৭ খুনের সঠিক বিচার নিয়ে অনিশ্চতায় নজরুলের স্ত্রী
নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সেভেন মার্ডার মামলায় এজাহার নামীয় আসামিদের চার্জশিটে নাম বাদ দেয়ার বিরুদ্ধে না রাজি আবেদন খারিজ করায় আদালতের প্রতি গভীর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নিহত কাউন্সিলর নজরুল ইসলামের স্ত্রী ও মামলার বাদী সেলিনা ইসলাম বিউটি। তিনি তার স্বামীসহ ৭ খুনের ঘটনায় সঠিক বিচার পাওয়া নিয়েও অনিশ্চতার আশঙ্কা করছেন।
বুধবার সকালে চার্জশিটের বিপক্ষে না রাজি আবেদন শুনানি শেষে আদালত হতে বের হয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আক্ষেপ করে তিনি এসব কথা বলেন।
বিউটি সাংবাদিকদের জানান, সামান্য একটি মামলায় বাদী পক্ষ না রাজি দিলে আদালত বিষয়টি আমলে নেন। কিন্তু নারায়ণগঞ্জের আলোচিত ৭ খুনের মামলায় এজাহার নামীয় আসামিদের চার্জশিট থেকে নাম বাদ দেয়ার বিপক্ষে না রাজি আবেদন করলে বিজ্ঞ আদালত বিষয়টি আমলে না নিয়ে আবেদন না মঞ্জুর করে খারিজ করে দিয়েছেন।
তিনি আরো বলেন, নরসিংদীর পৌরসভার মেয়র লোকমান হত্যা মামলায় ১২/১৩ বার না রাজি দেয়। কিন্তু আমিতো মাত্র একবার না রাজি দিয়েছি। প্রথমবার না রাজী দেয়ার পর বিজ্ঞ আদালত কেন আমলে নিলেন না বুঝতে পারছি না। তাহলে কি এটা প্রমাণ করে নিজের স্বামীসহ ৭ হত্যার বিচার সঠিকভাবে পাবো কিনা এ নিয়ে অনিশ্চতা দেখা দিয়েছে?
তিনি বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। এ মামলায় ৬জনের নাম উল্লেখ করা হয়। অন্যদিকে অ্যাডভোকেট চন্দন সরকার ও গাড়ি চালক ইব্রাহিমকে অপহরণ ও হত্যা মামলার বাদী ছিলেন চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল। এ মামলায় আসামি অজ্ঞাত করা হয়েছিল।
বিউটি আরো বলেন, চার্জশিট থেকে নাম বাদ দেয়া ইকবাল, রাজু ক্ষমতার প্রভাবে কোমরে পিস্তল রেখে তারা এখন এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন এবং উচ্চস্বরে বলছেন দেড় কোটি টাকার বিনিময়ে মামলা থেকে রেহাই পেয়েছি। হত্যা মামলায় যাদেরকে আসামি করা হলো তারাই যদি আমাদের হুঙ্কার দেন তাহলে আইনের প্রতি আমরা কিভাবে শ্রদ্ধা করি?
তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি তার বাবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যার বিচার বাংলার মাটিতে করতে পারেন তাহলে নারায়ণগঞ্জের ৭ খুনের বিচার কেন তিনি করবেন না? আমরাতো এই দেশের নাগরিক। আমরাতো শেখ হাসিনা সরকারের কাছে বিচার প্রার্থনা করতে পারি।
বিউটি আরো বলেন, নুর হোসেনের সঙ্গে যারা ৭ খুনের পরিকল্পনায় ছিলেন কার ইশারায় চার্জশিটে তাদের নাম বাদ দিয়েছে এটা এখন আমাদের প্রশ্ন। আর কেন এবং কত টাকার বিনিময়ে ডিবি পুলিশ তাদের নাম বাদ দিলো তা আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চাই।
প্রসঙ্গত ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের সামন থেকে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র-২ নজরুল ইসলাম, তার বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন, নজরুলের গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম, আইনজীবী চন্দন কুমার সরকার এবং তার ব্যক্তিগত গাড়িচালক ইব্রাহিম অপহৃত হন। ৩০ এপ্রিল বিকেলে শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ৬ জন এবং পহেলা মে সকালে একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
মো.শাহাদাৎ হোসেন/এমজেড/আরআই