ছুটির দিনেও ইসলামপুর পাইকারি মার্কেটে উপচেপড়া ভিড়

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০১:৫১ পিএম, ০৩ জুলাই ২০১৫

উত্তরার আবদুল্লাহপুরে একটি বুটিক শপের মালিক তরুণী কাজল। বছরের অন্যান্য সময় ব্যবসা নিয়ে খুব একটা ব্যস্ততা না থাকলেও ঈদকে সামনে রেখে দম ফেলার এতটুকু সময়ও নেই। উঠতি বয়সী তরুণ-তরুণীদের জন্য হাল ফ্যাশনের জামা কাপড় তৈরির জন্য রমজান মাসের প্রথম দিন থেকেই ভীষণ ব্যস্ততায় সময় কাটাতে হচ্ছে তাকে।

কাপড় কেনা থেকে শুরু করে রং নির্বাচন ও ডিজাইন অনুযায়ী কাটা, সেলাই সর্বোপরি উৎপাদনের শেষ পর্যন্ত তাকেই ভালোমন্দ দেখভাল করতে হয়। শুক্রবার সকালে উত্তরা থেকে রাজধানীর পাইকারি পোশাকের বাজারখ্যাত ইসলামপুর মার্কেটে নতুন নতুন ডিজাইনের কাপড় কিনতে এসেছিলেন তিনি।

রওনা হওয়ার আগে আজ ইসলামপুর মার্কেট খোলা থাকবে কি থাকবেনা এ নিয়ে ভীষণ দোটানায় ভুগছিলেন। কারণ ইসলামপুর মার্কেট শুক্রবার বন্ধ থাকে বলেই জানেন। কিন্তু সকাল ১১টায় মার্কেটে এসে পৌঁছে কাজল হতবাক বনে যান। রাস্তায় পা ফেলার জায়গা নেই। প্রচণ্ড যানজট। পুরো মার্কেটজুড়ে হাজার হাজার নারী, পুরুষ ও শিশুদের উপচেপড়া ভিড়।

ছোট-বড় সব দোকানে দেশি-বিদেশি থ্রি-পিস, শাড়ি, শার্ট, প্যান্ট ও পাঞ্জাবির কাপড় থরে থরে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। ক্রেতারা এক দোকান থেকে আরেক দোকান ঘুরে ঘুরে পছন্দসই কাপড় কিনে নিচ্ছেন।

সরেজমিন দেখা গেছে, প্রায় প্রতিটি দোকানে ভারতীয় বিভিন্ন হিন্দি সিরিয়াল ও অভিনেতা-অভিনেত্রীর নাম যেমন- রাশি, নন্দিনী, চোরাবালি, একা একা বলো, তুমি আসবে বলে, ঠিক যেন লাভ স্টোরি, জলনুপুর, একা একা লাগে, বিলাসী, নয়নমনি, কিরণমালা, ঝিনুকমালা, রাঙ্গাবউ, বিন্দুমালা, কটকটি, স্বপ্নপুরি ও কাজলরেখা ইত্যাদি পোশাক সাজিয়ে রাখা হয়েছে। প্রতিটি পোশাকের প্যাকেটে পোশাক পরিহিত মডেলের ছবি ও কোড নম্বর দেয়া রয়েছে।



ইসলামপুর প্লাজার ১১২ নম্বর তাহমিদ ফেব্রিকস দোকান কর্মচারী রায়হান জানান, বিভিন্ন হিন্দি সিরিয়ালের নামের এই পোশাক সম্পূর্ণ দেশীয় কাপড়ে তৈরি করা হয়েছে। ভারতীয় কাপড়ের চেয়ে এর মান কোনো অংশেই কম নয়। নানা রং ও ডিজাইনে তৈরি দেশীয় পোশাকের দামও অপেক্ষাকৃত কম।

ঈদে বিক্রি কেমন জানতে চাইলে অনেকটা হতাশার সুরে বলেন, বেচাকেনা খুব ভালো না। বর্ষাকাল ও বন্যার কারণে দেশের বিভিন্ন জেলায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। গত ঈদে পাইকারি ক্রেতারা প্রতি সপ্তাহে সর্বনিম্ন ১০ হাজার থেকে দুই লাখ টাকার মালামালের অর্ডার দিলেও এখন তা অর্ধেকে নেমে এসেছে।

তবে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ অপেক্ষাকৃত কম দামে বিভিন্ন পোশাক কিনতে আসছেন বলে জানান। আজিমপুর এলাকার গৃহবধূ সালেহা খাতুন। ইসলামপুরে অপেক্ষাকৃত কম দামে থ্রি পিস পাওয়া যায় শুনে স্বামীকে নিয়ে এসেছেন।

সালেহা খাতুন জানান, যেসব পোশাক বড় বড় বিপণি কেন্দ্রতে দেড় হাজার থেকে তিন হাজার টাকায় বিক্রি হয় সেসব পোশাক এখানে ১২শ’ থেকে দুই হাজার ৫শ’ টাকায় পাওয়া যায়। তিনি চার হাজার টাকায় তিনটি থ্রি পিস কিনেছেন বলে জানান।

আবু তাহের মিয়া। বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ অফিসার। একটি লম্বা তালিকা হাতে নিয়ে দোকানিকে বিভিন্ন রং ও ডিজাইনের শার্ট ও প্যান্ট দেখাতে বলছিলেন।

এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, ঈদের সীমিত বাজেটের মধ্যে অপেক্ষাকৃত কম দামের মধ্যে ভাই-বোনদের জন্য প্রতিবছর ইসলামপুর মার্কেট থেকেই পোশাক কিনে নিয়ে যাই।

এমইউ/বিএ/আরআই

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।