যানজট : ৮০ লাখ কর্মঘণ্টার হিসাব নেই!


প্রকাশিত: ০২:৩৫ পিএম, ২৫ জুন ২০১৫

আজকাল এমন হয়েছে, যানজট কোন দিনক্ষণ মানছে না। কি ছুটির দিন? কি কর্ম দিবস? হরতাল-অবরোধেও তীব্র যানজট দেখেছে নগরবাসী। কয়েক বছর ধরেই নগরের মানুষের নিত্য দিনের সঙ্গী যানজট। সওজের পরিসংখ্যান অনুযায়ী- যানজট দেড় কোটি নগরবাসীর দৈনিক কর্মঘণ্টা থেকে ৮০ লাখ ঘণ্টা নষ্ট করছে। এ সময় যেন নিতান্তই  মূল্যহীন। যার কোন হিসাবই রাখা হয়না।

যানজট যেন ভোগান্তির আরেক নাম। ১০ মিনিটের কাজ সারতে কেউ বের হলে পথেই চলে যায় কয়েক ঘণ্টা। যেন দেখার কেউ নেই।   শুধু ঢাকায় নয়। ঢাকার বাইরেও চলে গেছে এ খারাপ পরিস্থিতি। সামনে ঈদ আসছে। চলছে রমজান মাস। রমজানকে ঘিরে বেড়ে গেছে মানুষের ব্যস্ততা। পরিবার পরিজন নিয়ে ঈদের আয়োজন করতে ব্যবস্তা বাড়বে এটাই স্বাভাবিক।   

এখন ঢাকার যা অবস্থা, এটা একেবারে গ্যারান্টি দিয়ে বলা যায়, স্বাভাবিক দিনে যানজট হবে অস্বাভাবিক রকম। আর তার উপর যদি কিছুটা ভিন্ন পরিস্থিতি হয় সেটি কোন পর্যায়ে চলে যাবে বলতে হবে না। নগরবাসীর সেটি দেখা আছে, জানা আছে।

বাংলাদেশ সড়ক ও জনপথ বিভাগের এক পরিসংখ্যান বলছে, রাজধানীতে যানজটের কারণে বাস, কার, ট্যাক্সিক্যাব, সিএনজি অটোরিকশাসহ বিভিন্ন যানের যাত্রীদের বছরের ক্ষতি হয় প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা। এর সঙ্গে পরিবেশ দূষণ, ব্যবসা ও স্বাস্থ্য সংক্রান্ত ক্ষতি এবং দুর্ঘটনা হিসাবে আনলে বছরে ক্ষতি হয় সাড়ে ১৯ হাজার কোটি টাকা। যানজট দেড় কোটি নগরবাসীর দৈনিক কর্মঘণ্টা থেকে ৮০ লাখ ঘণ্টা সময় নষ্ট করছে।

এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের তিন প্রকৌশলীর গবেষণায়। গবেষকেরা হলেন- আবদুল্লাহ আল মামুন, সৈয়দ মইনুল হাসান ও মারুফা ইসমাত।

রমজানে সাধারণ মানুষের ঘরে ফিরে যাবার তাগাদা থাকে। পরিবার পরিজন নিয়ে ইফতার করতেই এই তাগাদা। তবে সেটি যেন কষ্টের নাম, ভোগান্তির নাম। যেমনটি বৃহস্পতিবার সপ্তাহের শেষ কর্ম দিবসে দেখা গেলো।

যানজট নিরসনে রেলক্রসিংগুলোয় ফ্লাইওভার নির্মাণ, বেশি করে কমিউটার ট্রেন চালু, ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচলে কড়াকড়ি আরোপ ও গণপরিবহন ব্যবস্থা উন্নত করার পরামর্শ নগর পরিকল্পনাবিদদের।

জানা গেছে, ধানমন্ডি এলাকায় সকালে ২০-৩০ হাজার ব্যক্তিগত গাড়ি বের হয়। একজন ছাত্রের জন্য একটা গাড়ি রাস্তায় নামে। নগর পরিকল্পনাবিদরা বলছে, এটা বন্ধ না করতে পারলে যানজট কমবে না।

সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার চারটি প্রধান সড়কে যে যানজট হয়, তার কারণে বছরে ক্ষতি হয় নয় হাজার ৬০০ কোটি টাকা। সব মানুষের স্রোত এখন ঢাকামুখী। এ স্রোত ঠেকাতে না পারলে যানজট নিরসন সম্ভব নয়। এ জন্য প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণ করার বিষয়টি এখন জরুরি।

রমজান যত যেতে থাকবে, যানজটের তীব্রতা ততটা বাড়বে। ঈদের কেনাকাটাতে যেটি গিয়ে দাঁড়াবে চরম পরিস্থিতিতে।

# রাজধানীজুড়ে জলাবদ্ধতা : তীব্র যানজট

এসএ/এসএইচএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।