটাই হোক সকলের মেনে নেওয়া উচিত। রায় না মানলে উচ্চ আদালতে যাবেন, এটার আইনি প্রক্রিয়া আছে।

তিনি আরও বলেন, তাছাড়া বিএনপি দায়িত্বশীল একটা দল। আইন-শৃঙ্খলার পরিস্থিতির অবনতি হয় এমন কোনো কর্মসূচি তারা দেবে না বলে আমার বিশ্বাস। তারপরও পুলিশের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। যদি কেউ সহিংসতা করতে চায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ পুলিশের নতুন মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন বিশেষ শাখার (এসবি) অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী। গতকাল বৃহস্পতিবার (২৪ জানুয়ারি) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

চলতি মাসের (জানুয়ারি) ৩১ তারিখ আইজিপি এ কে এম শহীদুল হকের চাকরির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। এর পরদিন থেকেই আইজিপির দায়িত্ব পাচ্ছেন জাভেদ পাটোয়ারী। পুলিশের এই কর্মকর্তা বর্তমান আইজিপি শহীদুল হকের মতোই বিসিএস ৮৪ ব্যাচের। সম্মিলিত মেধা তালিকায় তার অবস্থান চতুর্থ এবং পুলিশের এই ব্যাচে প্রথম। ২০২০ সালের এপ্রিল পর্যন্ত চাকরির মেয়াদ শেষ হবে জাবেদ পাটওয়ারীর।

এআর/আরএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।