গেল বছর শিশু ধর্ষণ বেড়েছে ৩৩ শতাংশ
২০১৬ সালের তুলনায় ২০১৭ সালে শিশু হত্যা এবং ধর্ষণ আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। ২০১৭ সালে ৩৩৯টি শিশু হত্যা এবং ৫৯৩টি শিশু ধর্ষিত হয়েছে, যা ২০১৬ সালের চেয়ে যথাক্রমে ২৮ শতাংশ এবং ৩৩ শতাংশ বেশি। সেই সঙ্গে বেড়েছে গণধর্ষণ, প্রতিবন্ধী শিশু ধর্ষণ, বখাটেদের মারধর-কুপিয়ে জখম করা এবং গোপনে অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার প্রবণতা। ২০১৭ সালে প্রতিমাসে গড়ে ২৮টি শিশু হত্যা এবং ৪৯টি শিশু ধর্ষণের শিকার হয়।
বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের ‘স্টেট অব চাইল্ড রাইটস ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে গত বছরের সার্বিক শিশু অধিকার পরিস্থিতিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে ফোরামটি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ফোরামের পক্ষ থেকে বলা হয়, সারা দেশে গতবছর সার্বিক শিশু অধিকার পরিস্থিতি ছিল উদ্বেগজনক। বিচারহীনতা এবং বিচার প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রতা শিশু নির্যাতনের মূল কারণ।
প্রতিবেদন তুলে ধরেন ফোরামের পরিচালক আবদুস সহিদ। গত বছরের ১২ মাসের জাতীয় দৈনিক পত্রিকার সংবাদ পর্যালোচনা করে তারা প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৬ সালে ৩ হাজার ৫৮৯টি শিশু বিভিন্ন ধরনের সহিংসতা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছিল, যাদের মধ্যে ১ হাজার ৪৪১ শিশু অপমৃত্যুর এবং ৬৮৬ শিশু যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছিল। আর ২০১৭ সালে মোট ৩ হাজার ৮৪৫টি শিশু বিভিন্ন ধরনের সহিংসতা ও নির্যাতনের শিকার হয়, যাদের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের অপমৃত্যুর শিকার হয় ১ হাজার ৭১০টি শিশু। আর ৮৯৪ টি শিশু যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে। অর্থাৎ ২০১৭ সালে সামগ্রিকভাবে শিশু নির্যাতন-নিপীড়নের ঘটনা বেড়েছে ৭ দশমিক ১৩ শতাংশ, যার মধ্যে শিশু অপমৃত্যু এবং যৌন নির্যাতন বেড়েছে যথাক্রমে ১৮ দশমিক ৬৭ শতাংশ এবং ৩০ দশমিক ৩২ শতাংশ।
তবে ২০১৭ সালে ২০১৬ সালের তুলনায় কিছুটা কমেছে বাবা-মায়ের হাতে শিশু হত্যা (-২২ শতাংশ), শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিশুদের শারীরিক নির্যাতন (-৫৫শতাংশ) এবং কথিত চুরির অপরাধে দরিদ্র শিশুদের পিটিয়ে নির্যাতন (-৩৮ শতাংশ)।
বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরাম জাতীয় পর্যায়ে শিশুদের নিয়ে কাজ করে এমন ২৬৯টি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার (এনজিও) একটি জাতীয় নেটওয়ার্ক। বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরাম ১৯৯০ সালে জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদ বাস্তবায়নের লক্ষে প্রতিষ্ঠার পর থেকে বাংলাদেশে শিশু অধিকার রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে। ১৯৯৭ সাল থেকে প্রতিবছর বাংলাদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত শিশু অধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলো পর্যালোচনা করে ‘স্টেট অব চাইল্ড রাইটস ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করে আসছে।
এফএইচএস/জেডএ/এমএস