দৈনিক প্রায় ৮০০ এমএমসিএফ গ্যাসের ঘাটতি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১০:৫৩ এএম, ২৪ জানুয়ারি ২০১৮
ফাইল ছবি

রাজধানীর বিভিন্ন আবাসিক এলাকায় গ্যাসের তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে। গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী গরমকালেই অনেক সময় গ্যাসের সরবরাহ ব্যাহত হয়, আর এখন শীতের কারণে চাহিদা অনেক বৃদ্ধি পাওয়ায় এ সঙ্কট আরও তীব্রতর হয়ে দেখা দিয়েছে। ফলে রাজধানীর অনেক এলাকাতেই গ্যাসের সঙ্কট নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিছু কিছু এলাকায় গ্যাস থাকলেও চাপ কম থাকায় চুলা জ্বলে টিমটিম করে।

চাহিদার তুলনায় গ্যাসের সরবরাহ ঘাটতিই সমস্যার মূল কারণ। ফলে অনেকেই স্টোপ বা খড়ির চুলা ব্যবহারে বাধ্য হচ্ছেন। আর যাদের সেই সুযোগ নেই তারা কেনা গ্যাসের সিলিন্ডার ব্যবহার করছেন।

তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড সূত্রে জানা গেছে, দেশে বর্তমানে দৈনিক কমবেশি ৩,৫০০ এমএমসিএফ (মিলিয়ন কিউবিক ফুট) গ্যাসের চাহিদা রয়েছে। এর বিপরিতে গড়ে ২,৭৪০ এমএমসিএফ উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে। ফলে চাহিদার বিপরিতে দৈনিক প্রায় ৮০০ এমএমসিএফ গ্যাসের ঘাটতি রয়েছে। বর্তমানে অবশিষ্ট গ্যাসের মুজুদের পরিমাণ প্রায় ১২.৭৪ টিসিএফ (ট্রিলিয়ন কিউবিক ফিট)। এ মজুদ হতে এখনই চাহিদা পুরণ করা হচ্ছে না।

গত জুলাই থেকে আগামী ৩০ জুন সময়কালের জন্য খনিজ সম্পদ বিভাগ সচিব ও মন্ত্রীপরিষদ সচিব স্বাক্ষরিত বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তিতেও এসব তথ্য উল্লেখ আছে।

তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন ডিভিশন) প্রকৌশলী ফখরুল ইসলাম বলেন, আগামী ২ বছরের মধ্যে বর্তমান মজুদ হতে গ্যাস উৎপাদনের হার সর্বোচ্চ মাত্রায় পৌঁছাবে। পরবর্তীতে বর্তমানে মজুদ হতে গ্যাস উৎপাদনের হার দ্রুত হ্রাস পেতে থাকবে। সুতরাং, উৎপাদন বৃদ্ধি ও নতুন গ্যাস মজুদ আবিষ্কার এই মুহূর্তে গ্যাস সেক্টরের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। এ অবস্থান গ্যাস ব্যবহারে জনসচেতনা সৃষ্টি করতে হবে সবাইকে গ্যাস ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে হবে।

রাজধানীর মিরপুর শেওড়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা ডেইজি খাতুন। তিনি একজন গৃহিনী। গ্যাস সঙ্কট বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের মতো অনেক বাসায় বেশ কিছুদিন ধরে ব্যাপক গ্যাস সঙ্কট চলছে। সকাল থেকে গ্যাসের গতি এতই কম থাকে যে রান্নার করার কোনো উপায়ই থাকে না। সেই গ্যাস স্বাভাবিক হয় রাতের দিকে। তাই নিরুপায় হয়ে রাতের বেলায় রান্নার কাজ শেষ করে রাখতে হয়।

এ সমস্যা সমাধানে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গ্যাসের ভবিষ্যৎ চাহিদা মেটানোর লক্ষ্যে ভূ-তাত্বিক জরিপ ৫৭০ লাইন কিমি দ্বিমাত্রিক জরিপ ১২,৮০০ কিমি এবং ত্রিমাত্রিক জরিপ ২৮৪০ বর্গ কিমি সম্পন্ন করা হবে। গ্যাসের মজুদ বৃদ্ধির জন্য অনুসন্ধান কার্যক্রম অব্যাহত আছে তাদের। বাপেক্সে কর্তৃক ২০২১ সালের মধ্যে মোট ১০৮টি কুপ খনন (৫৩টি অনুসন্ধান কূপ, ৩৫ টি উন্নয়ন কুপ এবং ২০ টি ওয়ার্কাওভার কূপ) খনন করার পরিকল্পনা রয়েছে। এ সকল কূপ হতে আনুমানিক দৈনিক ৯৪৩- ১১০৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন হবে আশা করাছেন সংশ্লিষ্টরা।

সেই সঙ্গে এলএনজি আমদানির মাধ্যমে ২০১৮ সালের মধ্যে দৈনিক ১০০০ মিলিয়ন ঘনফুট ক্ষমতাসম্পন্ন ২টি ল্যান্ড বেসড এলএনজি টার্মিনাল স্থাপনের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। গ্যাসের অপচয় ও সিস্টেম লস রোধ, ব্যবস্থাপনা ও জ্বালানি ব্যবহার দক্ষতা বৃদ্ধি লক্ষে সকল আবসিক গ্যস গ্রাহকের আঙ্গিনায় প্রি-পেইড গ্যাস মিটার স্থাপনের পরিকল্পনাও নেয়া হয়েছে।

এএস/এমবিআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।