স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে থ্যালাসেমিয়া সচেতনতা কার্যক্রম

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:১৭ পিএম, ০৯ জানুয়ারি ২০১৮

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে থ্যালাসেমিয়া সচেতনতা কার্যক্রম চালাবে সরকার। মঙ্গলবার সচিবালয়ে থ্যালাসেমিয়া সচেতনতা কার্যক্রম নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক এ তথ্য জানান।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে একটি কর্মসূচি ঘোষণা করতে চাই। এই কর্মসূচির স্লোগান- সাল দুই হাজার আটাশে/থ্যালাসেমিয়া সমস্যা থাকবে না বাংলাদেশে।’

থ্যালাসেমিয়া বাংলাদেশের একটি অন্যতম জনস্বাস্থ্য সমস্যা উল্লেখ করে জাহিদ মালেক বলেন, ‘থ্যালাসেমিয়া একটি বংশগত রক্তের রোগ। বাবা বা মা কিংবা উভয়েরই থ্যালাসেমিয়ার জিন থাকলে বংশানুক্রমে এটি সন্তানের মধ্যে ছড়ায়। এটি কোনো ছোঁয়াচে রোগ নয়। এটা কোনো ক্যান্সারও নয়। এই রোগে আক্রান্তের দেহে ত্রুটিযুক্ত লোহিত কণা উৎপন্ন হয় বলে এই কোষগুলো পূর্ণ জীবনকালের আগেই ভেঙে যায়। এ কারণে তাদের নিয়মিত রক্ত পরিসঞ্চালন করে বেঁচে থাকতে হয়।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে এক কোটি ১০ লাখ লোক অজ্ঞাতসারে থ্যালাসেমিয়া রোগের বাহক। প্রতি বছর বাংলাদেশে প্রায় ৭ হাজার শিশু থ্যালাসেমিয়া নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। এই রোগে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা প্রায় ৬০ হাজার।’

বুধবার দেশের ৬৪টি জেলায় থ্যালাসেমিয়া নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিকারের জন্য জাতীয় কর্মসূচি নেয়া হয়েছে জানিয়ে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজধানীর জাতীয় জাদুঘর মিলনায়তনে আলোচনা সভা হবে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। এছাড়া বিশিষ্ট ব্যক্তিরা এতে অংশ নেবেন।’

আলোচনা সভায় থ্যালাসেমিয়া রোগীদের সেবা সামগ্রী উপহার দেয়া হবে। ঢাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে লিফলেট, পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুন লাগানো হবে। এছাড়া ঢাকা শহরকে দশটি ভাগ করে ১০ গ্রুপ বাউল শিল্পীদের পরিবেশনায় থ্যালাসেমিয়াজনিত সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য রোড শো করা হবে বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

প্রতিটি জেলার সদর হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ কেন্দ্র করে থ্যালাসেমিয়া নিয়ে আলোচনা সভার আয়োজন করা হবে।

স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘থ্যালাসেমিয়া রোগের কোনো স্থায়ী প্রতিষেধক বা সহজ প্রতিকার না থাকায় এর প্রতিরোধ এবং নিয়ন্ত্রণের জন্য স্বাস্থ্য অধিদফতর একটি জাতীয় রূপরেখা প্রণয়ন করেছে। এর মাধ্যমে থ্যালাসেমিয়া এবং এর প্রতিরোধের বিষয়ে জনগণের মধ্যে বিশেষ করে তরুণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করা হবে।’

এছাড়া কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- বিয়ের আগে স্ক্রিনিংয়ের মাধ্যমে থ্যালাসেমিয়ার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ দম্পতি নির্ণয়, গর্ভাবস্থায় থ্যালাসেমিয়া স্ক্রিনিং, ঝুঁকিপূর্ণ দম্পতিদের গর্ভস্থ ভ্রুন পরীক্ষা, রোগীদের জন্য জাতীয় রেজিস্ট্রি প্রণয়ন, চিকিৎসায় গাইডলাইন প্রণয়ন, চিকিৎসা ও প্রতিরোধের বিষয়ে প্রশিক্ষণ, চিকিৎসা উপকরণ সহজলভ্য এবং জাতীয়ভাবে প্রচার অভিযান পরিচালনা করা হবে।

রূপরেখা অনুযায়ী ২০২৮ সালের মধ্যে জিন থেরাপির মাধ্যমে বিদ্যমান রোগীদের চিকিৎসার উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশকে থ্যালাসেমিয়া মুক্ত করা হবে বলে সংবাদ সম্মেলন জানানো হয়।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘থ্যালাসেমিয়ার বিষয়ে এতদিন জাতীয়ভাবে কোন সচেতনামূলক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়নি। মানুষকে সচেতন করে তুলতে পারলে অনেক ক্ষেত্রে এই রোগকে পরিহার করা সম্ভব হবে।’

আরএমএম/জেএইচ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।