মেহেরপুরের শিশু পার্কে আর যায় না কোনো শিশু
পৌর কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় বিনোদন বঞ্চিত হচ্ছেন মেহেরপুরের মানুষ। উৎসবকে ঘিরে বিনোদন প্রিয় মানুষের ঢল নামা সেই গড় পুকুর শিশু পার্ক এখন জনমানব শূন্য। পার্কস্থলে মুরগি ও মাছের আড়ৎ স্থাপন এবং পুকুর পাড় সংস্কার না করায় পার্কের প্রতি মানুষের আর আকর্ষণ নেই। অযত্ন আর অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে বিপুল অর্থে নির্মিত বিনোদন সরঞ্জামগুলো।
মেহেরপুর পৌর কলেজের ভূগোল ও পরিবেশ বিদ্যা বিভাগের সহকারি অধ্যাপক মাসুদ রেজা জাগো নিউজকে বলেন, মেহেরপুর পৌরসভা ২০০৫-০৬ অর্থ বছরে ২৭ লক্ষ টাকা ব্যয়ে শহরের বড় বাজারের পাশে অবস্থিত পৌর গড় পুকুরকে ঘিরে তৈরি করে মিনি শিশু পার্ক। দৃষ্টি নন্দন নানা উপকরণ দিয়ে গড় পুকুরের চারপাশ শোভামণ্ডিত করা হয়। শিশুদের বিনোদনের জন্য পুকুরের দক্ষিণ পার্শ্বে তৈরি করা হয় নাগরদোলা। উপরে ক্যাবল কার আর পানিতে দেয়া হয় প্যাডেল চালিত স্পিড বোট। যা শিশুসহ সব বয়সী মানুষকে আকর্ষণ করেছিল।
জেলায় কোনো বিনোদন কেন্দ্র না থাকায় গড় পুকুরের মিনি পার্কে ঈদ ও পহেলা বৈশাখসহ বিভিন্ন উৎসবের দিনে থাকতো দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়। দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসতো শিশু ও বয়ষ্করা। কিন্তু নির্মাণের দুই বছর যেতে না যেতেই কয়েকজন শিশু ক্যাবল কারে উঠে আটকে যায়। পরে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা দুই ঘণ্টা চেষ্টা করে ক্যাবল কারে আটকে পড়া শিশুদের উদ্ধার করে। বিনোদনের পরিবর্তে ক্যাবল কার দর্শনার্থীদের কাছে এক ভীতিকর বাহন হিসেবে পরিচিতি পায়। দুই বার এ ঘটনা ঘটায় ২০০৮ সালের শেষের দিকে বন্ধ হয়ে যায় পার্কটি। পার্কটি চালু করতে পৌর কর্তৃপক্ষের মাঝে দেখা দেয় অনিহা।
তখন থেকে অযত্ন আর অবহেলায় নষ্ট হতে থাকে পার্কের সব মূল্যবান সম্পদ। এছাড়াও পার্ক তৈরি করার পর পরই গড় পুকুরের পার্শ্বে তৈরি করা হয় মাছের আড়ৎ এবং মুরগি বিক্রির স্থান। যা গড় পুকুরের চারপাশে নোংরা, দুর্গন্ধ ও জলাবদ্ধতার সৃষ্টি করে। ফলে নষ্ট হয়ে যায় শিশু পার্কের দৃষ্টিনন্দন সৌন্দর্য।
মেহেরপুর গাংনী ডিগ্রি কলেজের এনামুল আযিম বকুল জাগো নিউজকে বলেন, শুধু শিশুদের বিনোদন নয় বয়ষ্কদের সকালে হাঁটা ও ব্যায়াম করার স্থান হিসেবে উপযুক্ত স্থান হিসেবে পরিচিতি পায় পার্কটি। বিভিন্ন উৎসবে আসা দর্শনার্থী কিংবা বিনোদন প্রত্যাশীদের কাছ থেকে আয় হতে থাকে বিপুল পরিমাণ অর্থ।
শিক্ষক রাহিনুর জামান পলেন জাগো নিউজকে জানান, পার্কটি নির্মাণে ক্রটি এবং আশপাশে মাছ ও মুরগির আড়ৎ স্থাপন হওয়ায় পার্কটি বন্ধ হয়েছে। পার্কটি বন্ধ হওয়ায় হতাশা দেখা দিয়েছে শিশুদের মাঝেও।
মেহেরপুর পৌরসভার মেয়র মোতাচ্ছিম বিল্লাহ মতু জাগো নিউজকে জানান, গড় পুকুরের চারপাশের পরিবেশ দূষণ ও পরিকল্পনার অভাবের বিষয়টি শিকার করে পৌর মেয়র বলেন পুকুরের পাশের মাছের আড়ৎ ও মুরগির হাট সরিয়ে আবারো পার্কটি খুব শীঘ্রই চালু করা হবে।
এমজেড/পিআর