ব্যতিক্রমী সুন্দরী প্রতিযোগিতা (দেখুন ছবিতে)


প্রকাশিত: ০৪:১০ পিএম, ০৩ জুলাই ২০১৫

মাথায় পরিহিত স্কার্ফ না খোলার জন্য ইন্দোনেশিয়ার টেলিভিশন উপস্থাপিকা ইকা শান্তিকে তার টেলিভিশন চ্যানেলে চাকরি হারাতে হয়েছিল। এরপর তিনি থেমে থাকেননি। মুসলিম সংস্কৃতি ও নারীদের অধিকার বিশ্বব্যাপী প্রতিষ্ঠা করার জন্য ২০১১ সালে তিনি ‘মিস মুসলিমা বিশ্ব প্রতিযোগিতা’ চালু করেন। ২০১৪ সালে ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় তিনি ‘বিশ্ব সুন্দরী প্রতিযোগিতায় মুসলিম নারী’ শিরোনামে ব্যতিক্রমী এক প্রতিযোগিতার আয়োজন করেন।



এই প্রতিযোগিতা কাভার করতে যাওয়া আলোকচিত্রী জ্যাকস বলেন, মুসলিম নারীদের নিয়ে এই প্রতিযোগিতা ছিল ভিন্ন ধরনের এবং অত্যন্ত মজার। তিনি আরো বলেন, পশ্চিমা সংস্কৃতিতে বিশ্ব সুন্দরী প্রতিযোগিতার যেসব রীতি-নীতি আছে তার থেকে একটু ভিন্ন ছিল মুসলিম নারীদের নিয়ে এই প্রতিযোগিতা। কেননা এখানে মুসলিমদের কিছু মূল্যবোধকে বেশি প্রাধান্য দেয়া হয়েছিল। প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়া নারীরা মাথায় স্কার্ফ পড়ে এবং ইসলামি মূল্যবোধকে গুরুত্ব দিয়ে তাদের লুক নিয়ে আসে।



২০১৩ সালে মিস মুসলিমা প্রতিযোগিতায় প্রথম হওয়া ওবাবি আয়েশা আজিবলা এনডিটিভি’কে বলেন, পশ্চিমা সমাজে বিশ্ব সুন্দরী প্রতিযোগিতায় নারীরা তাদের শরীর প্রদর্শন করে থাকে। টেলিভিশন উপস্থাপিকা ইকা শান্তি বলেন, বিনোদন জগতে দিন দিন মুসলিম নারীদের সংখ্যা বাড়ছে। আমরা তাদেরকে পশ্চিমাদের কাছে রোল মডেল হিসেবে তুলে ধরেছি। এখন আর আমরা একা নই, আমাদের সঙ্গে অনেকেই আছেন।



জমকালো এই সুন্দরী প্রতিযোগিতা চলছে : বিশ্ব সুন্দরী নিয়ে পশ্চিমা ধারণার জবাবে মিস মুসলিমা প্রতিযোগিতা অনেক বাধা বিপত্তির পরও এখনো চালু আছে। জমকালো এই প্রতিযোগিতা একটি কসমেটিকস প্রতিষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষকতায় আয়োজন করা হয়। ২০১৪ সালে আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়া নারীরা মেক আপ এবং নেইল পালিশ নিয়ে থাকে। যা তাদের লুকে ভিন্নতা নিয়ে আসে।



আলোকচিত্রী জ্যাকস বলেন, মুসলিম সমাজ যেভাবে চিন্তা করে এবং এর গ্রহণযোগ্যতা বিচার করে থাকে  ঠিক সেই বিষয়টাকেই মিস মুসলিমা প্রতিযোগিতায় প্রাধান্য দেয়া হয়েছিল। আর শরীর নিয়ে মুসলিম নারীদের এই লড়াই এখনো বিদ্যমান রয়েছে।



জ্যাকস আরো বলেন, মুসলিম সমাজের ঐতিহাসিক মূল্যবোধ এবং প্রতিযোগিতায় অংগ্রহণকারীদের বাস্তব অভিজ্ঞতায় পার্থক্য রয়েছে। এছাড়া মুসলিম নারীদের নিয়ে যে এক ধরনের কাঠামোগত ধারণা রয়েছে এই প্রতিযোগিতা সেই ধারণায় পরিবর্তন আনতে চায়। প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়া নারীরা অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে কথা বলতে পারে। জ্যাকস বলেন, মিস বাংলাদেশ প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়া নারীরা তাদের দেশের মারাত্মক মাতৃমৃত্যু হার এবং নারী স্বাস্থ্য নিয়ে কথা বলে। আবার  মিস ইন্ডিয়ায় অংশ নেয়া নারীরা তাদেও দেশে নারীদের শিক্ষা ক্ষেত্রে অংশগ্রহণের কম হার নিয়ে কথা বলে।



জ্যাকস বলেন, মুসলিম নারীদের এই চিন্তা এবং চেষ্টা আমরা যেভাবে চিন্তা করি তার বিরুদ্ধে একটা লড়াই। এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়া নারীরা শিক্ষিত এবং তারা কী অর্জন করতে চায় সে সম্পর্কে তাদের পরিষ্কার ধারণা রয়েছে।



ইকা শান্তির এই উদ্যোগকে অত্যন্ত প্রশংসনীয় উল্লেখ করে জ্যাকস বলেন, (ইকা শান্তি) বিশ্বের বিভিন্ন জায়গা থেকে অংশ নেয়া নারীদের কণ্ঠস্বরে পরিণত হয়েছেন।



এসআইএস/বিএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।