মরদেহ নিতে ঢাকা আসছেন বিনিশার ভাই
বাড়ি যাবে বিনিশা শাহ। তবে আর জীবিত নয়। প্রাণহীন নিথর দেহে। ঢাকার পাইওনিয়ার ডেন্টাল কলেজ হোস্টেলে আত্মহত্যা করা নেপালি ছাত্রী বিনিশা শাহের ভাই আসছেন আজ (বৃহস্পতিবার)। দুপুরে শাহজালাল বিমানবন্দরে তার অবতরণের কথা রয়েছে। আনুষ্ঠানিকতা শেষে মরদেহ নিয়ে দেশে ফিরবেন তিনি।
গত মঙ্গলবার বিনিশা আত্মহত্যা করেন। পাইওনিয়ার ডেন্টাল কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবি, ‘গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বিনিশা।’ পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার মোস্তাক আহমেদও তাৎক্ষণিকভাবে একই তথ্য জানিয়েছেন। তবে বিনিশার মৃত্যু নিয়ে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে মুখ খোলেনি নেপাল দূতাবাস।
আজ (বৃহস্পতিবার) বিনিশিার শেষ অ্যাসেসমেন্ট (মূল্যায়ন) পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। শুক্রবার বাড়ি ফেরার জন্য বিমানের টিকিটও বুকিং দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বাড়ি যাওয়া হলো না। তার আগেই না ফেরার দেশে চলে গেলেন ঢাকার পাইওনিয়ার ডেন্টাল কলেজের ২৩তম ব্যাচের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী নেপালি নাগরিক বিনিশা শাহ।
গতকাল (বুধবার) ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগে ময়নাতদন্ত শেষে বিনিশার মরদেহ মর্গের হিমঘরে রাখা হয়েছে। ময়নাতদন্তকারী চিকিত্সক ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে বলা যাচ্ছে তিনি আত্মহত্যা করেছেন।’ তার পরিবারের সদস্যরা আসলে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে বলে জানান পুলিশ।
বিনিশার এমন মৃত্যুতে শোক নেমে এসেছে সহপাঠীদের মাঝে। বিনিশার নেপালি সহপাঠী ও রুমমেট রোকসা জাগো নিউজকে জানান, বিনিশা আর আমি একই রুমে থাকতাম। ও (বিনিশা) উচ্ছ্বল ও হাসিখুশি মেয়ে। ওর মধ্যে কখনো আত্মহত্যার প্রবণতা ছিল না। কখনো ‘ও’ আত্মহত্যা করতে পারে তাও ভাবিনি। কী থেকে কী হলো ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না।
বিনিশার মরদেহ নিতে নেপাল থেকে বাবা-মা আসার কথা থাকলেও পাসপোর্ট জটিলতায় তারা আসতে পারছেন না বলে জানান বিনিশার স্বদেশী সহপাঠী ও একই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী সর্বাজ্ঞা।
জাগো নিউজকে তিনি বলেন, বিনিশার বড় ভাই আমার মোবাইলে কল দিয়েছিলেন। তিনি আজ (বৃহস্পতিবার) দুপুরের মধ্যে বাংলাদেশে আসবেন। দুপুরে বিমানবন্দরে নামার কথা রয়েছে। বাংলাদেশি নিয়ম-কানুন মেনে বিনিশার মরদেহ নিয়ে দেশে ফিরবেন তিনি।
এ বিষয়ে বাড্ডা জোন পুলিশের সহকারী কমিশনার (এসি) আশরাফুল ইসলাম জানান, নিহতের পরিবারের সঙ্গে নেপাল দূতাবাসের যোগাযোগ হয়েছে। আজ (বৃহস্পতিবার) নিহতের ভাই আসছেন মরদেহ নিতে।
একই তথ্য জানান ভাটারা থানার ওসি কামরুজ্জামান। তিনি বলেন, নেপাল দূতাবাসের সঙ্গে আমাদের সার্বক্ষণিক যোগাযোগ হচ্ছে। মরদেহ নেয়ার ব্যাপারে আমরা আইনগত সহযোগিতা করব।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার দুপুর আনুমানিক পৌনে ১টার দিকে টার্ম-২ পরীক্ষার চলাকালীন পরীক্ষার কক্ষ থেকে বেরিয়ে হোস্টেল কক্ষে গিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন বিনিশা মাহ। পরে তার স্বদেশী রুমমেট রোখসা কক্ষে ফিরে দেখেন রুম ভেতর থেকে বন্ধ। বিকল্প চাবি দিয়ে দরজা খুলে বিনিশাকে রশিতে ঝুলতে দেখেন।
খবর পেয়ে দুপুর পৌনে ২টার দিকে ভাটারা থানা পুলিশ পাইওনিয়ার ডেন্টাল কলেজের হোস্টেল রুম থেকে বিনিশার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে। রাতেই বিনিশার মৃত্যুর ঘটনায় ভাটারা থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়।
জেইউ/আরএস/পিআর