এটুআই প্রকল্পকে ফাউন্ডেশনে রূপান্তর, প্রস্তাব উঠছে সোমবার

মেসবাহুল হক
মেসবাহুল হক মেসবাহুল হক , নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০১:২৪ পিএম, ১৫ অক্টোবর ২০১৭

সরকারি সেবা প্রদানের প্রচলিত দৃশ্যপট বদলে সমাজের সকল শ্রেণীর মানুষের দোরগোড়ায় সস্তায়, সহজে, দ্রুত, স্বচ্ছ ও হয়রানিমুক্ত সেবা পৌঁছে দেয়াই ডিজিটাল বাংলাদেশের মূল উদ্দেশ্য।

এ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সরকার ইউনিয়ন থেকে শুরু করে উপজেলা, জেলা, বিভাগ ও মন্ত্রণালয় পর্যন্ত সর্বত্র সমন্বিত ই-সেবা কাঠামো গড়ে তুলেছে। ফলে যে কোনো জায়গা থেকে জনগণ যে কোনো সময় তার জন্য প্রয়োজনীয় সকল প্রকার সেবা গ্রহণ করতে পারছে। এতে সাধারণ মানুষের সময়, ভোগান্তি কমেছে, স্বাচ্ছন্দতা বেড়েছে এবং জনজীবন সহজ হয়েছে। মানুষের কর্মসময় বৃদ্ধি পেয়েছে।

দেশের উন্নতি ত্বরান্বিত হ্ওয়ার লক্ষ্য সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে পরিচালিত একসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রকল্প পরিচালিত হচ্ছে দেশব্যাপী। এ প্রকল্পের মাধ্যমেই এসব সেবা দেয়া হচ্ছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সরকার, ইউএনডিপি এবং ইউএসএআইডি’র অর্থায়নে পরিচালিত এই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে। তাই মেয়াদ শেষেও এসব কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে এটুআই প্রকল্পকে ফাউন্ডেশনে রূপান্তরিত করা হচ্ছে। এটুআই প্রকল্পকে ফাউন্ডেশনে পরিণত করার জন্য একটি প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য আগামীকাল সোমবারের মন্ত্রিসভার বৈঠকের আলোচ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

আগামী সোমবার সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে এটুআই প্রকল্পকে ফাউন্ডেশনে পরিণত করার প্রস্তাব ছাড়াও ‘বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিশদ (সংশোধন) আইন, ২০১৭’-এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন। ‘জাতীয় পরিকল্পনা ও উন্নয়ন একাডেমি আইন, ২০১৭’-এর চূড়ান্ত অনুমোদন। এবং ‘স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ ব্যবস্থাপনা নীতি-২০১৭’-এর খসড়ারার অনুমোদনসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের আরো ছয়টি অবহিতকরণ প্রস্তাব উপস্থাপন করা হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, ইতোমধ্যে এটুআই প্রকল্পকে ফাউন্ডেশনে রূপান্তরিত করার প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নীতিগত অনুমোদন দিয়েছেন। অর্থ মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মতামত গ্রহণ ও আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিংও এরই মধ্য সম্পন্ন হয়েছে।

মন্ত্রিসভার জন্য পাঠানো সারসংক্ষেপে ১৯৯৪ সালের কোম্পানি আইনের ২৮ ধারার অধীনে এটি পরিচালিত হবে। রুপকল্প ২০২১ বাস্তবায়নে এটুআই প্রকল্প বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ, সংস্থা ও দপ্তরের সহায়তায় নানাবিধ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। এর মধ্যে রয়েছে সারাদেশে ইউনিয়ন, পৌরসভা, সিটি কর্পোরেশনের ওয়ার্ড পর্যায়ে ৫২৮৬টি ডিজিটাল সেন্টারের মাধ্যমে ১৩৬টি সেবা প্রদান; সকল সরকারি দপ্তরে জাতীয় তথ্য বাতায়ন বাস্তবায়ন, শিক্ষক বাতায়ন; ৩২৮৩১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম স্থাপন; বিচারিক তথ্য ও সেবা সহজলভ্য করতে বিচার বিভাগীয় তথ্য বাতায়ন; ১৯ হাজার সরকারি দপ্তরে ই-ফাইল ব্যবস্থা বাস্তবায়ন; ২০০টি গুরুত্বপূর্ণ সেবা সহজিকরণে সহায়তা প্রদান।

সরকার মনে করে- প্রকল্পটির মাধ্যমে সারাদেশে সকল সরকারি দপ্তরে সেবা প্রক্রিয়া উদ্ভাবন, জনবান্ধব সেবা তৈরি, সেবা সহজিকরণ ও ভোগান্তিমুক্ত সেবা প্রদান করা যাচ্ছে। এ প্রকল্প ফাউন্ডেশনে রূপ নিলে তা সেবা অব্যাহত রাখাসহ জাতীয় উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সরকারকে সহায়তা প্রদান করবে।

প্রস্তাবনায় বলা হয়- এটুআই ফাউন্ডেশন প্রাথমিক সদস্য সংখ্যা হবে ২৫ জন। আর ১৩ জন সদস্যের সমন্বয়ে গঠিত হবে পরিচালনা বোর্ড। প্রধানমন্ত্রীর মূখ্যসচিব হবেন চেয়ারম্যান। সরকারের সচিব, শিক্ষাবিদ, কারিগরি বিশেষজ্ঞ, পেশাজীবী ও বেসরকারি সংস্থার ব্যক্তিবর্গের সমন্বয়ে গঠিত হবে বোর্ড। বোর্ড কর্তৃক নিযুক্ত একজন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা থাকবেন।

সরকারি মঞ্জুরি, দান, অনুদান, ঋণ, বিদেশি সাহায্য, সেবা প্রদান এবং বিনিয়োগের মাধ্যমে লব্ধ আয়ে ফাউন্ডেশনের তহবিল গঠিত হবে।

এমইউএইচ/একে/আইআই

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।