বেতন বৈষম্য নিরসনে প্রাথমিক শিক্ষকদের আমরণ অনশন

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:৫০ এএম, ২৩ ডিসেম্বর ২০১৭

প্রধান শিক্ষকদের এক ধাপ নিচে জাতীয় বেতন স্কেলের ১১তম গ্রেডে বেতনের দাবিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অামরণ অনশন শুরু করেছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা।

শনিবার সকাল ১০টায় ‘বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক মহাজোটের’ উদ্যাগে এই অনশন কর্মসূচি শুরু হয়। এতে মহাজোটের অধীনে থাকা ১০টি সংগঠনের শিক্ষকরা অংশ নিয়েছেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার শিক্ষক এসেছেন এক দফা দাবি আদায়ের অনশন কর্মসূচিতে। শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে ধীরে ধীরে শিক্ষকদের সংখ্যা বাড়ছে।

জোটের নেতারা দাবি আদায়ে বক্তব্য দিচ্ছেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা অনশন চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন। তারা বলেন, এখন থেকে বিজয় না নিয়ে আমরা ফিরে যাব না। শিক্ষকদের বক্তব্য ও স্লোগানে মুখর শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ। মাঝে মাঝে সঙ্গীতও পরিবেশন করা হচ্ছে।

media

অনশনকারী শিক্ষকরা জানিয়েছেন, আগের বেতন স্কেলগুলোতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের এক ধাপ নিচে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকরা বেতন পেতেন। কিন্তু ২০১৫ সালের বেতন কাঠামোতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকদের সঙ্গে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের ব্যবধান তিন ধাপ। এখন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকরা ১৪তম গ্রেডে (মূল বেতন ১০ হাজার ২০০) বেতন পাচ্ছেন। আর প্রধান শিক্ষকরা পাচ্ছেন ১০তম গ্রেডে (মূল বেতন ১৬ হাজার টাকা)। সহকারী শিক্ষকরা এই বৈষম্য নিরসনে প্রধান শিক্ষকদের এক ধাপ নিতে ১১তম গ্রেডে (১২ হাজার ৫০০) বেতন চান।

সহকারী শিক্ষক ফ্রন্টের সভাপতি ইউএস খালেদা আক্তার বলেন, ‘আমরা বৈষম্যের শিক্ষার। আমরা সংবাদ সম্মেলনে আমাদের দাবির কথা জানিয়েছি। আমাদের দাবি পূরণের আশ্বাস দেয়া হয়েছিল, কিন্তু তা পূরণ করা হয়নি। দাবি পূরণ করা ছাড়া আমরা শহীদ মিনার ছেড়ে যাব না।’

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে খালেদা বলেন, ‘এটা সরকার-বিরোধী আন্দোলন নয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমরা মর্যাদা নিয়ে ক্লাসে ফিরে যেতে চাই। আপনার একটা আশ্বাসই পারে আমাদের সব সমস্যা সমাধান করতে।’

সহকারী শিক্ষক ফ্রন্টের সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম ফেরদৌসী জাগো নিউজকে বলেন, ‘দেশের ৬৪টি জেলা থেকেই শিক্ষকরা এসেছেন। অনেকে পথে আছেন। কর্মসূচিতে আমরা এক থেকে দেড় লাখ শিক্ষকের সমাবেশ ঘটাব।’

media

অনশন কর্মসূচিতে সহকারী শিক্ষক সমাজ, সহকারী শিক্ষক সমিতি, সহকারী শিক্ষক ফাউন্ডেশন, সহকারী শিক্ষক সমাজ-২, সরকারি সহকারী শিক্ষক সমিতি, সহকারি শিক্ষক সমাজ-৩, সহকারী শিক্ষক সমিতি-২, সহকারী শিক্ষক ফোরাম, সহকারী শিক্ষক ফাউন্ডেশন ও বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির ব্যানারে শিক্ষকরা অংশ নিয়েছেন। এছাড়া প্রধান শিক্ষক সমিতির চারটি সংগঠন এই কর্মসূচিতে ঐক্য প্রকাশ করেছে।

শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে শিক্ষকরা পাটি, পত্রিকা বিছিয়ে বসে রয়েছেন। পুরুষদের সঙ্গে দূর-দূরান্ত থেকে নারীও এসেছেন আমরণ কর্মসূচিতে। তাদের সঙ্গে রয়েছে কাপড়-চোপড়ের ব্যাগ।

অনশনে অংশ নেয়া শিক্ষকরা জানিয়েছেন, দাবি পূরণে এর আগে উপজেলায় নির্বাহী কর্মকর্তা ও সংসদ সদস্যদের কাছে স্মারকলিপি দেয়া হয়েছে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার, জেলা প্রশাসক, বিভাগীয় পর্যায়ে উপ-পরিচালকদের (প্রাথমিক শিক্ষা) কাছে স্মারকলিপি দেয়া হয়েছে। এছাড়া দাবি আদায়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক, প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিবের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। কিন্তু দাবি পূরণে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

আরএমএম/জেএ/এএস/বিএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।