নির্ধারিত সময়ে বর্জ্য অপসারণে হিমশিম খাচ্ছে দুই সিটি কর্পোরেশন
প্রায় দুই কোটি মানুষের বাস রাজধানী ঢাকায়। হাজারও সমস্যায় জর্জরিত এ শহরের বাসিন্দারা। তারপরও থেমে নেই নতুন নতুন মানুষের আগমন। প্রতিনিয়তই রাজধানীতে মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে সমস্যার পরিধিও।
ঢাকা শহরের নিত্যদিনের এক সমস্যার নাম বর্জ্য। নানা অব্যবস্থাপনার কারণে বর্জ্য অপসারণ এখনও এ শহরের মৌলিক সমস্যাগুলোর একটি।
জাতিসংঘের ওয়ার্ল্ড আরবানাইজেশন প্রসপেক্টের রিপোর্ট অনুযায়ী, বর্তমানে ঢাকার জনসংখ্যা ১ কোটি ৭০ লাখের বেশি। বিশ্বব্যাংকের একটি সমীক্ষায় বলা হয়েছে ঢাকা শহরে প্রতিদিন প্রায় ৭ হাজার মেট্রিক টন বর্জ্য জমা হচ্ছে। এর মধ্যে গৃহস্থলি ও দোকানের বর্জ্য প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার টন। কিন্তু বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে দুই সিটি কর্পোরেশন খুব একটা সাফল্য দেখাতে পারেনি।
এ অবস্থায় সম্প্রতি দিনের বেলায় রাজধানীর আবর্জনা অপসারণ না করে রাত ১০টা থেকে ভোর ৬টার মধ্যে সরাতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এক ভুক্তভোগীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ অক্টোবর বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর দ্বৈত বেঞ্চ ওই আদেশ দেন। একইসঙ্গে বর্জ্য অপসারণে ঢাকনাযুক্ত গাড়ি ব্যবহার করতে বলা হয়েছে আদেশে।
আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক নির্ধারিত সময়ে বর্জ্য সংগ্রহ ও অপসারণে ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন।
তবে রাজধানীতে প্রতিদিন বিপুল পরিমানে বর্জ্য অপসারণে দুই সিটির নেই পর্যাপ্ত জনবল। এ কাজের জন্য কাভার্ড ভ্যান আছে মাত্র ৫৩টি। তাই নির্ধারিত সময়ে বর্জ্য সংগ্রহ ও অপসারণ করতে হিমশিম খাচ্ছে তারা।
তবে আধুনিক কিংবা কার্যকর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে নিজেদের সক্ষমতা আরও বাড়াতে হবে বলে উল্লেখ করেছে দুই সিটির সংশ্লিষ্টরা। তারা জানান, হাইকোর্টের রায় বাস্তবায়নে জনবল, যানবাহন, যন্ত্রপাতি বাড়ানোসহ আরও বেশ কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপক শফিকুল আলম এ বিষয়ে বলেন, এতদিন বর্জ্য অপসরণের কাজ রাত ১২টা থেকে শুরু হত। আমাদের ২৯টি কাভার্ড ভ্যান রয়েছে। সামনের মাসে আরও ২৪টি যোগ হবে। ইতোমধ্যেই খোলা ট্রাকগুলোতে ত্রিপল লাগানো হয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের মোটামুটি জনবল রয়েছে। রাস্তা ও মহল্লায় মধ্যরাত ও সকালের দিকে ঝাড়ু দেয়া হয়। শতভাগ বর্জ্য অপসারণের জন্য লোকবল আরও বাড়াতে হবে।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপক কমোডর এম এ রাজ্জাক বলেন, আমাদের বিভিন্ন ধরনের ১৩২টি গাড়ি রয়েছে। যার মধ্যে ২৪টি কাভার্ড ভ্যান। আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে ইতোমধ্যেই আমরা একটি সভা করেছি। কী কী প্রস্তুতি নিতে হবে এবং কোন কোন জায়গায় উন্নতি করতে হবে তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
তিনি বলেন, আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়নে আমরা কাজ করছি। সেক্ষেত্রে যে যে স্থানে উন্নতি করা দরকার তা দ্রুতই করা হবে। প্রযোজনে আরও জনবল নিয়োগ দেয়া হবে।
এএস/এমএমজেড/এমএস