নতুন নামে নিষিদ্ধ জঙ্গিদের নাশকতার পরিকল্পনা


প্রকাশিত: ০৬:৪০ এএম, ০৩ জুলাই ২০১৫

একে অপরের সঙ্গে গোপন বৈঠকের মাধ্যমে নতুন দল গঠনের কাজ করছে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠনের সদস্যরা। দেশে বড় ধরণের নাশকতা চালানোর পরিকল্পনা তাদের রয়েছে বলে ধারণা গোয়েন্দা পুলিশের।

সম্প্রতি আনসারুল্লাহ বাংলা টিমকে জঙ্গি সংগঠন উল্লেখ করে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এরপর থেকেই নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করে জঙ্গিরা।

আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সঙ্গে যোগ দিয়েছে হরকাতুল জিহাদ (হুজি), জামায়াতুল মুজাহিদীনের বাংলাদেশ (জেএমবি), হিযবুত তাহরীর ও ইসলামিক স্টেটস (আইএস)। ভিন্ন মতাদর্শী হওয়া সত্ত্বেও নিষিদ্ধকরণের কারণে এক জোট হয়ে বড় ধরণের নাশকতার পরিকল্পনা করছে বলে ধারণা পুলিশের। যদিও বাংলাদেশে আইএসকে এখনো নিষিদ্ধ করেনি সরকার।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (ক্রাইম) কৃষ্ণ পদ রায় জানান, জুনের ৮ তারিখে ফিদা মুনতাসির সাকের নামে ইসলামিক স্টেটসের (আইএস) এক জঙ্গিকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে হিজবুত তাহরীর, আনসারউল্লাহ বাংলাটিমের সদস্যদের সঙ্গে নিজের সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করেছে। এমনকি আটকের কিছুক্ষণ আগেও আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্যদের সঙ্গে সে সভা করছিল।

তিনি বলেন, সংগঠনগুলোর গণতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থাকে উৎখাৎ ও খিলাফত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য একসঙ্গে হয়ে নাম বদলে কাজ করছে। একজোট হয়ে বড় ধরণের নাশকতারও পরিকল্পনা তাদের।

মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবির) তথ্য অনুযায়ী, নিষিদ্ধ সংগঠনের জঙ্গিরা ‘বাংলাদেশে জুনুদ আল তাওহীদ ওয়াল খিলাফাহ’ এবং ‘বাংলাদেশ জিহাদী গ্রুপ’ নামে দুটি সংগঠনের নামে নিজেদের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে।

অথচ সম্প্রতি সন্ত্রাস দমন আইনে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ২০০৫ সালে ৬৩ জেলায় সিরিজ বোমা হামলার পর জেএমবি, হুজিসহ চারটি জঙ্গি সংগঠনকেও নিষিদ্ধ করে সরকার। একই অপরাধে ২০০৯ সালে নিষিদ্ধ হয় হিজবুত তাহরীর।

নতুন নামে আসা এসব সংগঠনের সদস্য সংখ্যার বিষয়ে পুলিশ এখনো নিশ্চিত নয়। বিভিন্ন সময়ে জঙ্গিদের রিমান্ডে নেয়া এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা জাগো নিউজকে জানান, নতুন জঙ্গিরা নিউক্লিয়াস আকারে বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে রয়েছে। একেকটা নিউক্লিয়াসে আছে একজন করে নেতা।

এদিকে সংগঠন পরিচালনার জন্য আইএস, আল কায়েদার মতো জঙ্গি সংগঠন ডাকাতি, অপহরণ কিংবা বিশেষ জনগোষ্ঠীকে জিম্মি করে। তবে বাংলাদেশে ব্যাংক ডাকাতিকেই টার্গেট করছে জঙ্গিরা।

ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, সংগঠনগুলো পরিচালনার জন্য জঙ্গিরা বিভিন্ন ব্যাংক ডাকাতির পরিকল্পনা করছে। সাভারের আশুলিয়াতে বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক ডাকাতির চেষ্টা করে। রাজধানীতে বেশ কয়েকটি ব্যাংক ডাকাতির পরিকল্পনা করলেও সেগুলো নস্যাৎ করে গোয়েন্দা ও পুলিশ।

এদিকে বিমানবন্দর থেকে স্বর্ণ চোরাচালানের অর্থ জঙ্গিদের মদদে দেয়া হয় এমন কথা বলছে গোয়েন্দা সংস্থা। তবে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের মহাপরিচালক ডক্টর মইনুল খান জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা আসামীকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করি। অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদ করা পুলিশের কাজ। তবে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের এপর্যন্ত জঙ্গি অর্থায়নের সঙ্গে স্বর্ণ চোরাচালানের কোন সংশ্লিষ্টতা পাইনি।’

এআর/এআরএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।