চাঁদপুরগামী লঞ্চগুলোতে অতিরিক্ত যাত্রী ও মালামাল বোঝাই থেমে নেই
লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী ও মাল বোঝাইয়ের কারণে মেঘনায় লঞ্চডুবি ও প্রাণহানির ইতিহাস নতুন কিছু নয়। তারপরও লঞ্চগুলোতে অতিরিক্ত যাত্রী ও মালামাল বোঝাই করে চলাচল এখন নিয়মে পরিণত হয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলগামী লঞ্চগুলোতে এ চিত্র যেন নিত্য নৈমত্তিক ব্যাপার। বিশেষ করে ঈদুল ফিতরকে ঘিরে এ যেন ভয়াবহ অবস্থায় বিরাজ করছে।
কিন্তু কোনো কর্তৃপক্ষই বিষয়টি নিয়ে কার্যকরী তেমন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। তবে প্রশাসন সতর্ক রয়েছে বলে দাবি করেছে। উল্লেখ্য, চাঁদপুরের ইতিহাসে গত এক দশকে ভয়াবহ যেসব লঞ্চ দুর্ঘটনাগুলো হয়েছে তার মধ্যে এম ভি দিনারের ডুবে যাওয়া অনেক মর্মান্তিক। তৎকালে ঢাকা থেকে চাঁদপুরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা এম ভি দিনার লঞ্চটিতে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাইয়ের পাশাপাশি অধিক অর্থ উপার্জনের আশায় লঞ্চের অসাধু কর্মকর্তারা শত শত বস্তা আলু বোঝাই করে নিয়েছিলো। বিকেল ৫টায় চাঁদপুরের মেঘনা মোহনা অতিক্রমকালে সকল যাত্রীরা লঞ্চ থেকে নামবার প্রাথমিক প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। কিন্তু মেঘনা মোহনা অতিক্রমকালে প্রবল ঘূর্ণাবর্তে পরে প্রথমে বোঝাইকৃত আলুর বস্তার ভারে লঞ্চ কাত হয়ে যায়। মুহূর্তেই সব উলট-পালট হয়ে গেল। লঞ্চে থাকা নব দম্পতিসহ শত শত যাত্রীর সলিল সমাধি হলো পানিতে।
এ পর্যন্ত যতগুলো লঞ্চ দুর্ঘটনা হয়েছে প্রত্যেকটির নেপথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায় অতিরিক্ত যাত্রীর পাশাপাশি অধিক মালামাল বহনের কারণ রয়েছে। সরেজমিনে কয়েকটি লঞ্চের ভেতরে প্রবেশের পর দেখা যায়, লঞ্চের নিচতলার ফ্লোরে শত শত সাধারণ যাত্রীরা গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। যাত্রীদের চারপাশ ঘিরে রয়েছে শত শত মালের বস্তা, দেখে মনে হয় নিঃশ্বাস ফেলবার জায়গাও নেই। লঞ্চে প্রতিটি ফ্লোরের অবস্থা একই রকম। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রতি রাতেই এ রকম মালামাল ও যাত্রী বোঝাই লঞ্চ লঞ্চঘাট থেকে ছেড়ে যায়।
এভাবে অতিরিক্ত যাত্রী ও মালামাল বোঝাই করে লঞ্চ চলাচল করার বিষয়ে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের আইন এবং সার্বক্ষণিক বিআইডব্লিউটিএর তদারকির কথা থাকলেও বাস্তবে দেখা যায় ভিন্ন চিত্র।
ইকরাম চৌধুরী/এমজেড/আরআইপি