রোহিঙ্গাদের নিবন্ধন পর্যবেক্ষণে ইসির কমিটি
মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধন করছে বাংলাদেশ সরকার। নিবন্ধন কার্যক্রম সঠিক নিয়ম হচ্ছে কি না তা পরির্দশনে জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগের (এনআইডি উইং) ৪ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। গঠিত এ কমিটি কক্সবাজার এলাকার রোহিঙ্গাদের নিবন্ধন প্রক্রিয়া সরেজমিনে পরিদর্শন করবে।
সম্প্রতি ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মাসুদ রেজওয়ানের (পিএসসি) কাছে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি দেয়া হয়েছে। এনআইডির সহকারী পরিচালক মোছা. সিরাজুম মনিরা চৌধুরী এ চিঠি দিয়েছেন।
চিঠিতে বলা হয়, রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন ও ত্রাণ বিতরণের কার্যক্রমের সমন্বয় সংক্রান্ত গত ১২ সেপ্টেম্বর বিশেষ সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অংশ নেন। সেখানে রোহিঙ্গাদের আশ্রয়কেন্দ্র পরিদর্শনের সময় কিছু দিক-নির্দেশনা দেন তিনি। নির্দেশনার মধ্যে রোহিঙ্গা নিবন্ধন করে পরিচয়পত্র প্রদান অন্যতম।
চিঠিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাদের বায়োমেট্টিক ও রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রমের প্রক্রিয়াটি নির্বাচন কমিশনের এনআইডির কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত করা অথবা গৃহিত বায়োমেট্টিক ভবিষ্যতে কাজে লাগানোর ব্যাপারে সম্ভাব্যতা যাচাই/সহযোগীতার জন্য একটি প্রতিনিধি দল গঠন করা হয়েছে। গঠিত টিমকে রোহিঙ্গা নিবন্ধন এলাকায় সরেজমিন পরিদর্শনের জন্য আনুমতি প্রয়োজন।
গঠিত চার সদস্যের টিমে রয়েছেন- এনআইডির সিস্টিম এনালিস্ট বেগম ফারজানা আখতার, সহকারী পরিচালক বেগম ফৌজিয়া সিদ্দিক, টেকনিক্যাল এক্সপার্ট এবিএম সালাউদ্দিন সরকার ও টেকনিক্যাল এক্সপার্ট ফয়সাল মোহা. শাহনেওয়াজ।
জানা যায়, নিবন্ধন প্রক্রিয়া নিয়ে উদ্বিগ্ন কমিশন। কারণ আশ্রিত সব রোহিঙ্গাকে নিবন্ধন করার পর যদি পদ্ধতিগত ক্রটি থাকে তাহলে সরকারের নেয়া পুরো-প্রক্রিয়াটির ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। নাগরিকদের ১০ আঙুলের ছাপ নেয়ার ক্ষেত্রে অনেক নিয়ম ও পদ্ধতি অনুসরণ করতে হয়, যাতে তথ্য-পরিচয় গোপন করে অন্যত্রে গিয়ে মিথ্যার আশ্রয় নেয়ার সুযোগ কম থাকে।
এনআইডির কর্মকর্তা জানায়, রোহিঙ্গাদের নিবন্ধন হওয়া ডাটাসহ সার্ভারের সব তথ্য আমরা পেতে চাই। আগামী বছর থেকে যারা ভোটার হতে চাইবেন তাদের প্রথমে রোহিঙ্গাদের সার্ভারে তথ্য যাচাই করা হবে। পরে এএফআইএস পদ্ধতিতে সংশ্লিষ্ট নাগরিকের ইসির ডাটাবেইজে তথ্য যাচাই করা হবে। তথ্যের অসঙ্গতি না পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট নাগরিককে ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
জানা গেছে, গঠিত কমিটি রোহিঙ্গা নিবন্ধন কেন্দ্র পরির্দশনে গিয়ে সেখানে যে সফটওয়্যার ব্যবহার হচ্ছে সেটি ইসির সঙ্গে সমন্বয় করে করা হচ্ছে কি না তা পরীক্ষা করবেন। কারণ রোহিঙ্গারা শুধু চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এলাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই, সারাদেশেই তারা ছড়িয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় আগামীতে ভোটার তালিকা তৈরি করা কমিশনের জন্য চ্যালেঞ্জ হবে মনে করে নানামুখি পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।
এইচএস/আরএস/এমএস