শার্শার নারীরা নকশি কাজ করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন


প্রকাশিত: ১২:০৬ পিএম, ১৪ জুলাই ২০১৫

যশোরের শার্শার বিভিন্ন গ্রামের নারীদের হাতে তৈরি নকশী পাঞ্জাবি, শিশু পোশাক ও মেয়েদের ব্যাগ এখন শোভা পাচ্ছে ঢাকার বিভিন্ন শপিংমলে। এসব নারীদের হাতের স্পর্শ আর ভালবাসায় তৈরি পোশাক ও ব্যাগে অনেকের ঈদ হয়ে উঠবে প্রাণবন্ত। এবারের ঈদে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় এক লাখ কারুকার্য খঁচিত নকশী পাঞ্জাবী, শিশু পোশাক ও নারীদের ব্যাগ ঢাকায় পাঠানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

শার্শা উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদফতরের কর্মকর্তা কানিজ তানিয়া জাগো নিউজকে জানান, যশোরের শার্শার নাভারনে ‘আতিকা কুইন ফ্যাশন ওয়ার্ল্ড’ এর মাধ্যমেই  উপ-জেলার ৬শ নারী সারা বছরই সুই সুতার কাজে ব্যস্ত থাকেন। সমাজের অসহায় ওই সব নারী আজ স্বাবলম্বী। তাদের হাতের তৈরি ‘পুথির ব্যাগ’ সমাজের প্রতিষ্ঠিত নারীদের হাতেও শোভা পাচ্ছে।

শুরুটা হয়েছিল চার বছর আগে ‘আতিকা কুইন ফ্যাশন ওয়ার্ল্ড এর মাধ্যমে। শার্শা উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদফতরের সহযোগিতার মাধ্যমে গ্রামীণ নারীদের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে পাঞ্জাবির গায়ে সুই-সুতা দিয়ে নকশা তোলার কাজের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। নিজস্ব বিক্রয় কেন্দ্রের মাধ্যমে হাতে কাজ করা ওই পাঞ্জাবির ব্যাপক চাহিদা সৃষ্টি হয়। ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে এর জনপ্রিয়তা ও ব্যাপকতা। ওই নারীরা পাঞ্জাবির পাশাপাশি শাড়ি, শিশুদের বিভিন্ন পোশাকের নতুন নতুন ডিজাইন, অ্যাম্ব্রয়ডারির মাধ্যমে নকশা করার কাজ করেন। পুঁথি দিয়ে তৈরি ব্যাগের অনেকাংশই আমাদের নারীরা তৈরি করে থাকেন বলে জানান, ‘আতিকা কুইন ফ্যাশন ওয়াল্ড’ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুকশানা পারভীন।

তিনি বলেন, সারাদিনের ঘরের কাজ শেষে অবসর সময়ে বাড়তি আয়ের আশায় এখানকার নারীরা হাতে তুলে নিয়েছিলেন সুই-সুতা। ব্যক্তিগত, সম্মিলিতভাবে আবার কোথাও কোথাও বিভিন্ন হ্যান্ডিক্রাফটসের মাধ্যমে শুরু করে পাঞ্জাবির ভরাট কাজসহ ব্লক, বাটিক ও অন্যান্য কাপড়ের কাজ। এভাবেই চার বছরেই নকশীর কাজে নীরব বিপ্লব ঘটে গেছে পুরো এলাকায়।

উপজেলার উলাশী গ্রামের গৃহিণী তানজিলা খাতুন জাগো নিউজকে জানান, চার বছর ধরে সংসারের কাজের ফাঁকে ফাঁকে তিনি পাঞ্জাবি, শিশু পোশাকের সেলাইয়ের কাজ করেন। ডিজাইন অনুপাতে পাঞ্জাবির কাজের মজুরি দেয়া হয়। একটি পাঞ্জাবির কাজ করে পাওয়া যায় ১০০ থেকে ১৫০ টাকা।

এইচ এসসি পাশের পর বিয়ে করে স্বামীর সংসারে এসে কঠোর পরিশ্রম করেও যখন সুখ খুঁজে পাচ্ছিলাম না ঠিক তখনই এই প্রতিষ্ঠান আমাদের সংসারে সুখ এনে দিয়েছে বলে জানান, উত্তর বুরুজবাগান গ্রামের গৃহকর্মী রেহেনা আক্তার।

রুখশানা পারভীন জানান, বাবার সহযোগিতা এবং স্বামীর অনুপ্রেরণায় সীমান্তবর্তী শার্শা উপজেলার অবহেলিত বঞ্চিত, স্বামী পরিত্যক্তা, প্রতিবন্ধি নারীদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদের কর্মক্ষম করে তুলেছি। সরকারি সহযোগিতা পেলে প্রতিষ্ঠানটিকে আরো বড় করতে পারতাম। দেশের বিভিন্ন শোরুমগুলোতে শার্শার পাঞ্জাবি বিক্রি হয়। ঈদসহ বিভিন্ন উৎসবে এখান থেকে প্রায় লাখ খানেক পাঞ্জাবি ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় যায়।

এমজেড/আরআই

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।