জাবির আকাশে উড়লো কোয়াডকপ্টার


প্রকাশিত: ০৫:০৪ এএম, ০৬ জুলাই ২০১৫

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইটি বিভাগে পিএমআইটি প্রোগ্রামের তিন শিক্ষার্থী তৈরি করেছে কোয়াডকপ্টার (এক ধরনের মনুষ্যবিহীন আকাশযান)। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ই প্রথম এ কৃতিত্ব অর্জন করেছে। এরই মধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে ড্রোনটি আকাশে উড়ানো হয়েছে।

স্নাতকোত্তর পর্যায়ের প্রকল্প হিসেবে এই কোয়াডকপ্টারটি তৈরি করেছেন পিএমআইটি প্রোগ্রামের ছাত্র সুরাত-ই মোস্তফা, শওকত আলী এবং রফিকুল ইসলাম। প্রকল্পটি তৈরি করতে তাদের খরচ হয়েছে ৪০ হাজার টাকা।  

উদ্ভাবকরা জানান, মনুষ্যবিহীন এ আকাশযান উড্ডয়নের জন্য আলাদা ৪টি পাখা রয়েছে। এটি হেলিকপ্টারের মতো পাখার ঘূর্ণনের সাহায্যে চলে। দেশীয় বাজারে পাওয়া যন্ত্রাংশ দিয়ে তৈরি করা কাঠামো এবং মাইট্রো কন্ট্রোলার প্রোগ্রামিংয়ের মাধ্যমে এ কাজটি সমাধান করা হয়েছে। লিথিয়াম সেল ব্যাটারিতে কোয়াডকপ্টার ড্রোনটি একবার পূর্ণ চার্জে প্রায় ২০ মিনিট পর্যন্ত চলতে পারে। ১ কেজির কিছু বেশি ওজনের ড্রোনটি নিজের ওজন ছাড়াও ২ কেজি ওজন বহনে করতে পারে। বর্তমান প্রযুক্তিতে এটি ৫০মিটার দূর থেকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।



আরো উন্নত প্রযুক্তি যুক্ত করা হলে এটি ২ থেকে ৩ কিলোমিটার দূর থেকেও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। দেশীয় প্রযুক্তিতে উদ্ভাবিত এ ড্রোনটি প্রকৃত সময়ে ভৌগলিক অবস্থানসহ দূরবর্তী নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রে সেন্সরের তথ্য পাঠাতে সক্ষম।

এই প্রকল্পের তত্ত্বাবধায়ন করেছেন আইআইটি প্রভাষক জামশেদ ইকবাল চৌধুরী এবং সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন আইআইটি সহকারী অধ্যাপক এম শামীম এবং শামীম আল মামুন। এই কোয়াডকপ্টার এক ধরনের মনুষ্যবিহীন আকাশযান যাতে উড্ডয়নের জন্য চারটি আলাদা পাখা আছে।  

এই কোয়াডকপ্টারটির সাহায্যে প্রকৃত সময়ে ভৌগলিক অবস্থানসহ দূরবর্তী নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রে সেন্সরের তথ্য যেমন, তাপমাত্রা, বায়ুচাপ, আর্দ্রতা ইত্যাদি বিভিন্ন জায়গা এবং উচ্চতা থেকে সংগ্রহ করতে পারে। শুধু তাই নয় এর মাধ্যমে ভিডিও,স্থিরচিত্র ও পর্যবেক্ষণ, ঝুঁকিপূর্ণ স্থান থেকে তথ্য সংগ্রহ করা সম্ভব।  


 
এ বিষয়ে আইআইটি সহকারী অধ্যাপক এম শামীম জাগো নিউজকে বলেন, নতুন কিছু করার ভাবনা থেকে এবং এই যুগোপযোগী প্রযুক্তিকে দেশীয় কাজে লাগানোর অনুপ্রেরণা থেকেই জাবির তিন ছাত্র এই কোয়াডকপ্টারটি তৈরি করেছে। যদিও এই প্রকল্পটি কোনো নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে ব্যবহারের জন্য তৈরি করা হয়নি। ভবিষ্যতে তারা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বেসামরিক কাজে এরূপ কোয়াডকপ্টার ব্যবহারের স্বপ্ন দেখে।  

তত্ত্বাবধায়ক আইআইটি প্রভাষক জামশেদ ইকবাল চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, দেশীয় বাজারের যন্ত্রাংশ দিয়ে তৈরি করা কাঠামো এবং মাইক্রো কন্ট্রোলারের প্রোগ্রামিংয়ের মাধ্যমে এই কাজটি সমাধান করা হয়েছে। আমাদের দেশে এখনো এই প্রযুক্তির চর্চা এবং উন্নয়ন সেভাবে শুরু হয়নি। এরূপ প্রযুক্তির ব্যবহারের প্রধান প্রতিবন্ধকতা হচ্ছে উদ্ভাবনের খরচ এবং যন্ত্রাংশের স্বল্পতা।

হাফিজুর রহমান/এমজেড/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।