সংসদে অর্থমন্ত্রীর সমালোচনায় এবার শিক্ষামন্ত্রী!
প্রস্তাবিত ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় মাধ্যমিক শিক্ষা নিয়ে করা সমালোচনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। তিনি বলেছেন, অর্থমন্ত্রীর বাজেট বক্তৃতায় ১১ পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে ‘মাধ্যমিক শিক্ষায় কোন কাজ হয়নি, অগ্রগতি নেই।’ যা আমাদের বিরোধীরাও বলে না। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, শিক্ষা নিয়ে আমরা কি তুলনা করবো আমেরিকার সঙ্গে, নাকি শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার আগে কি ছিলো তার সঙ্গে?
রোববার জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতেই তিনি এই ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর সমস্ত মেয়েরা স্কুলে যাচ্ছে, পরীক্ষা দিচ্ছে, ভালো ফলাফল করছে। এত মাদ্রাসা, স্কুল, কলেজ তারপরও কিভাবে বলেন মাধ্যমিক শিক্ষায় উন্নয়ন হয়নি?
তিনি বলেন, শিক্ষাখাতে উন্নয়নের জন্য দরকার ১৬ হাজার কোটি টাকা আর বরাদ্দ দেয়া হয়েছে মাত্র ৪ হাজার কোটি। এ দিয়ে বেতন দিবো নাকি অবকাঠামো উন্নয়ন করবো।
এ সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি উদ্দৃতি দিয়ে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন আমাদের জাতীয় উন্নয়নের ৬ ভাগ শিক্ষাখাতে ব্যয় করার দরকার। তিনি (বঙ্গবন্ধু) কতো দূরদর্শী ছিলেন। আর এবার বাজেটে বরাদ্দ রাখা হয়েছে মাত্র ৪ দশমিক ৩ ভাগ। যা সর্বোচ্চ বরাদ্দকৃত মন্ত্রণালয়ের মধ্যে ৮ম। যেখানে ঘাণা, কেনিয়ার মতো দেশে শিক্ষাখাতে ব্যয় করা হয় ৩১ ভাগ। আমাদের ব্যয় সেখানে মাত্র ৪ দশমিক ৩ ভাগ।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিও ভুক্তি নিয়ে এমপিদের দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করে মন্ত্রী বলেন, আপনাদের সমস্ত দাবির সঙ্গে আমি একমত পোষণ করছি। আপনাদের দাবি অনুযায়ী কাজ হচ্ছে, ধীরে ধীরে সব বাস্তবায়ন হবে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বর্তমানে প্রাথমিকে ৯৯ শতাংশ শিশুই স্কুলে যাচ্ছে। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় আমুল পরিবর্তন এসেছে। প্রধানমন্ত্রীর একজন কর্মী হিসেবে তার নির্দেশমতো কাজ করার চেষ্টা করি। ভুলত্রুটি থাকতে পারে। সংসদ সদস্যরা শিক্ষার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন, প্রস্তাব করেছেন। আমরা সবকিছু নোট রেখেছি। ভবিষতে সেগুলো বাস্তবায়নের চেষ্টা করবো।
বর্তমান সরকারের উন্নয়নের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। গ্রামাঞ্চলে দারিদ্র অতিমাত্রায় কমে এসেছে। বিদ্যুৎ ও খাদ্য উৎপাদনে ব্যপক সফলতা এসেছে। স্বাস্থ্য সেবায় বিরাট পরিবর্তন এসেছে। অবকাঠামো উন্নয়নে এসেছে বৈল্পবিক পরিবর্তন। মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে। স্বাস্থ্যর পরিবর্তন হয়েছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ২৫ বছর মেয়াদী বিভিন্ন লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিল, তার অগ্রগতি ও স্বীকৃতি বাংলাদেশ বহুলাংশে পেয়েছে। সব শিশু এখন স্কুলমুখী। বিএনপি-জামায়াত জোটের হরতাল অবরোধ উপেক্ষা করে ১ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের হাতে বই পৌছে দিতে সক্ষম হয়েছি। তারা গত দুই বছর হরতাল অবরোধসহ যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি করেছিল। তাতেও আমাদের একদিনেরর জন্যও পিছিয়ে থাকতে হয়নি।
এইচএস/আরএস/পিআর