ফুল পতাকা বেচে দ্বিগুণ লাভের আশা তাদের

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৮:০৭ এএম, ১৬ ডিসেম্বর ২০১৭

‘তাড়াতাড়ি কইরা ঝাড়ু দে, পানি ছিটা, ফুলের ডাটা ভাইঙ্গা রেডি কর। দেরি করলে এহানেও জায়গা দখল অইয়া যাইবো।’ শনিবার সকাল সোয়া ৮টার দিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ভেতরে একটি গাছের নীচে দাঁড়িয়ে এক তরুণীকে উদ্দেশ্য তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা অন্য দুই তরুণীকে এমন কথা বলতে শোনা যায়।

তরুণীদের পাশে আনুমানিক দেড় বছরের একটি ছেলে শিশু ও পাঁচ ছয় বছরের একটি মেয়ে শিশু দাঁড়িয়ে। এ সময় তিন তরুণীকে দ্রুত প্লাস্টিক বিছিয়ে ঝাড়ু দিয়ে গাছের পাতা পরিষ্কার করে গোলাপ, রজনীগন্ধা ও অর্কিড ফুল সাজাতে দেখা যায়। একজন আবার বালতি নিয়ে অদূরে স্বাধীনতা স্তম্ভ সংলগ্ন লেক থেকে পানি এনে ছিটাতে থাকে।

flag-3

কামরাঙ্গীরচরের বাসিন্দা তিন তরুণী কাক ডাকা ভোরে শাহবাগের ফুলের আড়ত থেকে চার হাজার টাকার ফুল কিনে এনেছে। এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে লাভলী নামের এক তরুণী জানায়, বিজয় দিবসের এ দিনে দুপুরের পর থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মানুষের ঢল নামে। সারা বছর ফুল না কিনলেও অনেকেই এ দিন ফুল কিনে ।

সে জানায়, দ্বিগুণ লাভের আশায় চার হাজার টাকা বিনিয়োগ করেছে। গত বছর সারা দিন দুই তিন জনের খাওয়া ও হাত খরচ বাদ দিয়ে দ্বিগুণেরও বেশি টাকা লাভ হয়েছে। ফুলের ভাল বেচাকেনা, কোন জায়গায় ফুল লইয়া বইছেন তার ওপরও অনেকাংশে লাভ নির্ভর করে। তাই গাছের নীচে ছায়ায় বসতে সাত সকালে উদ্যানে এসেছি।

flag-3

শুধু লাভলী একাই নন, তার মতো অসংখ্য লাভলী আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্পটে বিভিন্ন ফুল সাজিয়ে বসেছেন। টিএসসির বিপরীত দিকে মিলন চত্বরের সামনে ফুল সাজাচ্ছিলেন আনোয়ারা। সে জানায়, বিজয় দিবসের দিনে কাস্টমাররা দামাদামি কম করে। একটা গোলাপ ফুল অন্য দিন পাঁচ টাকা দাম না বললেও আজ ২০ টাকায় একটা গোলাপ কিনতে কুণ্ঠাবোধ করছেন না।

শরীয়তপুরের বাসিন্দা দিনমজুর বাবুল। টিএসসির সামনে ছোট-বড় পতাকা হাতে দাঁড়িয়ে আছেন। তিনি জানান, বাড়িতে দিনমজুরের কাজ করলেও প্রতি বছর বিজয় দিবসে সপ্তাহ খানেকের জন্য ঢাকায় চলে আসেন। ঢাকা শহরে ঘুরে ঘুরে পতাকা বিক্রি করেন। পতাকা বিক্রি করে দ্বিগুণ লাভ করেন।

এমইউ/এআরএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।