নোয়াখালী খাল আর নোয়াখালীর দুঃখ থাকবে না : প্রধানমন্ত্রী

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৬:০৫ পিএম, ০৪ জানুয়ারি ২০১৮

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, হোয়াংহো নদী আর যেমন চীনের দুঃখ না। আমি চাই নোয়াখালী খালও আর নোয়াখালীর দুঃখ হয়ে থাকবে না। নোয়াখালীর খাল পুনরায় খনন ও নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়নের ফলে জলাবদ্ধতা নিরসনের পাশাপাশি সন্দ্বীপ চ্যানেলের ভাঙনরোধ করা সম্ভব হবে বলে আমি আশা করি। এছাড়া এই প্রকল্প ভূমি উন্নয়ন, কর্মসংস্থান এবং আর্থসামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।

দক্ষিণের জেলা নোয়াখালীর মানুষকে দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতার সঙ্কট থেকে মুক্তি দিতে নোয়াখালী খালসহ ২৩টি খাল সংস্কার ও পুনরায় খনন প্রকল্পের উদ্বোধনের সময় প্রদানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন তিনি।

ভিডিও কনফারেন্সের ঢাকা প্রান্তে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন নোয়াখালীর এমপি সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়া নতুন মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু ও সেনাপ্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান। আর নোয়াখালী প্রান্তে জেলা প্রশাসক মাহবুব আলম তালুকদারসহ স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

৩২৪ কোটি ৯৮ লাখ টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্পের আওতায় জলাবদ্ধতা নিরসন, বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও নিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নয়নে নোয়াখালী খাল এবং জেলার ২৩টি খালের পুনরায় খনন করা হবে। সেই সঙ্গে ১৬০ বর্গ কিলোমিটার এলাকার পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন করা হবে। এ প্রকল্পের আওতায় ১৮২ কিলোমিটার খাল পুনরায় খনন, বামনি নদীতে ড্রেজিং, স্লুইস গেইট, ক্লোজার ও রেগুলেটর নির্মাণ এবং ১০ কিলোমিটার নদী তীর সংরক্ষণ করা হবে।

২০১৬ সালের নভেম্বরে একনেকের অনুমোদন পাওয়া এ প্রকল্পের বাস্তবায়ন হবে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড ও সেনাবাহিনী যৌথভাবে প্রকল্পের বাস্তবায়ন করবে।

প্রকল্পটি প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধনের পরপরই কবিরহাট উপজেলার ধান শালিক এলাকায় খাল পুনঃখনন কাজ শুরু হয়েছে। ২০২১ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা থাকলেও তার আগেই তা সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, নোয়াখালী অনেক পুরনো জেলা হলেও সবসময় ‘একটু অবহেলিত’ থেকে গেছে। উপকূলের কাছাকাছি বলে প্রকৃতির সঙ্গে যুদ্ধ করে এ জেলার মানুষকে বাঁচতে হয়। এ কারণে তারা কষ্টসহিষ্ণু। তবে এ এলাকার মানুষকে যেন আর কষ্ট করতে না হয় সে জন্যই এ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এখন থেকে এ অঞ্চলে যেমন মাছ উৎপাদন হবে, তেমনি ধানসহ অন্যান্য খাদ্যশস্যও উৎপাদন হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখনই আমি নোয়াখালী গিয়েছি, তখনই আমি শুনেছি নোয়াখালী খালের কথা। এই খালটা কেটে দিলে জলাবদ্ধতা দূর হবে। এটা আমাদের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিল, আমরা খালটা করে দেব।

১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর নোয়াখালী খাল পুনরায় খননে সমীক্ষা শুরু হলেও পরের মেয়াদে ক্ষমতায় আসা বিএনপি-জামায়াত সরকার যে তা আর এগিয়ে নেয়নি, সে কথাও বলেন প্রধানমন্ত্রী।

এফএইচএস/জেডএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।