প্রথম পেশাগত পরীক্ষার ফল : শীর্ষ দশের ৭টিতে ঢামেকের শিক্ষার্থী


প্রকাশিত: ০২:১৭ পিএম, ১৬ জুলাই ২০১৫

এমবিবিএস কোর্সে নতুন কারিকুলামে অনুষ্ঠিত প্রথম পেশাগত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা অনুষদের অধীনে সরকারি-বেসরকারি ৫৩টি মেডিকেল কলেজের ৩ হাজার ২২৭ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছিল। অংশগ্রহণকারী মোট পরীক্ষার্থীর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছেন ২ হাজার ৫০৯ জন। শতকরা হিসেবে পাশের হার প্রায় ৭৮ ভাগ।
 
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিস ও চিকিৎসা অনুষদ বিভাগ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা অনুষদ সূত্রে জানা গেছে মেধাতালিকায় শীর্ষ দশ শিক্ষার্থীর মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজের ৭ জন, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের ২জন ও শহীদ সোহরাওয়ার্দীর ১ জন রয়েছেন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজের তিন শিক্ষার্থী শতকরা ৮৫ ভাগ অর্থাৎ ‘অনার্স মার্কস্’ পেয়ে মেধাতালিকায় ১ম, ২য় ও ৩য় হয়েছেন।  এরা হলেন দেবলিনা সরকার মেধা (রোল নম্বর ২২৪১), প্রিতম দাস (রোল নম্বর ২২৩৮) ও মো. যুবায়ের বিন মেসবাহ (রোল নম্বর ২২৮৯)।

জানা গেছে নতুন কারিকুলামে এনাটমি ৫০০, ফিজিওলজি ৫০০ ও বায়োকেমিষ্ট্রি ৪০০ সহ মোট ১৩০০ নম্বরের প্রথম পেশাগত পরীক্ষা গত ২৫ জুন অনুষ্ঠিত হয়। দ্রুততম সময়ে গত ১৪ জুলাই এ ফলাফল প্রকাশিত হয়।

গত দু`দিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবককে পরীক্ষার ফলাফল জানিয়ে উচ্ছাস প্রকাশ করতে দেখা গেছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা অনুষদের ডীন ও ঢামেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. ইসমাইল খান বৃহস্পতিবার জাগো নিউজকে বলেন, অতীতের যে কোন সময়ের তুলনায় দ্রুততম সময়ে নতুন কারিকুলামের প্রথম পেশাগত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা অনুষদ ডীন কার্যালয় ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কার্যালয়সহ সংশ্লিষ্ট সকলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এত দ্রুত ফলাফল প্রকাশ করা সম্ভব হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে বর্তমানে দেশে সরকারি ২৯টি ও বেসরকারি ৬৪টি মেডিকেল কলেজ রয়েছে। এছাড়া ঢাকা আমর্ড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজসহ আরও নতুন ৬টি মেডিকেল কলেজ রয়েছে।

সরকারি বেসরকারি ৯৩ মেডিকেল কলেজ ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও সিলেট শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ও ৬টি আমর্ড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজ সেনাবাহিনীর অধীনে পরিচালিত হয়।

স্বাস্থ্য অধিদফতর প্রকাশিত হেলথ বুলেটিন ২০১৪ অনুসারে ৯৯ মেডিকেল কলেজে মোট আসন সংখ্যা  ৮ হাজার ৬৫৬টি।

জানা গেছে সরকারি বেসরকারি মোট মেডিকেল কলেজের  প্রায় দুই তৃতীয়াংশ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা অনুষদের অধীনে পরিচালিত হয়।

১৯৯৮ সালে দেশে প্রথমবারের মতো এমবিবিএস কোর্স কারিকুলাম প্রণীত হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও ইউনাইটেড নেশন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (ইউএনডিপি) কারিকুলাম প্রণয়নে সহযোগিতা করে।
২০০২ সালে ব্যাচেলর অব মেডিসিন, ব্যাচেলর অব সার্জারি (এমবিবিএস) কোর্স কারিকুলাম  প্রণীত হয়েছিল। এরপর ২০১৩-২০১৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে শিক্ষার্থীরা নতুন কারিকুলামে পড়াশুনা শুরু করে।

জানা গেছে, পুরনো কারিকুলামে তিনটি পেশাগত পরীক্ষা নেয়া হলেও বর্তমান কারিকুলামে শিক্ষার্থীরা চারটি পেশাগত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবেন। এছাড়া শিক্ষকদের পাশাপাশি শিক্ষার্থীরাও শিক্ষকদের কাজের মূল্যায়ন করার সুযোগ পাচ্ছেন।

জানা গেছে, পাঁচ বছর মেয়াদি এমবিবিএস কোর্সে পুরোনো কারিকুলামে (২০১২-২০১৩ শিক্ষাবর্ষ) প্রথম পেশাগত পরীক্ষায় এনাটমি, ফিজিওলজি ও বায়োকেমিষ্ট্রি, দ্বিতীয় পেশাগত পরীক্ষায় প্যাথলজি, মাইক্রোবায়োলজি, ফার্মাকোলজি, ফরেনসিক মেডিসিন ও কমিউনিটি মেডিসিন এবং চূড়ান্ত পেশাগত পরীক্ষায় সার্জারি, মেডিসিন ও গাইনী বিষয়ে পরীক্ষা দিতেন।

নতুন কারিকুলামে বিভিন্ন বিষয়কে চারটি পেশাগত পরীক্ষায় ভাগ করে দিয়ে শিক্ষার্থীদের পড়াশুনার চাপ কমানো হয়েছে। দ্বিতীয় পেশাগত পরীক্ষায় পাঁচটি বিষয়ের বদলে শিক্ষার্থীরা দুটি বিষয়ে (ফরেনসিক মেডিসিন ও কমিউনিটি মেডিসিন) পরীক্ষা দিবেন। তৃতীয় পেশাগত পরীক্ষায় প্যাথলজি, মাইক্রোবায়োলজি ও ফার্মাকোলজি বিষয়ে পরীক্ষা দিবেন। প্রথম ও চূড়ান্ত পেশাগত পরীক্ষার নিয়মাবলী আগের মতোই রয়েছে।

এমইউ/এআরএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।