৩৬ গণমাধ্যমকর্মী পেলেন মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড


প্রকাশিত: ০৬:১১ পিএম, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪

গত এক বছরে গণমাধ্যমে শিশু অধিকার বিষয়ক সংবাদ প্রকাশে অবদান রাখার জন্য ১১টি বিভাগে ৩৬ জন গণমাধ্যমকর্মীকে সম্মান দিয়েছে ইউনিসেফ। মঙ্গলবার স্থানীয় একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দশম মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়।

সৃজনশীল ও সাংবাদিকতায় প্রিন্ট, টেলিভিশন ও রেডিও মাধ্যমে অবদান রাখা নির্দিষ্ট বয়সসীমার গণমাধ্যমকর্মীরা এ প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়।

প্রিন্ট মিডিয়ায় সৃজনশীল বিভাগে ১৮ বছরের কম বয়সী জান্নাতুল নাঈম প্রীতি ও মীর নওশেদ যৌথভাবে প্রথম, শামীম মিয়া দ্বিতীয় এবং জান্নাতুল ফেরদৌস স্নিগ্ধা তৃতীয়; ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে আহমেদ রিয়াজ প্রথম, আশিক মোস্তফা দ্বিতীয় ও নিলয় নন্দী তৃতীয়; রিপোর্টিং বিভাগে ১৮ বছরের কম বয়সী গণমাধ্যমকর্মীদের মধ্যে জাহিদ ইসলাম প্রথম, মনির হোসেন দ্বিতীয় ও রাবিয়া বশরি অনিতা তৃতীয়; ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে জাহিদুর রহমান প্রথম, শেখ সাবিহা আলম দ্বিতীয় ও মামুনুর রশিদ তৃতীয় পুরস্কার লাভ করেন।

রেডিও সৃজনশীল বিভাগে ১৮ বছরের কম বয়সী গণমাধ্যমকর্মীদের মধ্যে এ এম এম জাওয়াদুল আলম প্রথম ও শরীফুল ইসলাম শামীম দ্বিতীয়; ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে গোলাম কিবরিয়া প্রথম, আব্দুল্লাহ আল মোহাইমেন দ্বিতীয় ও আবু তালেব সাকী তৃতীয়; রিপোর্টিং বিভাগে ১৮ বছরের কম বয়সী বৈশাখী খাতুন প্রথম ও রুপিয়া জাহান যুথি দ্বিতীয় পুরস্কার; রিপোর্টিং বিভাগে ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে ফরিদ আহম্মেদ প্রথম, মো. মেহেদী হাসান দ্বিতীয়, মাহবুবুর রহমান এবং আহম্মেদ ইউসুফ যৌথভাবে তৃতীয় পুরস্কার লাভ করেন।

টেলিভিশন সৃজনশীল বিভাগে ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে সুশান্ত সিনহা প্রথম, সোহেল রানা সবুজ দ্বিতীয়, লিটন অধিকারী রিন্টু এবং শাহরিয়ার ইসলাম যৌথভাবে তৃতীয়; রিপোর্টিং বিভাগে ১৮ বছরের কম বয়সী সীফাত আলামীন তন্ময় প্রথম, সুমাইয়া ওহাব দ্বিতীয়, তানজীনা আক্তার মীম এবং তনিমা আক্তার যৌথভাবে তৃতীয়; রিপোর্টিং বিভাগে ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে খাদিজা নাহার রীতা ও ওবাইদুল কবীর যৌথভাবে প্রথম, মো. ইসমাইল হোসেন দ্বিতীয় ও আতিক আর রহমান তৃতীয় হয়েছেন।

টেলিভিশন সৃজনশীল বিভাগে ১৮ বছরের কম বয়সী গণমাধ্যমকর্মীদের মধ্যে যারা আবেদন করেছেন তাদের প্রত্যেকের কাজই ইউনিসেফ এর প্রকল্প সংশ্লিষ্ট। ফলে এ বিভাগে কাউকে পুরস্কার প্রদান করা হয়নি।

সমগ্র দক্ষিণ এশিয়া জুড়ে কার্যকরভাবে শিশু অধিকারকে সমুন্নত রাখার কাজে অনবদ্য ভূমিকা পালনকারী এনিমেটেড কার্টুন চরিত্র ‘মীনা’ সামাজিক পরিবর্তনের প্রতীক। বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক ও নাট্য উপস্থাপনার মাধ্যমে শিশুদের কণ্ঠস্বর এ অনুষ্ঠানে তুলে ধরা হয়েছে।

তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, ইউনিসেফের শুভেচ্ছা দূত অভিনেত্রী আরিফা জামান মৌসুমী এবং ইউনিসেফ বাংলাদেশ-এর প্রধান প্যাসকেল ভিলনোভ পুরুস্কার প্রাপ্তদের ক্রেস্ট, পুরস্কারের টাকা এবং সনদপত্র বিতরণ করেন।

অংশগ্রহণকারী এবং পুরস্কারপ্রাপ্তদের অভিনন্দন জানিয়ে প্যাসকেল ভিলেনিউভ বলেন, “আমি সাংবাদিকতা ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শিশুদের মতামত তুলে ধরার কাজে আপনাদের প্রচেষ্টা এবং চলমান উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। আপনাদের অসামান্য কাজের স্বীকৃতি দিতে পেরে আমরা গর্বিত।”

সংবাদ মাধ্যমের গুরুত্বের কথা তুলে ধরে তিনি সংবাদকর্মীদের প্রতি সকল কুসংস্কার, সামাজিক অবক্ষয় এবং অনিয়মের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলার আহ্বান জানান এবং গণমাধ্যমকর্মীদের বিশেষ করে শিশু বিবাহ বন্ধে প্রচারাভিযান চালানোর জন্য বিশেষ অনুরোধ করেন।

দশম মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। প্রতিযোগিতাপূর্ণ একটি মাধ্যমে পুরস্কারের জন্যে প্রিন্ট ও প্রচার মাধ্যম থেকে মনোনয়নপ্রাপ্তরা নির্বাচিত হন। মনোনয়নের কাজ সম্পাদন করেন একদল বিচারক। মূলত সৃজনশীল

ও সাংবাদিকতা এই দুই শ্রেণীতে, প্রিন্ট, টেলিভিশন ও রেডিও এই তিন মাধ্যমের মধ্য থেকে নির্দিষ্ট বয়স-সীমার প্রতিযোগীদের অংশ নেয়ার আহ্বান জানানো হয়।

প্রতিযোগীদের মধ্য থেকে ১ম, ২য় ও ৩য় পুরস্কার বিজয়ীরা যথাক্রমে ৫০ হাজার, ২৫ হাজার এবং ১৫ হাজার টাকা পুরস্কার, সার্টিফিকেট ও ক্রেস্ট পান।

সৃজনশীল লেখক, প্রবীন সংবাদকর্মী, অডিও-ভিস্যুয়াল বিশেষজ্ঞ এবং শিক্ষাবিদ সমন্বয়ে গঠিত আট-সদস্য বিশিষ্ট বিচারকমণ্ডলীর একটি বিশেষজ্ঞ প্যানেল জুরি হিসেবে কাজ করেন। প্রতিযোগীদের নামের পরিবর্তে  নির্দিষ্ট কোড নম্বর ব্যবহার করা হয় এবং বিচারকদের দেয়া নম্বরের ওপর ভিত্তি করে চূড়ান্ত পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দেয়া হয়।

বিচারকমণ্ডলীর মধ্যে ছিলেন সেলিনা হোসেন, ফরিদ হোসেন, রোবায়েত ফেরদৌস, ফাহমিদুল হক, জাকির হোসেন রাজু, সামিয়া জামান, রতন পাল এবং কাদির কল্লোল।

সুবিধাবঞ্চিত পরিবার থেকে আসা শিশুরা এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠান পরিচালিত ডপ্র-ইন সেন্টারে বসবাসরত শিশুরা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেয়। সরকারি কর্মকর্তাসহ বিভিনান পেশার অতিথিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

শিশু অধিকার অর্জনে প্রিন্ট ও ইলেট্রনিক উভয় ক্ষেত্রে সৃজনশীল মাধ্যম এবং সাংবাদিকতায় বিশেষ ভূমিকা পালনের জন্য ২০০৫ সালে ইউনিসেফ মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড  চালু করে। বাংলাদেশের শিশু-কিশোর এবং বড়দের মধ্যে সমভাবে জনপ্রিয় এনিমেশন চরিত্র ‘মীনা’র নাম অনুসারে এই পুরস্কারের নামকরণ করা হয়েছে। ‘মীনা’ হলো এমন একটি মেয়ের প্রতিভু যে সমাজের একজন পরিবর্তন কর্মী এবং যার গল্প দক্ষিণ এশিয়ার শিশুদের অধিকারের কথা তুলে ধরে।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।