তথ্যে এসে টেলিকমের সাফল্য তুলে ধরলেন তারানা
তথ্য মন্ত্রণালয়ে যোগ দিয়ে প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সাফল্য তুলে ধরলেন।
রোববার সচিবালয়ে তথ্য অধিদফতরের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম টেলিযোগাযোগের বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরেন। এ সময় তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু উপস্থিত ছিলেন।
গত ৩ জানুয়ারি তারানা হালিমকে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ থেকে সরিয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নিয়োগ দেয়া হয়। রোববার তিনি নতুন দফতরে যোগ দেন।
অনুষ্ঠানে তার সময়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সাফল্যের চিত্র তুলে ধরলেও ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ-সংক্রান্ত কোনো প্রশ্নের জবাব দেবেন না বলে জানিয়ে দেন তারানা হালিম।
মোবাইল ফোন গ্রাহকের সংখ্যা, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট, সাবমেরিন ক্যাবল, কলড্রপের কল ফেরত, বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম রেজিস্ট্রেশন, মোবাইল নম্বর পোর্টাবিলিটি (এমএনপি), টেলিটকসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন তারানা।
তিনি বলেন, ‘এ (সাফল্য) বিষয়গুলো তুলে ধরলাম এ কারণে যে, এ কাজগুলো আমি একা করিনি। টেলিকমে সাফল্য যা হয়েছে, সব সাফল্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। টেলিকমে যে সাফল্য আমার হাত ধরে হয়েছে তা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়ন করেছি মাত্র।’
‘তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা (সজীব ওয়াজেদ জয়) আমাদের পরিচালিত করেছেন, বুদ্ধি দিয়েছেন। টেলিকমের কর্মকর্তা কর্মচারীরাও অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। দুই বছর তিন মাসের সাফল্য আমার সাফল্য হিসেবে দেখবেন না। এটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের সাফল্য। এটি নৌকা মার্কার সাফল্য। আমি কর্মী হিসেবে কাজ করে গেছি। যদি কোনো ব্যর্থতা থাকে তা তারানা হলিমের।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সততার সঙ্গে কাজ করে গেছি। এত সততা ও দক্ষতার সঙ্গে কাজ করতে পেরেছি কারণ প্রধানমন্ত্রীর মতো দক্ষ দিক-নির্দেশক পেয়েছি। বিগত মিনিস্ট্রিতে সাফল্যের যে ধারাবাহিকতা রাখতে পেরেছিলাম তা এখানেও রক্ষা করব। সুন্দর কাজ আরও বেশি বেশি উপহার দেব।’
‘আগের মন্ত্রণালয় সম্পর্কে কোনো প্রশ্ন না করলে আমি খুশি হব কারণ সেই মন্ত্রণালয় থেকে আমি আরেকটি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব ভার গ্রহণ করেছি। জবাবদিহিতার জায়গা- আমি কী কাজ করেছি, এর বাইরে কিছু কথা বলা শোভন হবে বলে আমার মনে হয় না।’
তারানা হালিম বলেন, ‘ভালো কাজ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী যখন যেখানে দেবেন সেখানেই কাজ করব, সততার সঙ্গে কাজ করব, দক্ষতার সঙ্গে কাজ করব। কথা কম বলে কাজ বেশি করব। এটাই কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শিখিয়েছেন।’
‘আমি দুর্নীতির সঙ্গে কখনও আপস করিনি, করব না, করা সম্ভব নয়। এটা প্রধানমন্ত্রী শিখিয়েছেন। আমরা বঙ্গবন্ধুর সৈনিক হিসেবে দুর্নীতির সঙ্গে কখনও সমঝোতা হতে পারে না। এ ধারা এখানেও থাকবে।’
তারানা হালিম বলেন, ‘এ মন্ত্রণালয়ে যিনি মন্ত্রী আছেন তিনি আমাকে দিক-নির্দেশনা দেবেন, আমরা একসঙ্গে একটি পরিবার যেভাবে কাজ করে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সবাইকে নিয়ে একটি পরিবারের মতো কাজ করব। তবে কোনো পরিবারে যদি দুর্নীতিগ্রস্ত সদস্য থাকে তবে সেখানে এমন কাউকে মেনে নেয়ারও কিন্ত কারণ নেই। এটা ইনু ভাইও অনেকবার বলেছেন আমিও বলছি।’
দফতর বদল হওয়ার পর হতাশ ব্যক্ত করে দেয়া বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে তারানা হালিম বলেন, ‘আস্থার একটি জায়গা থেকে নির্বাচনের আগে ইনু ভাইয়ের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করব। এজন্য একটি চ্যালেঞ্জিং মিনিস্ট্রি থেকে আরেকটি চ্যালেঞ্জিং মিনিস্ট্রিতে আমাকে দিয়েছে। আমি কোনোভাবেই মনে করি না এখানে অন্য কিছু ভাবার কোনো সুযোগ আছে। কাজ করলে সব জায়গাতেই কাজ করা যায়।’
মন্ত্রণালয় বদলের কারণে মানুষ হিসেবে আপনার লেগেছে- এমন বক্তব্যও সংবাদ মাধ্যমে এসেছে। এ বিষয়ে তারানা হালিম বলেন, ‘একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেছিলেন বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট নিয়ে শুরু থেকে কাজ করলেন এটি উৎক্ষেপণের সময় আপনার কেমন লাগবে। তখন আমি ওই কথা বলেছিলাম। সেটাকে মিনিস্ট্রি বদলের সঙ্গে মেলানো হয়েছে।’
এ সময় তথ্য মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দিন আহমেদ ও প্রধান তথ্য কর্মকর্তা কামরুন নাহার উপস্থিত ছিলেন।
আরএমএম/এনএফ/জেএইচ/পিআর/আইআই