শিকড়ের টানে কালীগঞ্জ এখন ফাঁকা


প্রকাশিত: ০৮:৪৯ এএম, ১৭ জুলাই ২০১৫

আজ চাঁদ দেখা গেলেই শনিবার ঈদ। তাই নাড়ির টানে, শিকড়ের টানে কালীগঞ্জএখন ফাঁকা। এখানকার সরকারি-বেসরকারি অফিসসহ স্থানীয় কল-কারখানা ছাড়তে শুরু করেছেন বিভিন্ন জেলা, উপজেলা থেকে আসা কর্মজীবী মানুষেরা।

নিজ নিজ বাড়িতে আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে এবং সকলের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করেতে স্থানীয় কল-কারখানার বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষ কালীগঞ্জ ছেড়ে এখন নিজ এলাকামুখী হচ্ছে। আর এতে উপজেলার সরকারি-বেসরকারি অফিসসহ স্থানীয় কল-কারখানাগুলো প্রায় ফাঁকা হতে শুরু করেছে।

শুক্রবার সকাল থেকে কালীগঞ্জের টঙ্গী-কালীগঞ্জ-ঘোড়াশাল সড়কসহ শাখা সড়কগুলো দিয়ে মানুষ নিজ নিজ গন্তব্যে যাত্রা শুরু করেছেন। আবার অন্যত্র কর্মরত কালীগঞ্জের লোকজনও নিজেদের বাড়িতে আসা শুরু করেছেন। কেউ কেউ ঢাকায় কর্মরতি আবার কেউ কেউ ওখানেই স্বপরিবারে থাকেন। তারাও এখন শিকড়ের টানে গ্রামের বাড়িতে ফিরতে শুরু করেছে।

চট্টগ্রাম ও বৃহত্তর সিলেটসহ প্রায় ৩২টি জেলার মানুষ আসা-যাওয়ার বিকল্প রাস্তা হিসেবে টঙ্গী-কালীগঞ্জ-ঘোড়াশাল সড়ক ব্যবহার করেছে। উদ্দেশ্য একটাই দ্রুত স্বজনদের কাছে পৌঁছে যাওয়া।

সরোজমিনে দেখা যায়, বৃহস্পতিবার বৃষ্টির জন্য কেউ বেরুতে না পারলেও শুক্রবার সকাল থেকে নাড়ির টানে, শিকড়ের টানে কালীগঞ্জ ছাড়তে শুরু করেছেন বিভিন্ন জেলা, উপজেলা থেকে আসা কর্মজীবী মানুষেরা। তবে যেকোনো মূল্যে শিকড়ের টানে ছুটছে ঘরমুখো মানুষরা। পাশাপাশি মোবাইল ফোনে সামনের সড়কগুলোর যানজটের খবরা খবরও জেনে নিচ্ছেন। তবে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত টঙ্গী-কালীগঞ্জ-ঘোড়াশাল সড়কের কয়েকটি স্থানে ছোট ছোট যানজট ছাড়া বড় ধরণের কোনো যানজটের খবর পাওয়া যায়নি।

ময়মনসিংহ ত্রিশাল উপজেলার সলিমপুর গ্রামের আব্দুল আওয়াল কালীগঞ্জের জেটিএ প্লাস্টিক কারখানায় অপারেটর পদে চাকরি করেন। আজ থেকে ঈদের ছুটি পেয়ে গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার জন্য সকালে কালীগঞ্জ থেকে বাদির উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছেন।

দিনাজপুর পার্বতীপুর উপজেলার ঘোনাপাড়া গ্রামের মো. ফরহাদ হোসেন কালীগঞ্জের ভরসা এগ্রোতে সিভিল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে আছেন। ছুটি পেয়ে কালীগঞ্জ ছেড়ে তিনিও আজ গ্রামের বাডিতে যাচ্ছেন।
 
তিনি আরো জানান, কারখানা ছুটি হয়ে গেছে। তাই স্বজনদের সঙ্গে ঈদ করতে গ্রামের বাড়ি যাচ্ছি। তার সঙ্গে আরোও সঙ্গী হয়েছেন তার তিন বন্ধু মশিউর, শিমুল ও মামুন। তাদের সকলেই টঙ্গী-কালীগঞ্জ-ঘোড়াশাল সড়ককে নিয়ে বেশি ভয়। কারণ এ সড়ক খুব সরু এবং মালবাহী ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান চলাচল বেশি। তাই ছোট কোনো দুর্ঘটনা ঘটলেই যানজটে পড়ে থাকতে হবে এই আশঙ্কায়। তারা মনে করেন, এ সড়ক পার হতে পারলেই বাড়ি ফেরা মোটামুটি নিশ্চিত।

এদিকে, ঈদে ঘরমুখো মানুষেরা যাতে সড়কে কোনো রকম দুর্ভোগ পোহাতে না হয় এবং যানজট নিরসনে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের লোকজন কাজ করছেন। এ লক্ষ্যে টঙ্গী-কালীগঞ্জ-ঘোড়াশাল সড়কে টঙ্গী ওড়াল সেতু থেকে নিমতলী ব্রীজ পর্যন্ত টঙ্গী থানা পুলিশ, নিমতলী ব্রীজ থেকে পূবাইল ব্রীজ পর্যন্ত গাজীপুর সদর থানা আওতাধীন পূবাইল পুলিশ ফাঁড়ি এবং পূবাইল ব্রীজ থেকে ঘোড়াশাল শহীদ ময়েজ উদ্দিন সেতু পর্যন্ত কালীগঞ্জ থানা পুলিশের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে জেলা পুলিশ সুপার অফিস সূত্রে জানা যায়।

তবে সরেজমিনে বৃহস্পতিবার থেকে শুক্রবার সকাল ১০টা পর্যন্ত টঙ্গী-কালীগঞ্জ ঘোড়াশাল সড়কের কোনো স্পটে পুলিশ প্রশাসনের কোনো লোকজনকে দেখা যায়নি।

কালীগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মুস্তাফিজুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, চট্টগ্রাম ও বৃহত্তর সিলেটসহ প্রায় ৩২টি জেলার মানুষ বিকল্প রাস্তা হিসেবে টঙ্গী-কালীগঞ্জ-ঘোড়াশাল সড়ক ব্যবহার করছেন। তাই গাজীপুর পুলিশ সুপার এ সড়কটিকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। আর সে লক্ষ্যেই আমরা কাজ করছি।  

আব্দুর রহমান আরমান/এআরএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।